বুধবার

৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর লাল গামছা দেখে থামল ট্রেন, অল্পের জন্য রক্ষা রাজশাহী নগরীতে প্রস্তাবিত কবরস্থান ও ঈদগাহ নির্মাণে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন প্রথম ধাপে ১৪১ উপজেলায় ভোট গ্রহণ আজ প্রকল্প কতটুকু জনকল্যাণে লাগবে তা বিবেচনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর চৌবাড়িয়া পশুহাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ তানোরের গরুর গাড়ি আর মাটির বাড়ি স্থান পেয়েছে ডাক বিভাগের বিশেষ খামে রাজশাহীতে পাথরের ট্রাক থেকে ৫ কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার কাল গোদাগাড়ী উপজেলায় নির্বাচনে লড়াই হবে ত্রিমূখী? রাজশাহী নগরীতে প্রশস্তকৃত সড়কে আলোকায়নের উদ্বোধন করলেন মেয়র

বাদশার দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা!

Paris
Update : সোমবার, ২৮ জুন, ২০২১

নওগাঁ থেকে প্রতিনিধি : কিছুদিন পরেই সারা বিশ্বের মুসলিমদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহায় কোরবানির পশুর চাহিদা বেড়ে যায় অনেকগুন। ঈদকে সামনে রেখে পশু বিক্রেতারা সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন। দীর্ঘদিন স্বযত্নে লালন-পালন করে ভালো দাম দিয়ে গরু তুলে দেন ক্রেতাদের হাতে। নওগাঁর মান্দা উপজেলার নলঘোর গ্রামের রফিকুল ইসলাম। পেশায় একজন মিষ্টির দোকানী। মিষ্টি তৈরি করে স্থানীয় পীরপালি বাজারে বিক্রি করে থাকেন।

মিষ্টি বিক্রির লাভের টাকা দিয়ে গত দুই বছর ৩মাস আগে স্থানীয় ছাঁতড়া গরুর হাট থেকে একটি পাকিস্তানি সিংড়ি জাতের গরুটি কিনেন ৬২ হাজার টাকা দিয়ে। গরুটি কিনে বাড়িতে নিয়ে আসার পর রফিকুলের মেয়ে রিমা খাতুন নাম দেয় বাদশা। সেই ষাঁড়টি লালন-পালন করে মোটা তাজা করে বিক্রির উপযোগী করেছেন। বর্তমানে প্রায় ২২ মণ ওজনের ষাঁড়টি লম্বায় ৯ ফুট ১০ ইঞ্চি, উচ্চতায় ৭ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং রং টকটকে লাল। রফিকুলের বিশাল আকৃতির বাদশা নামের ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিন ভীড় জমাচ্ছেন স্থানীয় অসংখ্য মানুষ। আসছেন গরু কেনার জন্য দূর-দূরান্ত ক্রেতাররাও।

স্থানীয় বাসিন্দা সাহাজুল ইসলাম বলেন, এত বড় ষাঁড় গরু হামি কোনদিন সামনা সামনি দেকিনি। রফিকুল ভাই ২বছর আগে গরুডা কিনা লালন পালন করা বড় করা তুলিছে। সামনে ঈদ তাই বেচার চেষ্টা করিচ্ছে। ভালো দাম পালে বেচবে। আবুল হোসেন নামের পাশ্ববর্তী পীরপালি গ্রামের বাসিন্দা বলেন, ‘হামরা একই এলাকার লোক। রফিকুল ভাইয়ের মিষ্টির দোকান আছে পীরপালি বাজারোত, তাই মেলা আগে থ্যাকা হামার তার সাথে খাতির। ২বছর আগে গরুডা কিনা মোটাতাজা করিছে। ঈদোত বেচবে।

তার মেয়ে নাম দিছে বাদশা। এত বড় গরু হামি এর আগে কুন্টি দেকিনি। গরুডা লালন পালন করা বড় করা তুলতে তার মেলা টেকা খরচ হচে। মেলা জাগাত থাকা গরুডা কিনবার লোক আছিচ্ছে। ১১ লাখ পর্যন্ত দাম উঠিছে। তয় আর আনা বেশি দাম হলে বেচবে। গরুডা দেখতে মেল্যা বড়। তয় এই গরু যারা বড়লোক মানুষ তারা ভালো দামে কিনা লিবে। সবার সামর্থ্য হবেনা এত দাম দিয়া কিনার।’

আসাদ হোসেন নামের এক ক্রেতা এসেছেন রফিকুল ইসলামের বাদশা নামের ষাঁড়টি কেনার জন্য এসময় কথা হয় তার সাথে, তিনি বলেন, আমরা ৭জন মিলে কুরবানীর গরু কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ঈদের আর অল্প কিছুদিন সময় আছে। তবে একটু আগেই গরু কিনে বাসায় রেখে পরিচর্চা করে কুরবানী দিতে চাই। গরুটি দেখতে অনেক সুন্দর ও মোটাতাজা। যারা সখ করে একটু বড় মাপের গরু কুরবানী দিতে চায় তারাই মূলত এ ধরনের বড় উচ্চতার গরু কুরবানী দিয়ে থাকে।

রফিকুল ইসলাম মিষ্টির দোকান নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সারদিন আর তার স্ত্রী ছবিয়া বেগম সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে রফিকুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে স্থানীয় শাহপকুড়িয়া বালিকা বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী রিমা খাতুন ষাঁড়টিকে যত্ন করেন। যার কারনে রিমার বাদশা নামের ষাঁড়টির প্রতি মায়া জন্মেছে। যার কারনে তার পছন্দের বাদশা বিক্রির করা হবে শুনে তার মনটা খুবই খারাপ। কিন্তু গরীব মানুষ একটু লাভের আশায় ষাঁড় গরুটি কিনে মোটা তাজা করে বিক্রির জন্য উপযোগী করা হয়েছে।

রিমা খাতুন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আব্বু যখন গরুটি কিনে এনেছিল তখন আমি নাম দিয়েছিলাম বাদশা। করোনার কারনে আমার স্কুল প্রায় ১৫মাস থেকে বন্ধ রয়েছে। যার কারনে বাড়িতেই থাকতে হয়। তাই বাদশাকে আমিই বেশি দেখাশোনা করি। বাদশাকে গোসল করানো, খাবার দেয়া, গোয়াল ঘরে রাতে কয়েল দেয়া, অসুস্থ হলে ওষুধ খাওয়ানোসহ অনেক যত্ন করি। যখন ফ্রি থাকি তখনই বাদশার কাছে গিয়ে বসে থাকি। বাদশার গায়ে হাত বুলিয়ে দিলে সেও মাথা নারিয়ে তার মাথা আমার কোলে দেয়। বাদশা ক্ষুদা লাগলে বা অসুস্থ হলে আমি ঠিকই বুঝতে পারি।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনই মেলা জাগাত থ্যাকা লোকজন আচিচ্ছে বাদশাক কিনার জন্নি। একন পর্যন্ত ১০ থাকা ১১ লাখ পর্যন্ত দাম কছে। হামি ১৫ লাখ দাম চাচ্ছি। তয় সবাই হামার বাদশাক তো কিনবে না। যারা বড়লোক মানুষ এ্যানা বড় দেকা মোটাতাজা গরু কিনবার চায় তারাই কিনবে। এখন দেকা যাক কি হয়।

করোনার কারনে তো মেল্যা জাগাত থাকা মানুষ আসবার পারিচ্ছেনা। মেলা জাগাত লকডাইন চলিচ্ছে। যদি লকডাউন না থাকলোনি হয়তো আরো মেলা মানুষ হামার বাদশাডাক আসা দেকা পছন্দ করা কিনবার পারলোনি। আবার শুনিচ্ছি গরুর হাট নাকি বন্ধ থাকপে লওগাঁর ডিসি স্যার নাকি ষোষনা দিছে। তালে বাদশাকতো হাটোতও লিয়্যা যাবার পারমুনা’।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris