সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাম বিভ্রাটে নায়িকা চমক

Paris
Update : সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩

এফএনএস
চিত্রনায়িকা চমক তারা নাম বিভ্রাটে পড়েছেন। অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমকের অপেশাদারিত্ব; উশৃঙ্খলা ও শুটিং ইউনিটের পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ ডিরেক্টর গিল্ড তাকে আগামী তিন মাসের জন্য মিডিয়ায় কোনো কাজে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তের ফলে অনেকেই মনে করছেন চমক তারার নামে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তাই অনেক পরিচালক, অভিনয় শিল্পী ও শুভানুধ্যায়ীরা চমক তারাকে ফোন করে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। এতে চিত্রনায়িকা চমক তারা বিব্রত বোধ করছেন। পরিচালক আবিদ হাসানের অভিযোগের ভিত্তিতে রুকাইয়া জাহান চমকে ডিরেক্টর গিল্ড আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী তিন মাসের জন্য মিডিয়া থেকে বহিষ্কার করায় রুকাইয়া জাহান চমক মনগড়া গল্প বানিয়ে সিনিয়র শিল্পীদের মানহানি করছেন বলে জানিয়েছেন ডিরেক্টর গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সাগর। অথচ সংশ্লিষ্টরা বিষয় সম্পর্কে না জেনেই চমকতারাকে নানা প্রশ্ন করছেন। চিত্র নায়িকা চমক তারা বলেন, আমার পেশাদারিত্ব, সিনিয়রদের প্রতি আমার সম্মান সম্পর্কে সবাই অবগত আছেন। শুধু নামের মিলের কারণে এ ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে। আমি কেন অন্যের দায় বহন করবো? আমার সম্পর্কে ইন্ডাস্ট্রির সবার ভালো ধারনা রয়েছে। নামের সাথে মিল থাকলেই একজন আরেকজনের দায় বহন করতে পারবে না। এতে আমি বিব্রত এবং মনকষ্ট ভোগ করছি। চিত্রনায়িকা চমক তারা দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় ধরে ছোট পর্দা বড় পর্দা ও মঞ্চে সর্বত্রই রয়েছেন। অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক বলেন, গত ৪ আগস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুটিং স্পটে যে ঝামেলা তৈরি হয়েছিল তার জন্য অভিনয় শিল্পী সংঘের রায়ে আমি আর্থিক জরিমানা ও ক্ষমা চেয়েছি। সে ঘটনার সমাধান প্রায় হয়ে গেছে। কিন্তু হঠাৎই কারো মতামত না নিয়ে ডিরেক্টর গিল্ড ব্যক্তিগত আক্রোশে সম্মেলন করে। সেখানে আমাকে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় যা অনুচিত। কারণ আমি ডিরেক্টর গিল্ডের সদস্য নই, আমি অভিনয় শিল্পী সংঘের সদস্য। তাই ডিরেক্টর গিল্ড আমাকে নিষিদ্ধ করতে পারেনা। মঞ্চে অভিনয়ের এক যুগেরও বেশি সময় পার করলেন অভিনেত্রী চমক তারা। পদাতিক নাট্য সংসদ ( টিএসসি) তে তার মঞ্চ জীবন কঠিন সময় শুরু। সেখানেই আছেন এখনো। তবে থিয়েটারে প্রথম পথ চলা ” ঢাকা ড্রামা”র পথ নাটক দিয়ে। এরই মাঝে কেটে গেছে ১৪ টি বছর। চমকতারা বলেন, দেখতে দেখতে ১৪ বছর পেরিয়ে গেল। এ সময়ে অজানাকে জেনেছি। একটু একটু করে। কত স্মৃতির জমা হয়েছে। কত কিছু শিখেছি। একটু একটু করে বড় হয়েছি। বেড়েছে মঞ্চের অভিজ্ঞতা। থিয়েটারকর্মীর হিসেবে পদাতিক নাট্য সংসদ( টিএসসি) এ-র সদস্য হিসেবে ভারতের ত্রিপুরা ও কোলকাতায় সফরে মঞ্চকর্মী হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। জানা যায়, ২০১০ সালে ‘জনমাংক’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে মঞ্চে কাজ শুরু করেন চমক তারা। সে নাটকের জন্য পুরস্কৃতও হয়েছিলেন তিনি। এরপর কালরাত্রি, বেদের মেয়ে, পাকে বিপাকে প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করেন তিনি। অভিনয়ের বিভিন্ন সেক্টরে সফলতা জন্য বাংলাদেশ বিনোদন সাংবাদিক সমিতি ( বাবিসাস), একাত্তর সাংস্কৃতিক সংসদসহ পেয়েছেন বেশ কয়েকটি সন্মানা। চমকতারা জানান, ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর ‘জনমাংক’ মঞ্চ প্রদর্শনী শুরু হয়। এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় প্রদর্শিত হয়েছে দেশে- বিদেশে। এরপর শুরু করি ‘কালরাত্রি’। এ নাটকটি এখনো চলছে। সামনে নতুন নাটক ‘পাকে বিপাকে’ মঞ্চস্থ হবে। স্মৃতিচারণ করে চমকতারা বলেন, একটা সময় ছিল স্কুলের পরীক্ষা দিয়েই চলে এসেছি রিহার্সেলে। সময় বাঁচাতে বাসায় যাইনি। এখনো মঞ্চের প্রতি আমার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অটুট। উল্লেখ্য, চমক তারা নিয়মিত বিটিভি সহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেএকক নাটকের পাশাপাশি ধারাবাহিক নাটকেও অভিনয় করছেন। পাশাপাশি, বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী তিনি। বড় পর্দায় একক নায়িকা হিসেবে তার মুক্তি প্রাপ্ত প্রথম ছবি পরিচালক মুকুল নেত্রবাদীর পরিচালিত “মা বাবা সন্তান”। আরো যে সব ছবি মুক্তি পেয়েছে তার মধ্যে “মাস্তান পুলিশ”, ভালোবাসা ১৬ আনা, “ধূসর কুয়াশা”, “গার্মেন্টস শ্রমিক জিন্দাবাদ”, মাতাল”, পাগলের মতো ভালোবাসি “উল্লেখ যোগ্য। এছাড়াও নিজের ইউটিউব চ্যানেল” চমকতারা “র জন্যও নির্মাণ করছেন বিভিন্ন কনটেন্ট। মেয়েদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় বানিয়েছেন সচেতনতামূলক শর্ট ফিল্ম। দীর্ঘ বছর পরে এবার ‘নাও’ সিনেমায় আটপৌরে শাড়িতে ভিন্ন রুপে আবারো একক নায়িকা হিসেবে দেখা যাবে চমকতারাকে। সিনেমাটি পরিচালনা করছেন রুবেল মাহমুদ এবং সিনেমাটির কাহিনি লিখেছেন ময়না আজমেরি। সম্প্রতি সিনেমাটি আন কাট সেন্সর পেয়ে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সিনেমাটিতে চমকতারার বিপরীতে অভিনয় করছেন নবাগত চিত্রনায়ক এম এ জে দিগন্ত। এছাড়াও আরো অভিনয় করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা প্রয়াত মাসুম আজিজ, রেহানা জলি সহ আরও অনেকেই। মাসুম আজিজ এবং রেহানা জলির মতো গুণী অভিনেতা-অভিনেত্রীর সংস্পর্শে এসে তাদের সান্নিধ্য, স্নেহ আর ভালোবাসা পেয়ে বেশ অভিভূত ও বিমোহিত ছিলেন চমকতারা। মাসুম আজিজ এবং রেহানা জলির সাথে এটাই প্রথম কাজ নয় চমকতারার। এর আগে অনেক নাটকে একসাথে কাজ করেছেন তারা। সিনেমাতেও কাজ করা হয়েছে যে কারণে তাদের মাঝে পূর্ব থেকেই বোঝাপড়াতে বেশ ভালো। সব মিলিয়ে “নাও” সিনেমায় কাজ করে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন তিনি। অনেকের ধারণা মিডিয়ার রঙ্গীন পা দেওয়ার পরে কয়জনই বা পড়ালেখা চালিয়ে যান! বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্রের মতো বড় পর্দায় এত বছর ব্যাস্ততার মাঝে সময় পার করলেও নিয়মিত পড়ালেখা চালিয়ে গিয়েছেন সুনয়না, শ্যামলবর্নী সুদর্শনী এই অভিনেত্রী। ইতোমধ্যেই বিবিএ শেষ করেছেন। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ভর্তি হচ্ছেন এমবিএ করার জন্য। সবশেষে চমকতারা বলেন, একজন মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তি তার ইচ্ছে শক্তি। আমি পারবো, আমাকে পারতেই হবে। যেকোনো পরিস্থিতি ই হোক মোকাবিলা করার সাহস থাকতে হবে। মহান সৃষ্টিকর্তা যদি সহায় হোন সকল প্রতিকুলতা কাটিয়ে একজন মানুষ ঠিকই তার সফলতার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম।’


আরোও অন্যান্য খবর
Paris