সোমবার

২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিরাপত্তা দাবী ও বহিরাগতদের উৎপাতের প্রতিবাদ

Paris
Update : শনিবার, ২২ মে, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : নিরাপত্তা, শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের দাবি এবং দখলবাজ বহিরাগত বখাটেদের উৎপাতের প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগরীতে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে নগরীর খড়খড়ি বাইপাসে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে গৃহবধূ রাজিয়া সুলতানা জানান, তার শ্বশুরের ভোগ দখল করা সম্পত্তি স্থানীয় ও বহিরাগত কিছু বখাটে এবং প্রভাবশালীরা মিলে দখলের চেষ্টা করে আসছে। এ নিয়ে কিছু বখাটের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।

যে বিষয় নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। চলতি মাসের গত (১৯ মে) দুপুরে তাদের প্রতিবেশী কিছু বখাটে যুবকের নের্তৃত্বে কয়েকজন বহিরাগত তার দেবর ও শ্বশুর বাড়ির সামনে ও পেছনে ট্রাকে করে মাটি নিয়ে এসে ভরাট ও মাটি খুঁড়ে গর্ত করতে শুরু করে। যা আগে থেকেই রাস্তা হিসেবে সবাই ব্যবহার করে আসছে। সেই রাস্তা দিয়ে সবাই চলাচল করে। গর্ত করলে তাদের পরিবারের লোকজনসহ অন্যদের যাতায়াতের সমস্যা হবে।

বিষয়টি জানতে পেরে তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানালে বখাটে মাহি, তার ভাগ্নে টিপু (২৬), ভুট্টু, সোহেলসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/২০ জন লাঠি নিয়ে তাদের সাথে মারমুখি আচরণ করে। এছাড়াও তার ননদকে উড়না টেনে ধাক্কা দেয়। বখাটেদের সাথে থাকা ১ জন অজ্ঞাত যুবক নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করে এবং সংবাদ প্রকাশ করে হেনস্থা করার হুমকি দেয়। তার পরিচয়পত্র দেখাতে বললে পারেনি।

ওই যুবকদের মাটে খোঁড়া বন্ধ করতে বললে তারা কাজ থামায়নি। অপারগ হয়ে মতিহার থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করতে বললেও তারা কর্ণপাত করেনি। পুলিশের সামনেই তারা মারমুখি আচরণ করে। পুলিশ চলে গেলে ওই বখাটেরা তার ১১ বছর বয়সি ছেলে জুবায়ের ও দেবরের ছেলে জাকিরকে জবাই করে দেয়ার হুমকি দেয়। আর তার স্বামীকে যাতায়াতের পথে ক্ষতি করার হুমকি দেয়। তিনি আরো জানান, নিরুপায় হয়ে তিনি আবার পুলিশকে জানালে ঘটাস্থলে পুলিশ যায়।

কিন্ত পুলিশ চলে গেলে আবার তারা হুমকি-ধামকি দিতে থাকে ও গালিগালাজ করে। এরপর থেকে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পরিবারের ছোটদের তারা ভয়ে বাইরে যেতে দিচ্ছেননা। ঘটনার পরদিন ২০ মে মতিহার থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ করেন তারা। অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই সুকান্ত। থানায় অভিযোগ দেয়া দুইদিন হতে চললেও পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের জমির কাগজ নিয়ে থানায় ডেকেছে। অথচ তারা জমির ব্যাপারে অভিযোগ করেননি। তাদের হুমকি-ধামকি ও অশালীন আচরণে ভয়ে অভিযোগ করেছেন।

তিনি অভিযোগ করে আরো জানান, এখনো পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ কারণে অভিযুক্তরা বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে ও উসকানিমূলক কথাবার্তা বলছে। তারা এখন বখাটে প্রভাবশালীদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তারা ভালোভাবে বসবাস করতে পারছেন না। ঘটনার পর থেকে ভীত সন্ত্রস্ত্র অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তাই তারা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মানববন্ধনে উপস্থিত অন্য সদস্যরা বলেন, আমারা শান্তিপূর্ণভাবে বাপ-দাদার ভিটায় বসবাস করতে চাই। আমরা গরীব হওয়ার কারণে তারা আমাদের উপর জোর খাটাচ্ছে।

এ জন্য আমরা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি ও দোষীদের বিচার দাবি করছি। যাতে তারা বাইরে ঘুরে আর অন্যায় করতে না পারে। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা কেঁদে ফেলেন।
মানববন্ধনে মারুফ, ইমন, সুফিয়া, মুরশিদা, আজেদা, আরিফা, জেসমিন, মুক্তার, রাবিয়া, শামসুল, সুখতারা খাতুন, ফাতেমা, ইয়াসিন, সাহাচাঁন, কামরুজ্জামান, হারুন, জাকির, সাহাবুদ্দিন, মুরাদ, তমা, সাকিল, জান মোহাম্মদসহ ভুক্তভোগী পরিবারের আরো সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে মতিহার থানার এসআই ও অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সুকান্ত বলেন, জমি দ্বন্দ্ব তাই ডেকেছিলাম। তারা আসতে চায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris