শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুঠিয়া এখন মাদকের ‘অভয়ারণ্য’!

Paris
Update : শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১

আরিফ সাদাত, পুঠিয়া : রাজশাহীর পুঠিয়া এখন মাদকের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। থানা পুলিশের তালিকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়িরা গ্রেফতার এড়াতে বেশীর ভাগ এখন আত্মগোপনে। তবে প্রকাশ্যে যুক্ত না থাকলেও তাদের নগদ অর্থের প্রলোভনে মাদক ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছে স্থানীয় কিশোর ও যুবকরা। সম্প্রতি র‌্যাব সদস্যদের হাতে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রসহ কয়েকজন তরুন আটক হয়েছে। এরা এসব মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র নিজেদের এলাকাসহ দেশে বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে বিক্রি করে।

উপজেলার পুঠিয়া ও বেলপুকুর থানার তথ্যমতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক গত বছরের শেষের দিকে এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়িদের একটি হিটলিস্ট তৈরি করা হয়। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ির নাম রয়েছে। এদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজন আটক করতে পারলেও বেশীর ভাগ মাদক ব্যবসায়িরা গ্রেফতার এড়াতে বর্তমানে আত্মগোপনে আছে। আর আত্মাগোপনে থেকে এরা এলাকার বখাটে কিশোর ও যুবকদের ব্যবহার করে তাদের মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

র‌্যাব-৫ সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে গোপন সংবাদে পুঠিয়ায় ৭টি অভিযান পরিচালনা করেন। এর মধ্যে গত ২৩ জুন বেলপুকুর বড়ধাদাস গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে হাসেম আলী ৩৮০ পিস ইয়াবাসহ আটক হয়। ২৮ জুন কাঠালবাড়িয়া গ্রামের আফাজ উদ্দীনের ছেলে নাজমুল চারঘাট উপজেলা এলাকায় আটক হয় ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ। গত ২ জুলাই একই গ্রামের রমজান আলীর ছেলে মমিনুল আটক হয় ৩০ বোতল ফেন্সিডিল নিয়ে। ১০ জুলাই ঝলমলিয়া গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে বাবলু আটক হয় ৬০০ গ্রাম হেরোইনসহ।

১২ জুলাই পুঠিয়া সদর এলাকায় একটি থাকা ট্রাকে ৪০ কেজি গাজা ও বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়। গত ১৩ জুলাই ভালুকগাছি এলাকায় দবির আলীর ছেলে সাইফুল আটক হয় ২ কেজি গাজাসহ। ১৫ জুলাই ১টি বিদেশী পিস্তলসহ আটক করা হয় পুঠিয়ার দইপাড়ার নবীর উদ্দিনের ছেলে আবুল বাসারকে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, গত একমাসে র‌্যাব সদস্যদের হাতে মাদকসহ আটককৃতরা মাদক সাম্রাজ্যে নতুন মুখ। থানা পুলিশ লিস্টধারিদের আটক শুরু করার খবরে সকলেই আত্মগোপনে চলে গেছে। তবে তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়নি।

তারা এলাকার বেকার যুবকদের মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে মাদক ব্যবসার সাথে যুক্ত করছে। তিনি বলেন, প্রতিটি পাড়া মহল্লায় প্রকাশ্যে একাধিক মাদকের আড্ডা চলে। বর্তমানে মাদকের সাথে যুবক ও কিশোররা ছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষ জড়িয়ে পড়ছেন। এছাড়া বহিরাগত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়িরাও এ উপজেলার কয়েক স্থানে আস্তানা গড়ে তুলেছে। তারা পরিবারসহ ভাড়া বাসা থেকে মাদকের কারবার চালাচ্ছে। এদিকে র‌্যাব ও পুলিশ মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে সফল হলেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর “খ” অঞ্চলের তেমন কোনো সাফল্য নেই।

এরা বিভিন্ন সময় মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে নিরীহ নারী পুরুষদের হয়রানি ও নাজেহাল করে বলে অভিযোগ রয়েছে। পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, মাদকের সাথে কোনো আপোষ নয়। আমি এখানে আসার আগে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়িদের একটি তালিকা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়িদের আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বাকিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris