শুক্রবার

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি প্রাথমিকের ‘যোগ্যতা’ না থাকা শিক্ষকদের ডিগ্রি-প্রশিক্ষণের সময় বাড়ল

Paris
Update : মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

এফএনএস

জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘যোগ্যতা’ না থাকা শিক্ষকদের ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণের সময় ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে বিধিমালার সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত সোমবার তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক (চাকরি শর্তাদি নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ২-এর দফা (চ) সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। সেই সময় যখন সরকারিকরণের প্রক্রিয়া করা হয় তখন যে বিধিমালা আমরা অনুসরণ করেছিলাম দেখা গেছে, সেই অনুসারে অনেকেরই কাক্সিক্ষত যোগ্যতা ছিল না। তখন ২০১৭ সাল পর্যন্ত একটা শর্ত দেওয়া হয়েছিল যে যাদের কয়েকটি ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ নেই, যারা এটি নিতে পারবে, তাদের আত্মীয়করণ করা হবে। তখন দেখা গেছে, বিভিন্ন কারণে অনেকেই এটা করতে পারেননি। এরইমধ্যে করোনা মহামারি চলে গেল। তাই আরেকটু সময় বাড়াতে গত সোমবার এটি তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, এখন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের সুযোগ দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তারা অর্জন (ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ) করতে পারবেন। সার্টিফিকেট অব অ্যাডুকেশন বা সমমান পরীক্ষার সনদ অর্জনের সুযোগ তাদের দেওয়া হয়েছে। সরকারি শিক্ষক যারা হন তাদের এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

প্রতিষ্ঠার চার দশক পর নেপ আইন অনুমোদন: এদিকে প্রতিষ্ঠার প্রায় চার দশক পর ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) আইন, ২০২৩’ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রাথমিকের শিক্ষকদের নেপে প্রশিক্ষক দেওয়া হয় জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ১৯৬১ সালের একটি আইনের আওতায় একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে নেপ পরিচালতি হতো। এখন একটি পূর্ণাঙ্গ আইনের মাধ্যমে পরিচালনা করার জন্য আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হয়। মন্ত্রিসভা সেটি নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এক বিবৃতিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, এ আইন পাসের ফলে একটি আধুনিক, যুযোপযোগী প্রশিক্ষণ একাডেমি হিসেবে নেপের বিকশিত হওয়ার দুয়ার উন্মুক্ত হবে। এ প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা পদায়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য চাহিদাভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও কারিকুলাম উন্নয়নেও এ প্রতিষ্ঠান কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে বিভিন্ন গবেষণা পরিচালনা, গবেষণা জার্নাল প্রকাশের পাশাপাশি নেপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মেলন ও কর্মশালার আয়োজন করতে পারবে। এ আইনের আওতায় নেপের আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে নেপ আরও ছড়িয়ে দেওয়ার পথ উন্মুক্ত হবে বলে জানান প্রাথমিক সচিব।

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ: নির্দিষ্ট হারে ভাতা দিয়ে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন করার সুযোগ রেখে একটি নীতিমালার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ (ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ) নীতিমালা, ২০২৩’ এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, নীতিমালার আলোকে এখন সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, মন্ত্রণালয়ে, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের ইন্টার্ন করার সুযোগ দেওয়া হবে। সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা ডিপার্টমেন্ট ঠিক করবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের একটা ভাতাও দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, তারা কী কাজ করবেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে বসবে। তিন থেকে ছয় মাস মেয়াদে তারা কাজ করবেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেওয়ার জন্য নীতিমালা করা হলেও প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও এই সুযোগ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যে, এই নীতিমালাটা শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, সব বেসরকারি এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে যেন এই সুযোগটা থাকে। সে অনুযায়ী নীতিমালাটি পুনর্গঠন করা হবে। নীতিমালার জন্য কী যোগ্যতা লাগবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, একেকটা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা একেক রকম, সে অনুযায়ী সুযোগ দেওয়া হবে। এটা ওই প্রতিষ্ঠান ঠিক করবে যে, তাদের কী ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থী দরকার।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris