স্টাফ রিপোর্টার
মানুষের দোরগোড়ায় নাগরিকসেবা পৌঁছাতে এবং নগরবাসির কাঙ্খিত তথ্যসেবা নিশ্চিত করতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে রাসিক ভবনের ৬১২নং কক্ষে স্থাপিত ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল ও রাসিক কল সেন্টারে’র আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়েছে। এর মাধ্যমে নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা, হোল্ডিং ট্যাক্সসহ যাবতীয় সেবা নিতে পারবেন নাগরিকরা। তাৎক্ষণিকভাবে এই সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই চালু করা হয়েছে ১৬১০৫ নাম্বারের হট লাইন নাম্বারটি। কিন্তু, নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বিগত দুইদিন যাবত সেই সেবার কোন ছোয়া লাগেনি নাগরিক দুর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে। স্থানীয়দের অধিকাংশই সেই জরুরী সেবা ১৬১০৫ সম্পর্কে তেমন ভাবে অবগত নন বলে জানান অনেকেই। যারা জানেন তারা ফোন না করেও দিয়েছেন দায়িত্বহীনতার পরিচয়। উপরন্তু, নির্বাচন কেন্দ্রিক কাউন্সিলর প্রার্থীদের সার্বক্ষণিক দৌড়ঝাপ ঐ রাস্তা দিয়ে চললেও; তারাও কেনোযানি নির্বাক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন ওয়ার্ডবাসির দুর্ভোগ হ্রাসে। বিষয়টি নিয়ে ঐ এলাকায় আলোচনা-সমালোচনাও কম হচ্ছেনা গত কয়েকদিন ধরে।
নগরীর ২১নং ওয়ার্ড অন্তর্গত সাগরপাড়া এলাকায় (কাউন্সিলরের নিজস্ব বাসভবন ও কেমিকো ফার্মাসিটিক্যাল লিঃ এর মধ্যস্থানে) টিকাপাড়ামুখী প্রধান সড়কের পাশে বিগত দুইদিন ধরে একটি কুকুর মরে পড়ে আছে। প্রবাহমান বাতাস দূষিত করে দুগর্ন্ধের তীব্রতা বাড়ছে মুহূর্তে মুহূর্তে। চলাচলাকারি ও স্থানীয়দের ভোগান্তি বৃদ্ধি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাস্তা দিয়ে স্বাভাবিক চলাচলেও ঘটছে কিছুটা বিঘ্নতা। কিন্তু, এতোকিছুর পরেও গত ২৪ মে রাত্রি আনুমানিক নয়টা নাগাদ ইজিবাইকের ধাক্কায় কুকুরটির মৃত্যু ঘটলেও দূর্ঘটনাস্থল থেকে গতকাল ২৬ মে দুপুর দুইটা নাগাদও পঁচনশীল সেই মৃত কুকুরের দেহটি অপসারণ করা হয়নি নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ভিআইপি ও স্মার্ট প্রকৃতির প্রধান সড়ক বলে বিবেচিত সাগড়পাড়ার এই রাস্তাটি থেকে। এবিষয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলতে গেলে বিভিন্নজন করেন বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য।
আলমের ভ্যারাইটি স্টোরে আসে একাধিক ক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন. সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি ওয়ার্ডেই দৌড়ঝাপ বেড়েছে অসংখ্য প্রার্থীর। যাদেরকে দাপ্তরকি ও রাজনৈতিকভাবে বলা হয়ে থাকে ‘সমাজসেবক’। তিনি প্রার্থী হন, কিংবা হোক না কোনো দায়িত্বরত জনপ্রতিনিধিই; উভয়ের দায়দায়িত্ব কিন্তু একইরকম। কিন্তু, সেই দায়দায়িত্বের কতটুকুর পূর্ণতা পায় সেটি জনগণই ভাল জানেন। ভোট সংগ্রহের জন্য একাধিক প্রার্থীর প্রায় সার্বক্ষণিক আনাগোণা এই রাস্তা দিয়েই। কিন্তু তারা তো এই জনদুর্ভোগ নির্মূলে কোন কার্যকরি পদক্ষেপই নিলো না। যেটি নিয়ে ক্ষোপ প্রকাশ করেন অনেকেই। স্থানীয় বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, আপনারা রাজশাহী সিটি করপোরেশনের জরুরী সেবা ১৬১০৫ নাম্বারে ফোন দেননি কেনো; ফোন দেয়া মাত্রই মৃত কুকুরটি অপসারণ করার তাৎক্ষণিত ব্যবস্থা নিতো তারা। প্রতুত্ত্বরে উত্তর আসে বেশ কয়েক ধাঁচের।
কেউ বলেন, কি দরকার! কেউবা বলেন ঠিকই বলেছেন; কেউবা উত্তর দেয় লাইন ব্যস্ত পেয়েছি; কেউবা বলেন ফোন দিলেইতো টাকা কাটবে। এটাতো পরিচ্ছনকর্মী আর কাউন্সিলর কার্যালয়ের গুরুদায়িত্ব; তাই আমরা কেনো চোঁখে আঙ্গুল দিয়ে শিখিয়ে দেবো সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বের বিষয়গুলো মন্তব্যও অনেকের। কথারছলে বিষয়টি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এমনটাও বলেন, সমাজসেবকের তকমা লাগিয়ে বড় বড় বহর নিয়ে বহু প্রার্থীর দৌড়ঝাপ এখন প্রায় সার্বক্ষণিক। তাই, তাদেরসহ তার অনুসারিদেরও তো দায়িত্ব থাকাটা উচিত এইধরণের জনভোগান্তির বিষয়টিকে নির্মূল করার ব্যবস্থা করা। তারাতো সাধারণ নাগরিকদের চাইতে রােিসকর জরুরী সেবার বিষয়টি সম্পর্কে অনেক বেশি অবগত। আর অবগত না থাকলেও তো তাদের উচিত ছিল কোন না কোন মাধ্যম ব্যবহারে পরিবেশ দূষণকারি জনভোগান্তির এই বিষয়টিকে নির্মূল করা অর্থ্যাৎ রাস্তার পাশে মরে পরে থাকা কুকুরটিকে অপসারণ করার ব্যবস্থা করা। কেউবা একটু গম্ভীরসূরে বলেন, সকল ধরণের নাগরিক সেবাগ্রহণের বিপরীতে বাৎসরিক ট্যাক্স-ভ্যাট আর ভোট দেবার পরেও নাগরিকদেরকে কেনো মূখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হবে?