শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বল্পোন্নত থেকে বাংলাদেশের উত্তরণে খুশি ভারত সাফল্যের প্রশংসা করলেন ইতালির রাষ্ট্রপতি

Paris
Update : রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১

এফএনএস : বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের সুপারিশ লাভ করায় ভারত অত্যন্ত খুশি এবং অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও প্রতিবেশীদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইনের। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব গত শুক্রবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, সম্প্রতি ঢাকায় এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের ভূয়সী প্রশংসা এবং গর্বপ্রকাশ করেছেন। শ্রীবাস্তব বলেন, এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণে আমরা খুশি এবং এই প্রবৃদ্ধির পথে তাদের সঙ্গে সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখব।

বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে সাফটার (দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি) অধীনে ভারতে যে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা পেত, এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও সেটি পাবে কি না জানতে চাওয়া হয়েছিল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশ উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ কর্মকর্তাদের দ্বিপাক্ষিক বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (সিইপিএ) সম্ভাবনা নিয়ে একটি যৌথ গবেষণা দ্রুত সমাপ্তের নির্দেশ দেন।

গত ১৭ ডিসেম্বর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনে নতুন এই চুক্তির বিষয়টি সামনে আসে। শ্রীবাস্তব বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ভার্চুয়াল সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেওয়া শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত সুবিধার প্রশংসা করেন। সাফটার ভিত্তিতে ২০১১ সাল থেকে ভারত বাংলাদেশকে এই সুবিধা দিচ্ছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ করেছে।

নিয়ম অনুযায়ী, তিনটি শর্ত পূরণ হলে এবং পরপর দুটি পর্যালোচনায় এ মানদণ্ড ধরে রাখতে পারলে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাওয়া যায়। শর্ত তিনটি হলো- মাথাপিছু আয় হতে হবে কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ পয়েন্ট ও অর্থনীতির ভঙ্গুরতা সূচকে ৩২ বা তার নিচে থাকতে হবে। বাংলাদেশ এসব শর্ত ২০১৮ থেকেই পূরণ করে আসছে। সাধারণত প্রতি তিন বছর পরপর এই মানদণ্ড পর্যালোচনা করে সিডিপি।

এদিকে ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইতালির রাষ্ট্রপতি সেরজিও মাত্তারেল্লার কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান। বৃহস্পতিবার রোমে অবস্থতি রাষ্ট্রতির সরকারি বাসভবন ‘কুইরিনাল প্যালেসে’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির কাছে শামীম আহসান তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। পরিচয়পত্র গ্রহণের সময় ইতালির রাষ্ট্রদূত মাত্তারেল্লা বাংলাদেশের বিভিন্ন কাজে অসাধারণ সাফল্যরে প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রদূত মোটর শোভাযাত্রায় ‘বাংলাদেশ হাউজ’ থেকে কুইরিনাল প্যালেসে পৌঁছান এবং বিদায়ের সময় প্রেসিডেন্ট রেজিমিন্টের একটি চৌকসদল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।

পরিচয়পত্র পেশ করার পর অনুষ্ঠিত একান্ত বৈঠকে ইতালির রাষ্ট্রপতি বাংলাদশেরে নতুন রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান এবং তার দায়িত্ব পালনের সময় সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এসময় রাষ্ট্রদূত আহসান রাষ্ট্রপতিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। একইসঙ্গে বাংলাদশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত তাকে অবহিত করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, উন্নয়নরে ক্ষেত্রে বিস্ময়কর সাফল্যের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে বাংলাদশ একটি রোল মডেল হিসেবে সারাবিশ্বে স্বীকৃত।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্যের বিষয়ে অবগত আছেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মাত্তারেল্লা আগামী দিনগুলোতে দু’দশেরে সম্পর্ক আরো জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কঠোর পরিশ্রমী অবহিত করে ইতালির অর্থনীতিতে তাদের অবদানেরও প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি ‘ফ্লুসি ডিক্রিতে (সিজনাল কৃষি স্পন্সর) বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ইতালি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris