বুধবার

২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
বগুড়া কারাগারের ছাদ ফুটো করে চার ফাঁসির আসামির পলায়ন, পরে আটক শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের বর্ণাঢ্য জীবন, আজ জন্মবার্ষিকী নাচোলে ইলামিত্র সংগ্রহশালা পরিদর্শনে ভারতীয় হাই কমিশনার আগামী এক বছরের মধ্যে রাজশাহী জেলা হবে শিশুশ্রম মুক্ত : প্রতিমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না : প্রধানমন্ত্রী দিল্লি সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী বাইডেন-ট্রাম্প মুখোমুখি বিতর্কে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস, গুরুত্ব পাবে মানসিক যোগ্যতা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি, মুক্তি পেলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ নাটোরে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি নাটোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু

গোদাগাড়ীর বিপ্লব ঘাটিয়ালের কোটিপতি হওয়ার নেপথ্যে…

Paris
Update : শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : প্রতি বছরেই হু হু করে বাড়ছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী খেয়াঘাটের ইজারা মূল্য। মাত্র বছর পাঁচ আগেও যে ঘাটের মূল্য ছিল মাত্র ১০-১৫ লক্ষ টাকা, সেই ঘাটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে এখন কোটি ছুুঁই ছুঁই। প্রশ্ন একটায়, এত টাকা দিয়ে ঘাট টেন্ডার নিয়ে ইজারাদার লাভবান হচ্ছে কি? এত টাকা দিয়ে ঘাট নিচ্ছেই বা কেন? এমন প্রশ্নের অনুসন্ধানে মিডিয়াকর্মী। গত কয়েক সপ্তাহের অনুসন্ধানে মিডিয়ার হাতে অনেক তথ্যই বেরিয়ে এসেছে খেয়াঘাট সম্পর্কে। গত কয়েক সপ্তাহের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে মানুষ ও কৃষি পণ্য পারাপারের জন্য গোদাগাড়ীতে মোট ছয়টি ঘাট থাকলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় খেয়াঘাট উপজেলার মহিষালবাড়ি বা রেল বাজার ঘাট। যার কাগজিও নাম ভগবন্তপুর ঘাট। এই ঘাটটির এবারের টেন্ডার মূল্য সাড়ে ৫৭ লক্ষ টাকা। একইভাবে সুলতানগঞ্জ ও বালিয়াঘাটা তিনগুন দাম দিয়ে ঘাট ইজারা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। অথচ এসকল ঘাটের সরকারের টার্গেট ছিল ভগবন্তপুর ২৩,৫৩,১৯৬ টাকা, সুলতানগঞ্জ ১৫,৮২,০৭৫ টাকা এবং বালিয়াঘাটা ২,৬৪,০০০ টাকা মাত্র। তবে এই ঘাটগুলোর কাগজে ইজারাদার হিসেবে আহসান হাবীব আজাদের নাম থাকলেও ঘাটটি নিয়ন্ত্রণ করছেন মুলত আরিফুল ইসলাম ওরফে বিপ্লব ঘাটিয়াল। যার ইশারায় রাত দিন পার হয়ে থাকে মাদকসহ অবৈধ মালামাল। আর এই মাদক ও অবৈধ মালামাল পার করেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বিপ্লব ঘাটিয়াল। অথচ মাত্র ১০ বছর আগেও যার পারিবারিক অবস্থা ছিল খুব শোচনীয়। কিন্তু আজ সে কোটিপতি। তবে এই খেয়াঘাট পরিচালনা করে শুধু বিপ্লব কোটিপতি হয়নি এই ঘাটগুলোর সাথে জড়িত বেশির ভাগ শেয়ারদার আজ টাকার কুমির হয়েছেন। তবে গোদাগাড়ীর মাদক পারাপারের সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট হিসেবে এই বিপ্লবকে ধরা হয়।
প্রশ্ন এখন, কে এই বিপ্লব ঘাটিয়াল? বিপ্লব গোদাগাড়ী উপজেলার বিদিরপুর (নিচ পাড়া) গ্রামের আ: রাজ্জাকের ছেলে। মাদক পারাপার নিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানান, সারাদেশে হেরোইন পাচারে সবার শীর্ষে যেমন গোদাগাড়ীর নাম, ঠিক তেমনি মাদক পারাপারের গড ফাদারের আরেক নাম বিপ্লব ঘাটিয়াল। এই সিন্ডিকেটের হাত ধরে দেশে প্রতিবছর শত শত কোটি টাকার হেরোইন প্রবেশ করেছে এবং করছে। মাদক পার করেই তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। রাজশাহী শহর ও নিজ এলাকায় (শাকপালা) বিঘা বিঘা জমি কিনেছেন। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এলাকাবাসী জানান, সে এক সময় ভারতীয় অবৈধ গরু ও মাদকদ্রব্য পারাপার করতো এবং নিজে ব্যবসাও করতো। সেই এই কাজের জন্য চর এলাকায় থাকতো। পরে সে বিয়ে করে মাটিকাটা ইউনিয়নের ভাটোপাড়া (বাঙ্গালপাড়া) এলাকার আঃ করিমের মেয়েকে। সে দীর্ঘদিন ঘরজামাই ছিল। এরপর তার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে। আগে সে প্রেমতলী, বিদিরপুর ও ফুলতলা খেয়াঘাট চালাতো। পরে বিপ্লবের ব্যাপারে আরও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ১৫ মার্চ রাতে আড়াই কোটি টাকার হেরোইনের একটি বড় চালান গায়েব হয়ে যায়। হেরোইনটি মাদারপুরের তারেকের হলেও এই চালান পারাপারের দ্বায়িত্ব ছিল তার। এতে নিজেদের মধ্যে চরম রাগারাগি হয় এবং এর ফল হিসেবে এবার সেই ঘাট থেকে বিপ্লবকে বিদায় নিতে হয়। অবশেষে সেই সিন্ডিকেটের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তিনগুন টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছেন ভগবন্তপুর, সুলতানগঞ্জ ও বালিয়াঘাটা ঘাট। এই বিপ্লব ঘাটিয়ালের হয়ে কাজ করেন লালটু মাঝি, লিটন মাঝি, আলাউদ্দিন মাঝি ও ফরজ মাঝি। হিরোইন পাচার করতে গিয়ে ১ কেজিসহ প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ে জেলে আছেন লিটন। বিদিরপুর ঘাট চালানোর সময় বিপ্লব ঘাটিয়ালের নিজস্ব দুইটা নৌকাও ছিল। যার মাঝি হিসেবে কাজ করতো এরা। এদের তথ্যবিবরণী নিয়ে আগামী পর্বে থাকবে।
অভিযোগের ব্যাপারে ঘাটের ইজারাদার আরিফুল ইসলাম বিপ্লবের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি প্রতিবেদকের উপর ক্ষিপ্ত হন। তিনি রাগান্বিত স্বরে বলেন, মাদক পার করলে আপনারা এসে ধরেন। মাদক ধরা আমাদের কাজ নয় প্রতিবেদক এমন কথা বললে তিনি বলেন, তাহলে আমাকে ফোন দিয়েছেন কেন? পরে তার সম্পদের কথা জানতে চাইতে তিনি জানান, দেশের সব সম্পদ আমি কিনেছি। শহরের জমি কিনার কথা বললে উত্তর দেন, তার স্ত্রী প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করেন। তার টাকা দিয়ে জমি কিনা হয়েছে। আমার ব্যাংকঋন ছিল, এখন নাই। আপনার মাল পার করতে গিয়ে লিটন মাঝি জেলে গিয়েছে বলতেই তিনি অস্বীকার করেন এবং ফোন কেটে দেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris