সোমবার

২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললে আন্দোলনের হুমকি

Paris
Update : মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১

এফএনএস : করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল-ক্যাম্পাস দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ফলে সেশনজট, পরীক্ষা, ল্যাব ক্লাস, চাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া, অর্থনৈতিক সঙ্কটের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক চাপ ব্যাপক হারে বেড়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা ভুগছেন পরিচয় সঙ্কটে। ঘটেছে কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনাও। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল ও ক্যাম্পাস খুলে দিতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনে নামবেন। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানায় একদল শিক্ষার্থী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেননি তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন কারণে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। একসময় আমাদের মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। হল-ক্যাম্পাস খুলে দিন, নয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে আমাদের দড়ি দিন, আমরা আত্মহত্যা করি। তারা বলেন, করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে জন্ম নিয়েছে অশিক্ষা, অনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ।

দীর্ঘদিন দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় উচ্চশিক্ষায় নেমে এসেছে স্থবিরতা। এসব শিক্ষার্থীর ভাষ্য, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা। তাদের কেউ টিউশন করে কেউবা পার্টটাইম কাজ করে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করে এবং অনেকে বাড়িতে টাকা পাঠিয়ে পরিবারের সদস্যদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালন করেন। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে থাকায় শিক্ষার্থীরা যেমন আর্থিক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন, তেমনি তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। সরকার শিক্ষার্থীদের অনলাইনভিত্তিক পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিলেও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা ল্যাপটপ ও ব্যয়বহুল ইন্টারনেটের কারণে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছে না।

আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, এতদিন টিকার কথা বলে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, টিকা নিলে আর করোনা হবে না, তাই টিকা নেয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, দুই ডোজ টিকা নেয়ার পরও অনেকের করোনা হচ্ছে। তার মানে টিকা দিলেই করোনা চলে যাবে, এমনটা নয়। তাই টিকার জন্য বছর বছর বসে থাকার কোনো মানে হয় না। বরং টিকার জন্য অপেক্ষা করা মানে হয়রানি বৃদ্ধি ও শিক্ষাজীবন ধ্বংস করার নামান্তর। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

না হলে দেশজুড়ে একযোগে কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাব আমরা। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামসুল ইসলাম, তিতুমীর কলেজের নুর মুহাম্মদ সুমন, কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের জি কে সাদিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাফায়েত রতন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইব্রাহীম চৌধুরী মুন্না, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিকে সাদিক, ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মারুফা প্রীতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ নাসির, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris