আলিফ হোসেন, তানোর : রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আমির হোসেন আমিনকে (নৌকা) ৬১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী (জগ) সাইদুর রহমান। অন্যদিকে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও নৌকা ডুবির ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক তোলপাড় সৃস্টি করেছে। স্থানীয় নির্বাচনে যে স্থানীয়রা বড় শক্তি এই ফলাফলে সেটা প্রমান হযেছে, কিন্ত্ত নৌকার প্রার্থী স্থানীয়দের ওপর ভরসা না রেখে বহিরাগতদের ওপর সম্পুর্ন নির্ভরশীল হয়ে ভোট করায় তীরে এসে তৈরী ডুবেছে। তবে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে,কারণ আওয়ামী লীগ মতাদর্শী দুই প্রার্থীর মধ্যে তীব্র প্রতিদন্দিতা হওয়ায় নৌকার ভোট বেড়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে স্থানীয়রা নৌকার পরাজয়ের জন্য মোটা দাগে কয়েকটি বিষয় চিহ্নিত করেছে। যার মধ্য প্রার্থীর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস-দাম্ভিকতা, স্থানীয় নির্বাচনে বহিরাগত নির্ভর, প্রচারে বাড়াবাড়ী ও ফটোসেশন অন্যতম। স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা প্রচন্ড শীতে রাঁতের ঘুম হারাম করে যখন কৌশলে ভোটারদের মন জয় করে ভোটের মাঠে ভোট করতে মরিয়া, তখন নৌকার কর্মীরা হাস্যজ্জ্বোল ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিতে ব্যস্ত, পাশাপাশি প্রচার-প্রচারণায় ছিল বহিরাগত নির্ভর কিছুটা বাড়াবাড়ি ও নৌকা মানেই বিজয় প্রার্থীর এমন অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। এছাড়াও প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তার নৌকাবিরোধী অবস্থান ছিল বলেও তৃণমুলের নেতাকর্মীদের মধ্য আলোচনা রয়েছে। জানা গেছে, গত ৩০ জানুয়ারী শনিবার মুন্ডুমালা পৌরসভায় কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নেয়া হয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নির্বাচনী পরিবেশ ছিলো সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ এবং আংশগ্রহমুলক ভোটাররা উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করেছে। ভোট কেন্দ্রে সকাল থেকেই ছিল পুলিশ, আনসার সদস্যদের পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবি টহল। এছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। জানা গেছে, পৌরসভায় ভোটার রয়েছে প্রায় ১৮ হাজার। এখানে মূলত লড়াই হয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী সাইদুর রহমান (জগ)ও আমির হোসেন আমিনের (নৌকা) মধ্য ফিরোজ কবিরের (ধানের শীষ) অবস্থান ছিল তিন নম্বর।

সুত্র জানায়, আমির হোসেন আমিন (নৌকা) প্রতিকে ৫ হাজার ৩৯৮ ভোট, সাইদুর রহমান স্বতন্ত্র (জগ) প্রতিকে ৫ হাজার ৪৫৯ ভোট ও ফিরোজ কবির (ধানের শীষ) প্রতিকে ৩ হাজার ৬৮১ ভোট পেয়েছেন ৬১ ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইদুর রহমান বিজয়ী হয়েছেন।তবে যেখানে জামায়াত-বিএনপি অধ্যুাষিত এলাকা হিসেবে মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় বেশীরভাগ ভোট তাদের মতাদর্শী, সেখানে আওয়ামী লীগ মতাদর্শী দুই প্রার্থীর মধ্য তীব্র প্রতিদন্দিতা অবশ্যই তাদের জন্য সুখবর। মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়রপদে মোট ৩ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদন্দিতা করেন।

এব্যাপারে উপজেলা রিটার্নিং ও নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে ১০টি ভোট কেন্দ্রে অনেক শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়েছে ভোটার দের উপস্থিত ও লক্ষ করা গেছে। এবং আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত ছিলাম। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে আলাদা দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। ভোট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি কেন্দ্র স্বাভাবিক রাখতে মাঠে ছিল র‌্যাব, পুলিশের পাশিাপাশি আনসর বাহিনী ভোট শতভাগ সুষ্ঠু হয়েছে। এব্যাপারে নবনির্বাচিত মেয়র সাইদুর রহমান পৌরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তিনি কোনো ব্যক্তি বিশেষের নয় তিনি পৌরসভার সকল মানুষের প্রতিনিধি তার কাছে সবাই সমান তিনি সকলের সহযোগীতা নিয়ে আগামি দিনে পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করতে চান।