মঙ্গলবার

২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চারঘাটে দু’দিনের ব্যবধানে আমের বাজার দ্বিগুণ

Paris
Update : বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১

চারঘাট প্রতিনিধি : করোনা মহামারীর কারনে লকডাউন ও আষাঢ়ের বৃষ্টিতে ক’দিন আগেও ক্রেতা শুন্য ছিল রাজশাহীর চারঘাট-বাঘার আমের বাজার। আম পেকে বাগানেই পঁচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু হটাৎ করে বদলে গেছে আম বাজারের দৃশ্যপট। দুই দিনের ব্যাবধানে আমের দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন চারঘাট-বাঘার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র দুই দিন আগে বিক্রি হওয়া ৬শ টাকার লক্ষণভোগ বিক্রী হচ্ছে ১২শ টাকা মণ।

অপর দিকে ১১ শ’ টাকার আম্রপালি বিক্রী হচ্ছে ২ হাজার ২শ টাকা এবং ৮ শ টাকার ফজলী বিক্রী হচ্ছে ১৫ শ’ টাকা মণ। ফলে কপাল খুলেছে আম চাষী ও ব্যবসায়ীদের। রাজশাহী জেলাকে আমের জন্য বিখ্যাত বলা হলেও মূলত আম প্রধান অঞ্চল হিসাবে খ্যাত রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলা। জেলার ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর আম বাগানের মধ্যে ১২ হাজার ৩৯০ হেক্টর আম বাগান রয়েছে এই দুই উপজেলায়। যা রাজশাহী জেলার মোট আমের দুই তৃতীয়াংশ।

প্রতিবছর আমের জন্য বিপদ হয় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। কিন্তু এ বছর আমচাষিদের সপ্ন বিপন্ন করেছে করোনা আর লকডাউন। চাষিরা গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি, ল্যাংড়া আমের দাম মোটামুটি ভালো পেলেও লক্ষণভোগ, ফজলি, গুটিসহ অন্যান্য প্রজাতির আমের দাম নিয়ে বেকায়দায় পড়ে যান। করোনা আর আষাঢ়ের বৃষ্টিতে ক্রেতা না থাকায় আম গাছে পেকে নষ্ট হবার উপক্রম হয়। তবে গত দু’দিনে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। বেড়েছে সব রকমের আমের দাম।

চারঘাটের প্রসিদ্ধ আম চাষী জিয়ার উদ্দীন জানান, উৎকন্ঠা এবং হতাশায় ছিলেন এ অঞ্চলের আম চাষীরা। তারা ধরেই নিয়ে ছিলেন এবার আমে তাদের বড় ধরনের লোকশান গুনতে হবে। কিন্তু বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় হটাৎ করে গত দুই দিন ধরে আমের ব্যবসায় লাভের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন চাষীরা। আমের দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।

বাঘা উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন বলেন, বর্তমানে কৃষকদের কাছে তেমন একটা আম নেই। তাঁরা ইতোমধ্যে বাগান চুক্তি আম বিক্রী করে দিয়েছেন। এখন এ অঞ্চলে যে পরিমান আম রয়েছে তা সবই ব্যবসায়ীদের। ক’দিন আগে ব্যবসায়ীরা লোকশান গুনেছেন।তবে বর্তমানে আমের বাজার যে অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে এখন তারা লাভের মুখ দেখছেন।

চারঘাট সদরের আম ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান বলেন, বৃষ্টি ও লকডাউনে আমের বাজার নিয়ে গত তিন-চারদিন আগেও চরম হতাশায় ছিলাম। কিন্তু গত দুই দিনে আমের বাজার পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এ থেকে আমরা এখন আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। বর্তমানে আমের বাজার যে অবস্থানে রয়েছে শেষ পর্যন্ত যদি এমনই ভাবে চলে তাহলে লাভবান হবেন তারা।

সার্বিক বিষয়ে চারঘাট উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, এ বছর বাগানে প্রচুর পরিমান আম রয়েছে। কয়েক দিন আগেও দাম কমে যাওয়ায় চাষী ও ব্যবসায়ীরা হতাশায় ছিলেন। তবে গত দুই-তিনদিন থেকে বাজারে আমের এখন যে ঊর্ধ্বগতি তাতে ব্যবসায়ীদের হতাশা কেটে গেছে। ঈদুল আযহা’র পরে বাজারে আশ্বিনা আম নামবে। সেখানেও ব্যাপক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris