মঙ্গলবার

৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাগমারায় খাস জলাশয় দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ

Paris
Update : বুধবার, ১৮ মে, ২০২২

মচমইল থেকে সংবাদদাতা : রাজশাহীর বাগমারায় সরকারি খাস জমি(জলাশয়) দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুকুর খনন চক্রের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট শতাধিক গ্রামবাসীর স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের ইসলাবাড়ী গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে একটি ডাড়া(জলাশয়)। জলাশয়টিতে প্রায় সাড়ে পাঁচ একর খাস জমি রয়েছে। এছাড়া ডারার উভয় পাশে প্রচুর কাসলা জমি রয়েছে। সেখানে বর্ষকালে ডারার উভয় পাশের গ্রামের কৃষকরা সেখানে পাট জাগ দিয়ে থাকে এবং বর্ষার পানি নেমে গেলে সেখানে বোরো বীজতলা তৈরি করে বোরো আবাদ করে শত শত কৃষক।

সম্প্রতি এই ডারার উভয় মুখ বন্ধ করে এবং সরকারি খাস জমি দখল করে সেখানে পুকুর খনন শুরু করেছে পাশ্ববর্তী নরসিংহপুর গ্রামের মৃত বাহার আলীর পুত্র সাইদুর, একই গ্রামের মৃত আফসার আলীর পুত্র আতাউর, শহিদুল্লার পুত্র ফয়সাল আহম্মেদ ও নন্দরপুর গ্রামের ইউনুস আলীর পুত্র নাসির উদ্দিন। তারা সেখানে ভেকু মেশিন বসিয়ে ডারার উভয় মুখ বন্ধ করে দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা পুকুর খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই পুকুর খনন কাজ বন্ধ করার জন্য গ্রামবাসীর পক্ষে মমতাজ উদ্দিন, আব্দুল করিম, আবু বাক্কার সিদ্দিক ও মনিরুল ইসলাম সহ বেশ কিছু গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তারা বলেন, গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া এই ডারার উপর শতশত গ্রামবাসী জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।

এখানে পাট ধোয়া, বীজতলা তৈরি করা ছাড়াও গ্রামের দরিদ্র শ্রেণির লোকজন এখানে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এভাবে ডারাটি দখল করে নেওয়ায় ৪/৫ জন ভূমিদস্যু উপকৃত হবে এবং গ্রামের শত শত কৃষক ক্ষতির সম্মুক্ষিন হবে। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, সেখানে পুকুর খনন সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা মুষ্ঠিয়েয় কয়েকজন কৃষককে হাত করে এবং তাদের জমি নামমাত্র মূল্যে লীজ নিয়ে অধিকাংশ কৃষকদের জিম্মি করে তাদের জমি জোর পূর্বক দখল করে পুকুর খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগকারীরা আরো বলেন, পুকুর খনন চক্রের সদস্যরা ওই গ্রামে আলোর ঠিকানা নামে একটি উচ্চ সুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খাড়া করেছে।

তারা সেখানে উচ্চহার সুদ নিয়ে মানুষকে পথে বসিয়ে সেই অবৈধ টাকায় এখন খাস জমি সহ কৃষকের জমি দখল করে পুকুর খননের মহোৎসব শুরু করেছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, তারা এ নিয়ে পুলিশের শরনাপন্ন হলেও উল্টো পুলিশ গিয়ে খননকারীর পক্ষ নিয়েছে বলে তারা দাবী করেন। গ্রামবাসীর দাবী, খননের প্রথমে পুলিশকে জানালে থানা থেকে এসআই ইমরান ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে খনন কাজে উৎসাহ প্রদান করে চলে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই ইমরান ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ওই পুকুর খননকারীর একজন তার এক ব্যাসমেটের বন্ধু হওয়ায় তার অনুরোধে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন মাত্র।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পুকুর খননচক্রের অন্যতম সদস্য ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, আমরা সেখানে কৃষকের জমি ন্যায্য মূল্যে লীজ নিয়ে পুকুর খনন করছি। কিছু কৃষকের জমি এখনও নেওয়া হয়নি। সেগুলো নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া কিছু সরকারি খাস জমি যা কৃষকের দখলে রয়েছে। সেগুলোও যথাযত প্রক্রিয়ায় লীজ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ান জানান, সেখানে পুকুর খননের বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris