বৃহস্পতিবার

৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন সোহেল পবায় ছাত্রলীগ নের্তৃবৃন্দের সাথে চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদের মতবিনিময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত তানোরে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন ময়না মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর লাল গামছা দেখে থামল ট্রেন, অল্পের জন্য রক্ষা রাজশাহী নগরীতে প্রস্তাবিত কবরস্থান ও ঈদগাহ নির্মাণে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন প্রথম ধাপে ১৪১ উপজেলায় ভোট গ্রহণ আজ প্রকল্প কতটুকু জনকল্যাণে লাগবে তা বিবেচনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর চৌবাড়িয়া পশুহাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

এমপি ফারুক চৌধুরীর প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধু মডেল ভিলেজ পাইলট প্রকল্প তানোরে

Paris
Update : সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১

আলিফ হোসেন, তানোর : রাজশাহী-১ আসনের সাংসদ এবং সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর প্রচেস্টা ও রাজনৈতিক দুরদর্শীতায় বঙ্গবন্ধু মডেল ভিলেজ (গ্রাম হবে শহর) পাইলট প্রকল্পে তানোর উপজেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গ্রামের মানুষের আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত গ্রামীণ জীবনযাপনের সুযোগ এবং গ্রাম থেকে শহরমুখী স্রোত হ্রাস করতে ‘বঙ্গবন্ধু মডেল ভিলেজ’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ১০টি গ্রামের মানুষ শহরের সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এই ১০টির তালিকায় রাজশাহী বিভাগের একটি গ্রাম থাকবে। রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলায় এই মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে কোন গ্রাম হবে, তা এখনও নির্বাচন হয়নি।

জানা গেছে, মহান স্বাধীনতার স্থপত্তি ও বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ-২০২১উদযাপন উপলক্ষে তার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে সমবায় অধিদফতর বঙ্গবন্ধুর সমবায় গ্রাম ধারণা ও বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের বিশেষ অঙ্গীকার ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ ধারণায় গ্রামের বৈশিষ্ট্য সমুন্নত রেখে ‘বঙ্গবন্ধু মডেল ভিলেজ’ প্রকল্পের প্রস্তাবনা তৈরি করেছে।

এর মাধ্যমে গ্রামের বৈশিষ্ট্য সমুন্নত রেখে গ্রামীণ সম্পদের সুষ্ঠু ও সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করা, গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষির আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, জৈব জ্বালানির ব্যবহার, যোগাযোগ ও বাজার অবকাঠামো সৃষ্টি, স্বাস্থ্য-শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কমিউনিটির সচেতনতা বৃদ্ধি, তথ্যপ্রযুক্তিগত অবকাঠামো সৃষ্টির মাধ্যমে সব সেবা সহজলভ্য করা হবে। দেশের ১০ জেলার ১০ উপজেলার ১০ গ্রামের গড়ে পাঁচ হাজার জন করে মোট ৫০ হাজার মানুষ প্রকল্পটির উপকারভোগী হবেন। এই ১০টির তালিকায় রয়েছে রাজশাহীর তানোরের একটি গ্রাম।

তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, তানোরের একটি গ্রাম মডেল হবে। তানোরের কোথায় হবে এই নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও বিস্তারিত জানতে পারেননি। তবে পাইলট প্রজেক্টে তানোর উপজেলাকে গুরুত্ব দেয়ায় আমার উপজেলার পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং তার আস্থাভাজন নেতৃত্ব স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী মহোদয়ের প্রতি চির কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

সংশ্লিস্ট সুত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু মডেল ভিলেজ’র কৃষিজমির সর্বোচ্চ ব্যবহার, মানবশ্রমকে যন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন, উৎপাদন বৃদ্ধি, পোস্ট হারভেস্ট লোকসান কমানো, পানিসাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পানির অপচয়রোধ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এ লক্ষ্যে সরবরাহ করা হবে কৃষি যন্ত্রপাতি। প্রাথমিকভাবে প্রতি গ্রামে ৩০০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রতিটি গ্রামের জন্য কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা হবে।

বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আধুনিক ও মানসম্মত মাছ চাষের শ্রেষ্ঠ অনুশীলনের জন্য গ্রামে দুটি প্রদর্শনী পুকুর তৈরি করা হবে।সারা বছরের আয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অফফার্ম কার্যক্রম হিসেবে গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আধুনিক ও মানসম্মত খামার ব্যবস্থাপনার কৌশলের ওপর গ্রামের নারী ও বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে গ্রামে প্রদর্শনী খামারে শ্রেষ্ঠ অনুশীলনের জন্য একটি মধ্যম আকৃতির খামার তৈরি করা হবে।

এছাড়া প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবলের চাহিদার আলোকে ব্যক্তিপর্যায়ে চাহিদার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনাসুদে ঋণ দেয়া হবে, ৩ শতাংশ সার্ভিস চার্জসহ সেই ঋণ ফেরত দিতে হবে। ঋণ গ্রহণের তিন মাস পর থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে। এছাড়া কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হবে। ৩ শতাংশ সার্ভিস চার্জসহ ওই ঋণ ফেরত দিতে হবে। এক্ষেত্রে ঋণ গ্রহণের ছয় মাস পর থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে। বঙ্গবন্ধু মডেল গ্রামে সব শ্রেণি-পেশার জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করে গ্রাম সমবায় সমিতি গঠন করা হবে।

সমিতিকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত কমিউনিটি ভবন নির্মাণ করা হবে। কমিউনিটি ভবনে বঙ্গবন্ধু পাঠাগার ও বঙ্গবন্ধু কর্নার, কমিউনিটি হল, সমিতির অফিস, সভাকক্ষ, কম্পিউটার কেন্দ্র ও ডিজিটাল সেন্টার, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান কেন্দ্র, বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি রাখার গোডাউন, সংরক্ষণাগার, প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

বঙ্গবন্ধু মডেল ভিলেজ’র প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আসবে অর্থাৎ এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। রাস্তার ধার, নদীর পাড়, মাঠ এবং বাড়ির আঙিনায় আবাদ করা হবে। কোনো পুকুর মাছ চাষহীন থাকবে না। যৌথ পদ্ধতিতে চাষাবাদ হবে। কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহারের প্রচলন থাকবে। পরিবেশবান্ধব ও পানিসাশ্রয়ী সেচ ব্যবস্থা থাকবে।

কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের পরিমিত ব্যবহার থাকবে এবং জৈব বালাইনাশকের ব্যবহার অনুশীলন করা হবে। কৃষি বহুমুখীকরণ চর্চা থাকবে। কৃষিপণ্যের বাজার নেটওয়ার্ক থাকবে। ফসলের সময়ের বাইরে (অফ-সিজন) কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে পশুপালন, ক্ষদ্র ব্যবসা ও কুটির পণ্য উৎপাদন ব্যবস্থা থাকবে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris