সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

Paris
Update : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে। সাক্ষর নিয়েও চাল না দেয়া, চাল নিতে গেলে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলার আলাতুলী ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার মো. আব্দুল লতিবের বিরুদ্ধে। চাল না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কার্ডধারী সুবিধাবঞ্চিতরা।গত সোমবার (২৮ আগষ্ট) তারা এই অভিযোগ দেন। এছাড়াও অভিযোগের অনুলিপি দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর। এদিকে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তকাজ শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ।
অভিযোগের অনুলিপি, সুবিধাবঞ্চিত কার্ডধারী ও খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসে জুলাই ও আগষ্ট মাসের চাল উত্তোলন করেন ডিলার আব্দুল লতিব। এরপর চাল বিতরণ করা হলেও অনেক সুবিধাভোগী এক মাসের চাল পাননি। এরমধ্যে অনেকেই আবার কোন চালই পাননি। অথচ তাদের সাক্ষর ও টিপসই নেয়া হয়েছে। এমনকি কার্ডে চাল দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ রয়েছে। সুবিধাভোগী এমদাদুল হকের স্ত্রী সমিজা বেগম জানান, দুই মাসের চাল আনতে গিয়ে দেয়া হয়েছে এক মাসের। অথচ টিপসই নেয়া হয়েছে দুই মাসের। পরে এনিয়ে কথা বলতে গেলে ডিলার জানায়, চাল দুই মাসেরই দেয়া হয়েছে। গত প্রায় ৭ বছর ধরে চাল পায়। কোনদিন এমন প্রতারণার শিকার হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই অভিযোগ দিয়েছি।
সুবিধাভোগী আব্দুর রশীদ বলেন, ছেলেকে চাল আনতে পাঠায়। ছেলে এক বস্তায় ৩০ কেজি চাল নিয়ে বাসায় ফিরে আসে। অন্যদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, এক মাস নয়, চাল দেয়া হয়েছে দুই মাসের। পরে নিজে সেখানে বাকি এক বস্তা চাল নিতে যায়। আমার টিপসই নেয় তারা। কিন্তু চাল চাইলে বলে, চাল নাকি দেয়া হয়ে গেছে। এরপর আমাকে ফেরত পাঠায়। আলাতুলী ইউনিয়নের হুমায়ন কবীরের স্ত্রী নূর নাহার বেগম জানান, প্রত্যেক মাসে ১৫ টাকা কেজি দরে এক বস্তায় ৩০ কেজি করে চাল পায়। চলতি মাসে দুই মাসের চাল দেয়ার কথা। এমনকি অনেকেই পেয়েছেন। কিন্তু আমাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এক মাসেরও চাল দেয়া হয়নি। আশা করি, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে কোনরকম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন ডিলার আব্দুল লতিব। মুঠোফোনে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দেয়া হয়েছে, তা সত্য নয় ও ভিত্তিহীন। চাল দিতে দিতে ১৬ জনকে দেয়া বাকি ছিল। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২২ তারিখে কয়েকজনকে চাল দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে গত মঙ্গলবারও ২-১ জন কার্ডধারী চাল নিয়ে গেছে এবং বাকিদের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। আলাতুলি ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোসা. মটরি বেগম জানান, নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার কার্ডধারী হতদরিদ্ররা অনেকেই আশপাশের ওয়ার্ড এমনকি পাশের উপজেলায় বসবাস করছে। তাদেরকে ডিলার সঠিকভাবে চাল বিতরণ না করায় সুবিধাভোগিরা অভিযোগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে, ডিলারের অনিয়ম রয়েছে বলেও জানান তিনি। এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রওশন আলীর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৩০ আগষ্ট) সুবিধাভোগী ও অভিযোগকারীদের শুনানী করে বক্তব্য নেয়া নেওয়া হয়েছে। অভিযোগটির সত্যতা পাওয়া গেলে ডিলারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris