রবিবার

১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা বিনিময়ে চসিক পরিদর্শনে রাসিক প্রতিনিধি দল গোদাগাড়ীতে বিদ্যুতের ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন রাজশাহীতে আ’লীগ কর্মী নয়নালের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি ‘সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে বাধা নেই’ রক্তস্বল্পতা দূর করবে কচু যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক কি একদম তলানিতে কান উৎসবে নজর কাড়লেন অন্তঃসত্ত্বা প্রিয়তি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকের আমানত কমেছে, ঋণ বাড়ছে, আস্থার সংকট

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পাটখড়ির ছাইয়ের কদর

Paris
Update : বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১

এফএনএস : বিশ্ববাজারে পাটখড়ির ছাইয়ের কদর বেড়েছে। এদেশ থেকে বর্তমানে চীনসহ ইউরোপ ও আমেরিকার কয়েকটি দেশে পাটখড়ির ছাই রফতানি হচ্ছে। ওই ছাইরের ভেতরের কার্বন পাউডার থেকে তৈরি হচ্ছে কার্বন পেপার, কম্পিউটার ও ফটো কপিয়ারের কালি (টোনার), আতশবাজি, মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ও পলিমার ব্যাটারি, ফেসওয়াশের উপকরণ, প্রসাধন সামগ্রী, মাউথওয়াশ, দাঁত পরিষ্কারের ওষুধ, সারসহ বিভিন্ন পণ্য। বিগত ২০০৭ সালে পাটকাঠির ছাই থেকে এক ধরনের জ্বালানি চারকোল তৈরি হওয়ার পর তার মধ্যে কার্বনের অস্তিত্ব আবিষ্কার হয়।

তবে শুরুতে ওই চারকোলে রান্না শুরু হয়। সাধারণ কাঠের (খড়ি) জ্বালানির দাহ্য ক্ষমতার চেয়ে চারকোলের দাহ্য ক্ষমতা অনেক বেশি হওয়ায় চাহিদাও বাড়ে। আর বিগত ২০০৯ সাল থেকে প্রাথমিকভাবে চারকোল রফতানি শুরু হয়। বর্তমানে ফরিদপুর, মাগুরাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে চারকোল কারখানা স্থাপিত হওয়ায় রফতানি বেড়েছে। শুধু চারকোল খাতে বছরে রাজস্ব আসছে অন্তত ৪০ কোটি টাকা। আর ওই খাতে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাংলাদেশ চারকোল ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যান্ড এক্সপোর্ট এ্যাসোসিয়েশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পাটের আঁশ, পাটখড়ি বা পাটকাঠি এবং পাটকাঠি পোড়ানো ছাই সবই অতি মূল্যবান। পাট উৎপাদনের পর জলাশয়ে জাগ দিয়ে আঁশ ছাড়িয়ে নেয়ার পর উপজাত সাদা রঙের কাঠিই পাটখড়ি। পাটের আঁশ ও কাঠি রোদে শুকানো হয়। এতোকাল ওই কাঠি কুঁড়েঘরের বেড়া নির্মাণে ব্যবহার হতো। গ্রামীণ জীবনে মাটির চুলায় রান্নায় জ্বালানি খড়ির সঙ্গে এই পাঠকাঠিও থাকতো। বর্তমানে পাটকাঠি এবং পাটকাঠির ছাই পাটের আঁশের মতোই মূল্যবান।

বর্তমানে পাট কাটার মৌসুম চলছে। কৃষক পাট পানিতে জাগ দিয়ে আঁশ ছাড়িয়ে পাটকাঠি যত্ন করে শুকিয়ে নেয়। আবার কেউ কেউ পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই সংগ্রহ করে রাখছে। কারণ কাঠি আগুনে পোড়ার পর ছাই থেকে রাসায়নিক উপজাত কার্বন তৈরি হয়। আবার অন্যদিকে কাঠের বিকল্প উপাদান (পারটেক্স জাতীয়) তৈরিতেও পাটকাঠির চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে এই জাতীয় কাঠে বুক শেলফ, দরজা ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে। কখনও অফসেট কাগজ তৈরিতেও পাঠকাঠির দরকার হয়। আর বিশ^জুড়ে তো পাটের আঁশের কদর রয়েছেই।

সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের চারকোল কারখানাতে কার্বন তৈরি হচ্ছে। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ১৮২ মেট্রিক টন চারকোল রফতানি হয়। তাতে প্রায় ৩০ লাখ ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আসে। কিন্তু করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবে লকডাউনের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে কার্বন ফ্যাক্টরির কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ে। তারপরও গত বছর অক্টোবর থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত লকডাউন শিথিল থাকায় স্থানীয় বাজারে সীমিত পরিসরে কার্বন সরবরাহ করা গেছে। সূত্র আরো জানায়, দেশের কার্বন ফ্যাক্টরিগুলো জুলাই-আগস্ট থেকেই পাটকাঠি কেনা শুরু করে।

অক্টোবর থেকে মার্চ, এপ্রিল পর্যন্ত কার্বন মিলগুলো উৎপাদনে থাকে। প্রতি মণ পাটখড়ি থেকে প্রায় ১০ কেজি চারকোল পাউডার বা কার্বন উৎপাদিত হয়। আর দেশে উৎপাদিত কার্বনের ৮০ শতাংশই চীনে রফতানি হয়। বাকি ২০ শতাংশ মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, তাইওয়ানে রফতানি হয়। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় চারকোল বিক্রেতা গড়ে উঠেছে। কার্বন কারখানার মালিকরা পাট কাটার মৌসুমে পাটকাঠি কিনে ফ্যাক্টরিতে পাঠাতে তাদের এজেন্টদের প্রতিটি এলাকায় পাঠিয়ে দেয়। আর কৃষকরা এখন পাটের সঙ্গে পাটখড়িও বিক্রি করছে। কারণ পাটখড়ির ছাইকে যে আর অবহেলা করা যায় না।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris