সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

ব্রিকসের সদস্য পেতে বাংলাদেশ চেষ্টা-তদবির করেনি : প্রধানমন্ত্রী

Paris
Update : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

এফএনএস
বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য চেষ্টা-তদবির করেনি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাম্প্রতিক দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হ্যাঁ নিলে আমরা খুব খুশি। কিন্তু ব্রিকসে প্রথমবারেই সদস্য পদ পাব সে ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় ছিল না। সেই ধরনের কোনো চেষ্টাও আমরা করিনি বা কাউকে বলিও নাই। আমরা কিন্তু কাউকে বলিনি যে আমাদের এখনই সদস্য করেন। শেখ হাসিনা বলেন, চাইলে পাবো না সে অবস্থাটা না। কিন্তু প্রত্যেক কাজেরই একটা নিয়ম থাকে আমরা সে নিয়ম মেনে চলি। নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর বিষয়ে আমাদের আগ্রহ টা বেশি ছিল সেখানে আমরা যুক্ত হতে চেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রেসিডেন্ট সাহেব আমাকে তখনই বলেছেন যে ব্রিকসের সদস্য এটা ধাপে ধাপে নেবেন; ভৌগোলিক অবস্থার বিবেচনা করে নেবেন। পর্যায়ক্রমিক ভাবে তারা সদস্য সংখ্যা বাড়াবেন। তিনি বলেন, প্রথম থেকে আমরা জানি তারা প্রথমে কয়েকটা দেশ নেবেন পরে ধাপে ধাপে সদস্য সংখ্যা বাড়াবে। বাংলাদেশের ব্রিকসের সদস্য হওয়া, না হওয়া নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অপজিশন থেকে খুব হতাশ যে আমরা নাকি চেয়ে পাইনি। বাংলাদেশ কিছু চেয়ে পাবে না এটা কিন্তু ঠিক না। অন্তত আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের যে মর্যাদা আমরা তুলে ধরেছি সেখানে আমাদের সেই সুযোগটা আছে। … তারা বলতে পারে কারণ বিএনপি আমলে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের কোনো অবস্থানে ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। বিশেষ করে, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমাদের বাণিজ্যিক নানা পথ প্রশস্ত হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার কাছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ। সংবাদ সম্মেলনে আগামী নির্বাচনকে ‘অংশগ্রহণমূলক’ করতে কি উদ্যোগ নেবেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অংশগ্রহণটা কার অংশগ্রহণ? আমার কাছে অংশগ্রহণ হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ। তিনি বলেন, জনগণ ভোট দেবে; সেই ভোটে যারা নির্বাচিত হবে, জয়ী হবে তারা সরকারে আসবে। এখন অংশগ্রহণ বলতে কাদের অংশগ্রহণ? ভোট চোরদের? ভোট ডাকাতদের? দুর্নীতিবাজ, মানিলন্ডারিং, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, জাতির পিতার হত্যাকারী, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী তাদের অংশগ্রহণ? এটা কি জনগণ চায়? শেখ হাসিনা বলেন, তারা অংশগ্রহণ করলেই বৈধ হবে আর অন্য কেউ করলে হবে না এটা তো কোন কথা হতে পারে না। কারণ তাদের প্রতি মানুষের ঘৃণা; এটা মাথায় রাখতে হবে। নইলে ২০০৮ সালে বিএনপি মাত্র ৩০ টা সিট পেয়েছিল। তারপর থেকে তো তারা তো আর ইলেকশন অংশগ্রহণ করে না তারা শুধু বাণিজ্য করে, নমিনেশন বেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতগুলো উপনির্বাচন হলো, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলো, জনগণ কি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেনি? জনগণ তো অংশগ্রহণ করেছে, সেটাই তো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলো। শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটাই কথা, আমি জনগণের জন্য কাজ করি, জনগণের জন্য আছি। জনগণের কল্যাণ করাটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, নইলে মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে; একবার চিন্তা করে দেখুন, বাংলাদেশ ১৫ বছর আগে কি অবস্থা ছিল? কোথায় ছিল বাংলাদেশ আর এখন কোথায় আসছে? এত দ্রুত এ পরিবর্তন, এটা কি সহজ কাজ? এটা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই পেরেছে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, কেউ যদি পরশ্রীকাতরতায় ভোগে, আমার তো কিছু করার নাই। আর কে কি বলল না বলল সেটা নিয়ে আমি কমই চিন্তা করি। আমার মাথায় আমার বাংলাদেশ আছে, বাংলাদেশের মানুষ আছে, মানুষের কল্যাণে কি করব ওটাই চিন্তা করি। বাপ-মা ভাই-বোন সব হারিয়েছি। যতক্ষণ আছি দেশের জন্য কাজ করে যাব। আত্মবিশ্বাস থাকলে ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকার কোনো বিবৃতিতে প্রভাবিত হবে না। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা আইন অনুযায়ী চলবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বিবৃতি দিয়েছেন তাদের আহ্বান জানাই, বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ পাঠান, আইনজীবী পাঠান। দলিল-দস্তাবেজ, কাজগপত্র ঘেঁটে দেখুন অন্যায় আছে কি না। তিনি বলেন, কেউ যদি ট্যাক্স (কর) না দেয় আর যদি শ্রমিকের অর্থ আত্মসাৎ করে, শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যদি মামলা করা হয়। আমাদের কী সেই হাত আছে যে মামলা বন্ধ করে দেব? প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী। নোবেলজয়ী বলে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীতে এমন বহু নোবেল বিজয়ী আছেন, পরবর্তী সময়ে তাদের কাজের জন্য কারাগারে আছেন (যেতে হয়েছে)। আদালত স্বাধীনভাবে চলবে। ভয় পেলে চলবে না। শ্রমিকদের পাওনা তাদের দিতে হবে। সাংবাদিক সাইফুল আলম প্রশ্ন করেন, দেশে নিত্যপণ্য নিয়ে একটা মৌসুমি ব্যবসা হয়। মজুদ আছে সরবরাহ আছে তবুও জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। যেমন- পেঁয়াজ, ডাব, কাঁচামরিচ। এমন অনেক পণ্য সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করে সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নিয়ে যাওয়া হয়। মন্ত্রীরাও বলেন সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যায় না। এই মৌসুমি ব্যবসায়ীদের নিরস্ত করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে চান, সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না, এমন কথা কে বলেছেন। জবাবে জানানো হয়, বাণিজ্যমন্ত্রী ওই কথা বলেছিলেন। শেখ হাসিনা তখন বলেন, ঠিক আছে আমি বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটা শ্রেণি আছে, তারা যখন আর্টিফিসিয়ালি দাম বাড়ায়, তখন আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নেই। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নেই। তারা বাধ্য দাম কমাতে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট থাকলে ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা হতে পারে না। কে কত বড় শক্তিশালী সিন্ডিকেট, আমি জানি না। কিন্তু আমি দেখব যে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে একটা নিয়ম আছে যুগ যুগ ধরে। আমরা ছোটবেলায় দেখেছি শীতকালে যখন বাজারে শিম ওঠে কে কত বেশি দামে কিনতে পারে এটার একটা প্রতিযোগিতা চলত। দুইদিন পর দাম কমে যেত। আবার বর্ষাকালে কাঁচামরিচের দাম বাড়ে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাঁচামরিচ শুকনা করে রেখে দেওয়া যায়। পেঁয়াজ শুকিয়ে রেখে দেওয়া যায়। যেটার উৎপাদন বেশি হবে সেটা শুকিয়ে রেখে দিলে ব্যবহার করা যাবে। জীবনে কেউ কখনো ভেবেছে যে বর্ষাকালে শিম, লাউ, কপি গাজর, টমেটো খাবে। ভবিষ্যতে এগুলো রাখা, প্রসেস করা, চিলিং সিস্টেমে সংরক্ষণ করার বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে নেতিবাচক আলোচনায় জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেতিবাচক কথায় কান দিয়ে নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য যারা আজকে বলছে তারাই কিন্তু আবার পেনশন এ যোগ হবে। এ নিয়ে নেতিবাচক কথা শুনে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়। শেখ হাসিনা বলেন, এ টাকা নিয়ে ইলেকশন ফান্ড করতে হবে ওই রকম দৈন্যতায় পড়েনি আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ হচ্ছে নিজের খেয়ে নৌকা। জনগণ নিজের খেয়েই কিন্তু নৌকায় ভোট দেয় এবং আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বজনীন পেনশনটা করা হয়েছে সরকারি অফিসাররা পেনশন পায়, সাধারণ যারা তাদের তো কোনো এ রকম পেনশনের ব্যবস্থা নেই। বৃদ্ধ বয়সে তাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা। তিনি বলেন, এখানে এখন যে টাকাটা তারা রাখবে, এ টাকাটাই যখন কিছু সময় পরে ম্যাচিউর হবে, এরপর থেকে সে টাকাটা তারা তুলতে পারবে। যেটা সে সময় তার চিকিৎসা বা জীবিকার জন্য কাজে লাগবে। এ টাকা অন্যদিকে যাওয়ার তো কোনো উপায় নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরো টাকাটা সরকারি কোষাগারে যাচ্ছে এবং পেনশন স্কিমেই টাকাটা থেকে যাবে। এটা যে কেউ তুলে নিতে পারবে না, ব্যবহার করতে পারবে না। কেউ এটাকে নিয়ে কোনো রকম নয় ছয়ও করতে পারবে না। সেই গ্যারান্টি দিয়েই তো এ স্কিমটা করা।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris