বৃহস্পতিবার

৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন সোহেল পবায় ছাত্রলীগ নের্তৃবৃন্দের সাথে চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদের মতবিনিময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত তানোরে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন ময়না মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর লাল গামছা দেখে থামল ট্রেন, অল্পের জন্য রক্ষা রাজশাহী নগরীতে প্রস্তাবিত কবরস্থান ও ঈদগাহ নির্মাণে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন প্রথম ধাপে ১৪১ উপজেলায় ভোট গ্রহণ আজ প্রকল্প কতটুকু জনকল্যাণে লাগবে তা বিবেচনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর চৌবাড়িয়া পশুহাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

সিন্ডিকেট আছে, ভাঙব- এ ধরনের কথা বলিনি : টিপু

Paris
Update : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

এফএনএস
সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট ভাঙব- এ ধরনের কথা বলেননি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর একটি হোটেলে সফররত ‘ইউএস- বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’ এর উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সিন্ডিকেট নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরবেন- এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী? জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সেটাতো প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি তো কিছু বলিনি। এ ব্যাপারে আমি কী বলবো, উনি কী মিন করে বলেছেন সেটা আমি কী করে বলবো। সেসময় কী সিচুয়েশনে বলেছেন। সিন্ডিকেটের বিষয়ে হাত দেওয়া যাবে না এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এ কথা বলেছেন, আপনি কি এটাকে ডিফেন্ড করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ঠিক জানি না কী অবস্থানে কথাটা বলেছেন। সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট ভাঙবো এ ধরনের কথা তো আমি বলিনি। বলেছি যে, আমাদের যখন জিসিনপত্রের দাম বাড়ে তখন আমরা চেষ্টা করি যে, ন্যায্য দামে বিক্রি বিক্রি হওয়া উচিত। সেটা আমাদের ভোক্তা অধিকার দিয়ে চেষ্টা করি। কখনো কখনো আমাদের লোকবল কম হওয়ার কারণে কিছুটা শ্লথ হয়। আমি এ কথাটাই বলেছি। আমি জানি না কালকে প্রশ্ন কী ছিল, প্রধানমন্ত্রী কী মিন করে বলেছেন। এই মিটিংয়ের পরে আমি তো প্রায় দেড় ঘণ্টা তার সঙ্গেই ছিলাম। তখন আমার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। আপনি বলেছিলেন, যখন ক্রাইসিস শুরু হয় তখন ব্যবসায়ীরা সুবিধা নিলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আরও বেশি ক্রাইসিস তৈরি হতে পারে, সে কারণে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদেও আপনি এটি বলেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যে কথাটা বলেছিলাম, জেল-জুলুম এ ধরনের ব্যবস্থা নিলে পরে…। আমি সেটেল করছি আলোচনার মাধ্যমে, যেন এটা লজিক্যাল হয়। হঠাৎ করে জেল-জুলুম দিলে পরে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। আমি এটাই বলেছিলাম। তবে আলোচনা করে আমরা ব্যবস্থা নিতে চাই। তিনি বলেন, ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার পর আমি বলেছিলাম প্রয়োজনে সরবরাহ ঠিক রাখতে ডিম আমদানি করা হবে। সে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি সবসময়। কোনোভাবেই তো বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না, আজকে একটা বাড়লে কালকে আরেকটার দাম বাড়ছে। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। শ্রীলংকার মূল্যস্ফীতি অনেকটা এগিয়েছে, আমরা সে তুলনায় পিছিয়ে আছি- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শ্রীলংকা আর আমাদের অবস্থাটা ভিন্ন। শ্রীলংকার বড় যে আয় সেটা হলো পর্যটন খাত। সেটা তারা রিভাইভ করেছে বলে তারা উন্নতি করছে। পাশাপাশি ছোট দেশ, সেজন্য তারা উতরে গেছে। আমাদের তো বিশাল বড় একটা দেশ। আমাদের চেষ্টা চলছে, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাদের একটু কৃচ্ছ্র সাধন করতে হবে। আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে। ডিমের দাম কী হওয়া উচিত সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করবে না বলে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার পরে আমি বলেছিলাম প্রয়োজনে সরবরাহ ঠিক রাখতে ডিম আমদানি করা হবে। সে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি সব সময়। ডিমের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সেদিনও বলেছি, ডিমের কী দাম হওয়া উচিত সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করবে না। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্তণালয় দাম ঠিক করে দিয়েছে এরকম হওয়া উচিত। আমরা চেষ্টা করছি তারা যে দামটা নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটা যেন বাজারে থাকে সে রকম চেষ্টা করছি। সার্বিক মূল্যস্ফীতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্লোবাল অবস্থাটা দেখেন, আপনারা যখন দেখেন ইংল্যান্ডের দোকানেও যখন তিনটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না সে বিষয়ে রেস্টিক করে দেয়। জার্মানেও দোকানগুলোতে তেলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়। আমাদের এখানেও নিশ্চয়ই প্রভাব পড়েছে। মুহুর্তের মধ্যে সমাধান হবে এমনতো নয়, তবে আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে। গ্লোবাল এই দুরবস্থার মধ্যেও যেন আমরা ঠিক থাকতে পারি। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের (ইউএস) ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য তারা খুবই আগ্রহী। তাদের বেশ কিছু নতুন নতুন কোম্পানিও আসবে বলে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসারে শুল্ক বাধা বা কোনো কিছু আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আজ (গতকাল বুধবার) তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, তারপরও তারা কিছু প্রশ্ন তুলেছে। যেগুলো তারা সমাধান করতে চায়। যেমন ট্যাক্সের বিষয়। ট্যাক্সের বিষয়ে বলেছি, নতুন ট্যারিফ ইয়ে হয়েছে, ইমপ্রুভ করবে। তাছাড়া এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তারা খুবই আগ্রহী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য। বেশ কিছু নতুন নতুন কোম্পানিও আসবে। তারা বলছে যে বাংলাদেশের জলবায়ু…। টিপু মুনশি বলেন, গতকাল (গত মঙ্গলবার) প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের যে ১০০টি ইকোনমিক জোন রয়েছে, সেখানেও যেন তারা আসে। তাহলে আমরা সব রকমের সুবিধা দিতে পারব। আমরা ১৫ বছরের ট্যাক্স হলিডে ডিক্লেয়ার করেছি। আরও অনেক সুবিধা আছে। তারা খুব আগ্রহী। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে। আজকে (গতকাল বুধবার) আমার সঙ্গে কথা বলল। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবে। তিনি বলেন, সব দিক থেকে দেখা যাচ্ছে, তারা গত এক বছরের মধ্যে দুবার এলো। সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে তারা আগ্রহী। আগামী নির্বাচনে যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা হয়, সে বিষয়ে তারা সতর্ক কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে তারা কোনো প্রশ্ন তোলেনি। এটি পরের বিষয়। এর আগে অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে বৈশ্বিক যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারত্বের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে চ্যালেঞ্জগুলো দেখা দিয়েছে, তা মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি খাত উভয়কে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে মার্কিন অংশীদারত্ব, বিশেষ করে মার্কিন বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বাংলাদেশের ক্রমাগত উন্নতির জন্য পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি। মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর সিংহভাগ বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। টিপু মুনশি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে। ফলে কিছু উন্নত অর্থনীতির দেশে আমাদের শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার ব্যাহত হবে। কিন্তু জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এই যাত্রায় মার্কিন সরকার ও মার্কিন বেসরকারি সংস্থাগুলো আমাদের পাশে থাকবে। এ ছাড়া, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আমাদের সক্ষমতা এবং অনুকূল পরিবেশের প্রতি আরও আস্থাশীল হবে। এই ধরনের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পারস্পরিক সুবিধার জন্য সহযোগিতার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও উল্লেখ করেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিচক্ষণ সরকারি নীতি এবং উন্মুক্ত বাজারের নেতৃত্বে বেসরকারি, রপ্তানিমুখী উৎপাদন, উচ্চ উৎপাদনশীল কৃষি এবং একটি ক্রমবর্ধমান পরিষেবা খাত আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পৃথিবীর অনেক দেশের জন্য উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে এবং স্বীকৃতি পেয়েছে। বিগত কয়েক দশক ধরে প্রায় ৭ শতাংশ গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রো-রেল এবং পায়রা বন্দর, কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর এবং পাওয়ার স্টেশন, কর্ণফুলী টানেলসহ অন্যান্য মেগা-প্রকল্প এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র যেগুলো সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক উদ্যোগের অংশ, তা রপ্তানি ও আমদানির দৃশ্যপটকে আমূল পরিবর্তন করছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। সভায় আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমদ এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি অতুল কেসাব, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris