সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হত্যার পর হাসানের লাশ ১০ টুকরো করে স্ত্রী-সন্তান, ফেলা হয় তিন স্থানে

Paris
Update : সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

এফএনএস
পারিবারিক বিরোধের জেরেই খুন করা হয়েছিল মো. হাসানকে (৬১)। হত্যায় অংশ নিয়েছিল নিজের দুই ছেলে ও স্ত্রী। তাকে হত্যার পর লাশ দশ টুকরো করা হয়। খণ্ডিত অংশগুলো তিন ব্যাগে ঢুকিয়ে পৃথক তিন স্থানে ফেলা হয়। তাকে খুন করা হয় চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন দক্ষিণ হালিশহর আকমল আলী সড়কের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা নামক ভবনের ছোট ছেলের বাসায়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন নিহতের স্ত্রী হোসনে আরা ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব তথ্য দিয়েছেন। পিবিআই কর্মকর্তারা বলছেন, হাসান দীর্ঘ ২৭ বছর পরিবার থেকে আলাদা ছিলেন। তিনি সম্প্রতি ফিরে এসে গ্রামের (বাঁশখালীর) ভিটেবাড়ি বিক্রির চেষ্টা করেন। এতে স্ত্রী-সন্তানরা বাধা দিলে তিনি তাদেরও অস্বীকার করেন। তার ভাইয়ের কাছে এসব সম্পত্তি বিক্রির জন্য কাগজপত্রও তৈরি করেন। এর জেরেই তাকে খুন করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে শুধু পরিবারের সদস্যরাই জড়িত নাকি বাইরের কেউ আছে তা খতিয়ে দেখছে পিবিআই। হাসানকে হত্যার পর লাশ ১০ টুকরো করা হয়। এর মধ্যে হাত-পাসহ আট টুকরো ফেলা হয় পতেঙ্গা থানাধীন ১২ নম্বর ঘাট এলাকায়। পেটসহ শরীরের মাঝখানের অংশ ফেলা হয় ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী রোডের খালপাড় এলাকার বিলে। তবে মাথার অংশটি কোথায় ফেলা হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে তদন্ত সংস্থা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খানবলেন, মো. হাসানের পরিচয় শনাক্তের পর শনিবার নিহতের স্ত্রী এবং বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। গত রোববার তাদের আদালতে সোপর্দ করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদনের পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। তিনি বলেন, আদালত শুনানি শেষে তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং পাঁচ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাদেরকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হত্যায় জড়িত থাকার কথা তারা স্বীকার করেছেন। জমি সংক্রান্ত তথা পারিবারিক বিরোধের জেরেই তাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় বলে তারা জানিয়েছেন। পিবিআই পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান আরও বলেন, লাশের ফিঙ্গার প্রিন্ট, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ক্লু-বিহীন এবং মাথাবিহীন লাশটির পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বাঁশখালী উপজেলার কাতারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী এলাকার সাহেব মিয়ার ছেলে। নিহতের স্ত্রীসহ দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে আছে। তবে তিনি খুন হন নগরীর ইপিজেড থানাধীন দক্ষিণ হালিশহর আকমল আলী সড়কের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা নামক ভবনের ছোট ছেলে শফিকুর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীরের বাসায়। ঘটনার পর থেকে শফিকুর রহমান এবং তার স্ত্রী পলাতক রয়েছে। পিবিআইয়ের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে নগরীর পতেঙ্গা থানাধীন ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় লাগেজভর্তি লাশের আটটি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। উদ্ধার হওয়া খণ্ডিত অংশগুলো কার তা চেনা কিংবা জানার উপায় ছিল না। কেননা লাশের মাথার অংশটি ছিল না। পরে প্রযুক্তিসহ নানান চেষ্টায় ক্লু-বিহীন এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris