সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

রাজশাহী রেলের জমি দখল করে কারখানা ও বাড়ি নির্মাণ

Paris
Update : সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী রেলওয়ের জমি দখলে নিয়ে কারখানা ও বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে দুই নেতার বিরুদ্ধে। এছাড়া নগরীর ১৯নং ওয়ার্ডের হাজরাপুকুর এলাকায় একটি পুকুর ভরাটের পর সেখানে কারখানা তৈরি করে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা ও দুই তলা বিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন দুই বিয়াই। যাদের বিরুদ্ধে রেলওয়ের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে তারা হলেন, ক্ষমতাসীন দল আ’লীগের ১৯নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম ও রেলওয়ের সাবেক কর্মচারী খাদেমুল ইসলাম। কামরুল ইসলাম ও খাদেমুল ইসলাম সম্পর্কে পরষ্পরের বেয়াই হন।
এদিকে রেলওয়ের জমি দখলের বিষয়টি জানতে পেরে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকরা হাজরাপুকুর এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে সাংবাদিক প্রতিনিধি দলটি ঘটনার সত্যতা পান। পরে রেলওয়ের জমি দখলের বিষয়টি সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। জানতে চাওয়ায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন বলেন, কেউ রেলওয়ের জমি দখল করলে রেলওয়ে দেখবে, এটা আমার দেখার বিষয় না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ১৯নং ওয়ার্ড আ’লীগের অন্যতম এক শীর্ষ নেতা কামরুল ইসলাম ও রেলওয়ের সাবেক কর্মচারী খাদেমুল ইসলামের বিরুদ্ধে জমি দখলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বছর দশেক আগে হাজারাপুকুর এলাকায় থাকা একটি পুকুর ভরাট করেন আ’লীগ নেতা কামরুল ইসলাম ও রেলওয়ের সাবেক কর্মচারী খাদেমুল ইসলাম। এরপর সেখানে একপাশে কারখানা স্থাপন করেন কামরুল ইসলাম। এই কারখানায় লোহার দরজা, জানালাসহ গৃহ নির্মাণের বিভিন্ন ধরণের সামগ্রী তৈরি করা হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি মডেল মসজিদের জন্য দরজা-জানালা সরবরাহ করা হয় এই কারখানা থেকে। তিনি বলেন, কামরুল ইসলাম এই কারখানায় ব্যবসা করে প্রতি মাসে বিপুল টাকা আয় করেন। রেলওয়ের জমি দখল করে ব্যবসা করলেও কেউই তার কিছুই করতে পারবে না বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন কামরুল ইসলাম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ১৯ নং ওয়ার্ড আ’লীগের ওই র্শীর্ষ নেতা আরো বলেন, কামরুল ইসলামের কারখানার আরেক পাশে রেলওয়ের জমিতে দুই তলা বিশিষ্ট পাকা বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন খাদেমুল ইসলাম। জানতে চাইলে নাম প্রকাশ নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ে শ্রমিকলীগের এক নেতা বলেন, আ’লীগ নেতা কামরুল ইসলাম ও রেলওয়ের সাবেক কর্মচারী খাদেমুল ইসলাম হাজরাপুকুর এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে সেখানে কারখানা ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালীর নিকটাত্নীয় হওয়ায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সেখানে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সাথে সম্পৃক্ত ও নেতার নিকটাত্নীয় হওয়ার সুবাদে তারা দাপট দেখান। রেলওয়ের জমি দখল করে কারখানা ও বাড়ি নির্মাণ করায় তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজনেরও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু ভয়ে তারা কিছু বলতে পারেন না। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ১৯নং ওয়ার্ড এলাকায় রেলওয়ের অনেক জমি রয়েছে। রেলওয়ের জমিতে থাকা বস্তিসহ আরো কয়েকটি জায়গা মাদক কারবারি ও মাদক সেবীরা নিরাপদ আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কারও কোনও মাথা ব্যথা নেই।
জানতে চাইলে ১৯নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ে জমি পেলে তা মেপে বের করে নেবে। এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। রেলওয়ের কতটুকু জায়গা দখল করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বলবো কেন? রেলওয়ে মেপে বের করে নেবে। জানতে চাইলে আরেক অভিযুক্ত রেলওয়ের সাবেক কর্মচারী খাদেমুল ইসলাম কল রিসিভ করেননি। ফলে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
বাউণ্ডারি ওয়াল নির্মাণ ও রেলওয়ের জমি দখল সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপ-সচিব) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম প্রকৌশল শাখার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (কার্য) বাবুল আক্তার জানান, আমরা পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছি। বাউণ্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। কোনো স্থাপনা কাজের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তা উচ্ছেদ করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দখলদারদের উচ্ছেদে আমরা দ্রুতই চিঠি ইস্যু করবো। তখন এস্টেট শাখা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেবে। জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার জানান, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তবে কেউই রেলওয়ের জমি দখল করতে পারবে না। তদন্তে রেলওয়ের জমি দখলের বিষয়টি প্রমাণিত হলে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris