বুধবার

২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
বগুড়া কারাগারের ছাদ ফুটো করে চার ফাঁসির আসামির পলায়ন, পরে আটক শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের বর্ণাঢ্য জীবন, আজ জন্মবার্ষিকী নাচোলে ইলামিত্র সংগ্রহশালা পরিদর্শনে ভারতীয় হাই কমিশনার আগামী এক বছরের মধ্যে রাজশাহী জেলা হবে শিশুশ্রম মুক্ত : প্রতিমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না : প্রধানমন্ত্রী দিল্লি সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী বাইডেন-ট্রাম্প মুখোমুখি বিতর্কে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস, গুরুত্ব পাবে মানসিক যোগ্যতা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি, মুক্তি পেলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ নাটোরে ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি নাটোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু

মাছ উৎপাদনে চীনকে টপকে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ

Paris
Update : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪

মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চীনকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমান। ভবিষ্যতে মৎস্য উৎপাদনে প্রথম স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করবো বলেও জানান মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে মিঠা পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হওয়া উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। দেশীয় প্রজাতির মাছ সন্দেহাতীতভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে উল্লেখ করে আবদুর রহমান বলেন, এ জাতের মাছ বাড়ানোর জন্য নদী-নালায় পোনা অবমুক্ত করে থাকি। কিন্তু কারেন্ট জাল গোটা বাংলাদেশকে ছড়িয়ে পড়েছে। একটা পোনা পর্যন্ত এ জাল থেকে নিষ্কৃতি পায় না। দেশে আমরা এ জাল উৎপাদন নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু জাল উৎপাদনকারীরা আদালত পর্যন্ত গেছে। যে সব মাছ আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে গেছে, আগামীতে তা আবার খালে-বিলে দেখতে পাবেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার প্রতিবেদন অনুসারে, মিঠা পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ চীনকে টপকে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। এ ছাড়া বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চীনের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে দ্বিতীয়। অপরদিকে বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে তৃতীয়। বিগত দুই বছরে বাংলাদেশের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন টন থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৩২ মিলিয়ন টন এ উন্নীত হয়েছে। পক্ষান্তরে চীনের উৎপাদন ১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন টন থেকে কমে ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন টন হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ক্রাস্টাশিয়ান্স (খোলসযুক্ত মৎস্য জাতীয় প্রাণী যেমন: চিংড়ি, লবস্টার ইত্যাদি) উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম এবং সামুদ্রিক মাছ উৎপাদনে ১৪তম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, বিগত দুই বছরে মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে ইলিশ, দেশীয় প্রজাতির মাছ। (পাঙ্গাস, বোয়াল, আইড় ও অনান্য ছোট মাছ) এবং কার্প জাতীয় মাছ। এর মধ্যে সর্বাধিক অবদান রয়েছে ইলিশ মাছের। বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম; ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল। ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো ও টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে সরকার জাটকা সংরক্ষণ, ইলিশ প্রজনন সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন, ইলিশ অভয়াশ্রম ঘোষণা ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন হয়েছে ৫ দশমিক ৭১ লাখ মেট্রিক টন। তিনি আরও বলেন, ২০৩০ সালে আমাদের মৎস্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬৫ লাখ মেট্রিক টন এবং ২০৪১ সালে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লিখিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও টেকসই মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিতকল্পে সেক্টরাল অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়নপূর্বক তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সুনীল অর্থনীতির বিকাশ সাধন ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনার নিমিত্তে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এদিকে যারা কৌশল করে কিংবা ছলচাতুরির মাধ্যমে কোরবানির পশুর চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন, তাদের মাথায় হাত পড়তে বাধ্য বলে মন্তব্য করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান। দেশে কোরবানির পশু উৎপাদন বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় পশু সরবরাহ বেশি আছে। কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা এক কোটি সাত লাখ; গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ সব মিলিয়ে। সেখানে আমাদের প্রস্তুত আছে প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ। বাজারে এখন কোরবানির গরুর যে দাম চাওয়া যাচ্ছে, তাতে প্রতিকেজি মাংসের দাম এক হাজার টাকা পড়ে যাচ্ছে। তাহলে কোরবানির পশু বাড়তি থেকে লাভ কী? এক সাংবাদিক এমন প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, এই পরিসংখ্যান আপনি কোথায় পেলেন? তখন ওই সাংবাদিক বলেন, যারা বিক্রি করছেন এবং যারা কিনছেন তারা জানাচ্ছেন। এ সময় প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, আপনি এত ডিটেইলসে গেলেন; কী পরীক্ষায় বা কোনভাবে আপনি জানতে পারলেন? এর পরিপ্রেক্ষিতে আরেকজন সাংবাদিক বলেন, মাননীয় মন্ত্রী, লাইভ ওয়েটে সাড়ে ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। একটা গরুর প্রায় ৬০ শতাংশ বাদ যায়। সে হিসাবে যদি আপনি দাম ধরেন, প্রতি কেজি এক হাজার টাকার ওপরে হয়ে যায়। উত্তরে মন্ত্রী বলেন, বাজারে যে কোনো পণ্যের দাম নির্ধারিত হয় চাহিদা এবং সরবরাহের ওপরে। আমার দায়িত্ব হলো প্রয়োজনের তুলনায় সেই সরবরাহ আছে কি না তা নিশ্চিত করা। আমি তো পরিসংখ্যান দিলাম। আরও ২২ লাখ পশু উদ্বৃত্ত আছে। তিনি আরও বলেন, আজকে হয় তো কেউ নানাভাবে হ্যাল্ডেলিং করে গরুর দাম বাড়াতে পারে। চড়া দাম হাঁকাতে পারে। কিন্তু দিন শেষে ওদের মাথায় হাত পড়বে। কারণ আমার তো গরুর যোগান আছে। যারা কৌশলে বা নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে দাম হাঁকাচ্ছে ওদের মাথায় হাত পড়তে বাধ্য। মন্ত্রী আরও বলেন, দাম নির্ধারণ করার দায়িত্ব আমার না। দাম নির্ধারণ করবে বাজার। আমরা সাধারণত অর্থনীতির সংজ্ঞায় বুঝি, সরবরাহ ও চাহিদার যদি সমন্বয় থাকে সে ক্ষেত্রে বাজারই বাজারমূল্য নির্ধারণ করে। আমি কিভাবে বাজার মূল্য নির্ধারণ করবো। ডিমের দাম বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে আবদুর রহমান বলেন, আমরা যখন তাদের (খামারি) সঙ্গে বসি, তারা একটা অজুহাত দেয় খাদ্য শস্যের দাম বেশি। আমদানি করতে হয়। আমি আমার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটা বৈঠক করবো। তাদের এই অজুহাত কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য না। প্রয়োজনে আমরা তাদের সঙ্গে আবার বসে তাদের একটা ডিমের জন্য কত খরচ হয় এবং লাভ কত করতে হয়, তারপর দাম নির্ধারণ করবো। এই ব্যাপারে নিশ্চয় আমাদের নজরদারি থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর প্রমুখ।-এফএনএস

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris