মঙ্গলবার

৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৯৯৯-এ কল দিয়ে সেবা না মেলেনি বলে অভিযোগ

Paris
Update : রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীতে প্রকাশ্য দিবালোকে একটি বাগানে অবৈধভাবে গাছ কাটার ঘটনায় পুলিশের জরুরী কল সেন্টার ৯৯৯-এ একাধিকবার কল দিয়েও সেবা মেলেনি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাছ কাটা শেষ হলে ওই বাগানে চারজন পুলিশ সদস্য গিয়ে ওই সন্ত্রাসীদের সাথেই খিচুরি রান্না করে খেয়ে ফিরে আসে বলেও অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজশাহী প্রেসক্লাবে জরুরী সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বাগান মালিক রিয়াজুল ইসলাম। তিনি নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন হড়গ্রাম নগরপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে মো. রিয়াজুল ইসলাম জানান, তার বাবা আলহাজ্ব আজিজুল হক ১৯৭৯ সালে নগরীর বড়পুকুরিয়া এলাকার মহির উদ্দীন সরকারের কাছ থেকে সাড়ে ৬১ শতক (প্রায় দ্ইু বিঘা) জমি কিনে নেন। জমিটিতে আমরা পাঁচ ভাই বৃক্ষ রোপন করি এবং দীর্ঘ ৪১ বছর থেকে ভোগদখল করতে থাকি। লিচু, আম ও মেহগনিসহ আরো বেশকিছু গাছ বড় হয়ে পূর্ণাঙ্গ বাগানে রূপ নেয়। কিন্ত গত ১৬ মার্চ সকাল সাড়ে ৭টার সময় নগরীর রানিদীঘী এলাকার মৃত জুব্বারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও তার পার্টনার আব্দুস সোবহান প্রায় ৪০/৫০ জনের একটি চক্র নিয়ে যায় এবং গাছগুলো কাটতে থাকে।

তৎক্ষনাৎ বিষয়টি কাশিয়াডাঙ্গা থানায় জানালে পুলিশ অপরাগতা প্রকাশ করে। তিনি বলেন, থানা পুলিশ অপরাগতা প্রকাশ করলে ওইদিন সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে আমার ছোট ভাই ইসমাইল হোসেন পুলিশের জরুরী কল সেন্টার ৯৯৯-এ কল দিয়ে বিষয়টি জানালে সেখান থেকে এসএমএস-এর মাধ্যমে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ডিউটি অফিসারের নাম্বার দেয়া হয়। এরপর সেই নাম্বারে কল দিয়ে জানানো হলে ডিউটি অফিসারও অপরাগতা প্রকাশ করে। ফলে এবার আমি নিজেই ৯৯৯-এ কল দিই এবং অবৈধভাবে গাছ কাটার ঘটনা ও থানা পুলিশের গড়িমসির বিষয়টি জানাই।

৯৯৯ থেকে থেকে বিষয়টি দেখছি বলে আশ্বস্ত করা হয়। রিয়াজুল ইসলামের অভিযোগ, দ্বিতীয়বার ৯৯৯-এ কল দিয়েও ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়নি। ব্যবস্থা না নেয়ায় বাধ্য হয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে যান তিনি। তবে পুলিশ কমিশনারের কক্ষে ঢুকতেই কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজের সাথে দেখা হয়।

রিয়াজুল বলেন, ওসি মাসুদ পারভেজ আমাদেরকে দেখে পুলিশ কমিশনারের কক্ষে ঢুকতে না দিয়ে বিষয়টি দেখছি বলে আমাদেরকে ফিরিয়ে দেন। ফলে আমরা ফিরে আসি। এরইমধ্যে গাছ কাটা শেষ হয়ে যায়। তবে গাছ কাটা শেষ হলে ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে চারজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যায়। কিন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ ঘটনায় গত ১৬ মার্চ কাশিয়াডাঙ্গা থানায় আলাদা লিখিতভাবে একটি অভিযোগ দিলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলেই যায়নি। অবৈধভাবে কর্তনকৃত ২০টি গাছের আনুমানিক মূল্য পাঁচ লক্ষ টাকা। এ ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন এবং গাছ কেটে পরিবেশের ক্ষতি করেছে সন্ত্রাসী বাহিনী।

তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী বাগান মালিক রিয়াজুল ইসলাম। এ বিষয়ে ঘটনার অভিযুক্ত আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজ বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে তৎক্ষণাৎ পুলিশ পাঠানো হয়। এছাড়া পরবর্তীতে জিডির বিষয়টিও আইনগতভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’


আরোও অন্যান্য খবর
Paris