বৃহস্পতিবার

৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন সোহেল পবায় ছাত্রলীগ নের্তৃবৃন্দের সাথে চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদের মতবিনিময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত তানোরে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন ময়না মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর লাল গামছা দেখে থামল ট্রেন, অল্পের জন্য রক্ষা রাজশাহী নগরীতে প্রস্তাবিত কবরস্থান ও ঈদগাহ নির্মাণে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন প্রথম ধাপে ১৪১ উপজেলায় ভোট গ্রহণ আজ প্রকল্প কতটুকু জনকল্যাণে লাগবে তা বিবেচনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর চৌবাড়িয়া পশুহাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

কম্পিউটার যুগে হারাচ্ছে দশ আঙুলের ছন্দ

Paris
Update : মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১

আর কে রতন : আমাদের ইতিহাস প্রায় আড়াই হাজার বছরের। বাঙালির রয়েছে অনেক গৌরবময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে আমাদের কিছু নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যবাহী কিছু ব্যবহার্য জিনিস। যুগ যুগ ধরে আমরা এই সংস্কৃতি ধারণ ও লালন করে আসছি। কিন্তু কালে কালে বদলায় সমাজ বদলায় সংস্কৃতি-হারায় ঐতিহ্য। এই আধুনিক যুগে উন্নত সংস্কৃতি ও পণ্যের এবং আধুনিক কলাকৌশলের কাছে মার খেতে খেতে আস্তে আস্তে বাঙালির অতীত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক অনেক কিছু আজ বিলুপ্তির পথে। এর মধ্যে টাইপরাইটার মেশিন অন্যতম যন্ত্র।

কম্পিউটার আবিস্কারের পূর্বে খবরের কাগজ, মামলার এজাহার, আবেদন, ফরম পূরণসহ বিভিন্ন অফিসিয়াল টাইপের কাজে একমাত্র ব্যবহৃত হত টাইপ মেশিন। দিন বদলের সাথে সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে অতীতের দশ আঙুলের ছন্দ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় একুশ শতকে এসে কর্মজীবী কিংবা কর্মমুখী মানুষ কাজ-কর্মে অনেকটা কম্পিউটার নির্ভর হয়ে পড়েছে৷

কম্পিউটারের যুগে আর টিকে থাকতে পারছে না টাইপরাইটার মেশিন৷ বৈদ্যুতিক কীবোর্ডের মাধ্যমে মনিটরের স্ক্রিনে ভেসে ওঠে লেখা৷ যে কোন ভুল হলে নিমিষেই শুদ্ধ করা যায়৷ কাটাকাটির কোন ঝামেলাও নেই৷ স্পষ্ট সুন্দর লেখার জন্য কেউ আর টাইপিস্টদের কাছে যেতে চায় না৷ তাই সময়ের ব্যবধানে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে মুদ্রাক্ষরিকক এই অতীতের পেশা৷

রাজশাহী কোর্টের টাইপরাইটার রেন্টু হোসেন জানান, সারাদিন বসে থেকে দুই-তিনটা কাজ পায় কেউ কেউ৷ কেউ কেউ আবার পায় না একটাও৷ টাইপ মেশিনের ঠক ঠক শব্দের সাথে সাথেও কমে যাচ্ছে তাদের আয়-রোজগার৷ দিন চলছে অর্ধাহারে-অনাহারে৷ সংসার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে এ পেশার লোকরা৷ তিনি আরো বলেন, এই পেশায় এখন যে সামান্য উপার্জন হয়, তা দিয়ে কোনভাবে একটা সংসার চলে৷ কম্পিউটার যুগ আসার সাথে সাথে মানুষ আর টাইপিস্টদের কাছে আসতে চায় না৷

এক দিকে কম্পিউটার, অপরদিকে ফটোকপি মেশিন৷ এই দুই মেশিন এসে টাইপিস্টদের দিন শেষ। এরমধ্যে করোনা মহামারির কারনে দীর্ঘদিন থেকে অফিস-আদালত সরকারী ভাবে বন্ধ থাকায় আরো বেশি কষ্টে আছি আমরা। টাইপরাইটার মিলন হোসেন বলেন, আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে এ কাজ করে আসছি। বর্তমানে আগের মত আর কাজ হয় না। যে আয় হয়, তা দিয়ে স্বচ্ছলভাবে সংসার চালানো যায় না৷ আগে প্রতিদিন একজন টাইপরাইটার আয় হত পাঁচ‘শ থেকে সাত‘শ টাকা।

কিন্তু কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারনে বর্তমানে একজন টাইপরাইটার আড়াই শ’ থেকে তিনশ’ টাকা আয় করতে কষ্ট হয়৷ যা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়। যার কারনে অনেকে এই পুরনো পেশা ছেড়ে অন্য কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। রাজশাহী কোর্টের এ্যাডভোকেট বাবুল আক্তার বলেন, বেশির অংশ কম্পোজের কাজ কম্পিউটারে হলেও কিছু কিছু কাজে এখনও টাইপরাইটারের প্রয়োজন হয়।

ফলে এই পেশা আগের মত বড় অংশের লোকবল না থাকলেও একেবারে বিলীন হয়ে যায়নি৷ মানুষ বাড়ার সাথে সাথে কাজও বেড়েছে৷ মানুষের প্রয়োজনের খাতিরে কম্পিউটারেই বেশি করে থাকে। তবে ঐতিহ্যবাহী এ পেশায় যেনো একেবারে বিলিন হয়ে না যায়। অন্তত কিছু মানুষ এ পেশায় কর্মরত থাকতে পারে সে সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া প্রয়োজন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris