শনিবার

১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রেলের পশ্চিমাঞ্চলে শিডিউল বিপর্যয়, যাত্রী ভোগান্তি চরমে প্রতিটি নাগরিককে স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী বুবলির পর থানায় জিডি করলেন অপু পাকিস্তানে ৭ ঘুমন্ত শ্রমিককে গুলি করে হত্যা বাগমারায় তহশীলদার সাজ্জাদকে বদলির খবরে মিষ্টি বিতরণ রাজশাহী নগরীতে কবরস্থান বাস্তবায়নের দাবিতে ১১ মসজিদের মুসল্লিদের মানববন্ধন মান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল রাসিক মেয়রের সাথে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের সৌজন্য সাক্ষাৎ সিরাজগঞ্জে হেরোইন বহনের দায়ে গোদাগাড়ীর ২ যুবকের যাবজ্জীবন নিজের নামে কোনো প্রকল্প চান না প্রধানমন্ত্রী

প্রকৃতি যেখানে সৌন্দর্য দিয়ে সাজিয়েছে ঋতুরাজ বসন্তকে

Paris
Update : মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪

শাহজাহান শাজু, নিয়ামতপুর : কুয়াশার চাদর ঢাকা শীতের বুড়ি বিদায় নিয়েছে। এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। হিমশীতল প্রকৃতি যেন ফিরে পেয়েছে জীবনের ছোঁয়া। কোকিলের কুহুতান আর বাহারি ফুলের সৌরভে মেতে উঠেছে বসন্তের বাউলা বাতাস। শিমুল পলাশের ভীড়ে সুবাশ ছড়িয়ে যাচ্ছে ভাঁটফুল। নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রাস্তার দুই পাশে, ঝোপঝাড়ে, পুকুরপাড়ে, পতিত জমিতে থোকায় থোকায় ফুটতে শুরু করেছে ভাঁটফুল। রাতের আঁধারেও ফুলটির মধুগন্ধ ভেসে বেড়ায় চারপাশে। এটি একটি বুনোফুল। অঞ্চলভেদে এ ফুল ভাঁট, ভেটি, ভাইট, বনজুঁই বা ঘেটু নামে পরিচিত। ভাঁটের বৈজ্ঞানিক নাম ঈষবৎড়হফবহফৎড়হ ারংপড়ংঁস। ভাঁট গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। গাছের প্রধান কাণ্ড খাড়া, সাধারণত ২ থেকে ৪ মিটার লম্বা হয়। পাতা কিছুটা পানপাতার আকৃতির ও খসখসে। পাতা ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। ডালের শীর্ষে পুষ্পদণ্ডে ফুল ফোটে। পাপড়ি সাদা, তাতে বেগুনি মিশেল আছে। ভাঁট মিয়ানমার ও ভারতীয় প্রজাতি।
বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা নওগাঁ বইয়ে লেখা আছে নওগাঁ অঞ্চলে প্রতিবছর চৈত্র মাসের ১ তারিখ থেকে চৈত্র মাসের সংক্রান্তি পর্যন্ত একমাস ধরে প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় বালিকারা একত্রিত হয়ে বসনবুড়ির পূজা করে। পূজার পুরোহিত ঐ বালিকারা। বসনবুড়ির কোনো মূর্তি নেই। এর প্রতীক স্বরূপ আটিয়া/ বিচি কলার গাছকে পূজা করা হয়। বাড়ির পেছনে কোনো স্থান পরিষ্কার করে গোবর দিয়ে মুছে একটি মাঝারি আকৃতির বিচি কলার গাছ পুঁতে দিয়ে তার গোড়াতে মাটি দিয়ে বেদী তৈরি করতে হয়। পূজার ফুল হিসেবে জঙ্গলে ফুটে থাকা ভাটফুলসহ আকন্দ ফুল, কাঁটাগর ফুল, কাঠমল্লিকা ফুল, করবী ফুল, দই নাচুনী (ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ), ভূঁই ওকরা (ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ) ব্যবহৃত হয়। মূলত বসন্তকালে জঙ্গলে যেসব ফুল ফুটে সে সব ফুলই দেবীর পূজায় ব্যবহৃত হয়। গত কয়েকদিন আগে উপজেলার ভাবিচা গ্রামে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন কিশোরীকে ঝুড়িতে ভাঁটফুল নিয়ে বসনবুড়ির পূজা করছে।

কিশোরী পূরবী সরদার জানালো, তারা পথের ধারে, ঝোপঝাড়, পুকুরপাড় থেকে এই ভাঁটফুল ফুল সংগ্রহ করেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় তারা এইফুল তুলে পূজা করে। নিয়ামতপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যার প্রভাষক মোদাচ্ছের হক প্রতিবেদককে বলেন, পলাশ, শিমুলের মতো বিশালত্ব না থাকলেও ভাঁট ফুলের সৌরভ বসন্তজুড়েই রাঙিয়ে যায় বন। কবির মনকে করে তোলে আরও কাব্যময়। ভাঁট ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। সাধারণত চৈত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত প্রায় সারা দেশেই ভাঁটফুলের সুবাস ও সৌন্দর্য আমাদের মাতিয়ে রাখে। এটি গ্রামবাংলার অতিপরিচিত একটি বুনো ফুল।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris