শনিবার

২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোখা’য় ২০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি, উচ্চ ঝুঁকিতে ১২ লাখ রোহিঙ্গা

Paris
Update : শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩

এফএনএস
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। তাই দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে মোখা মোকাবেলা ও দুর্যোগ পরবর্তীতে করণীয় সম্পর্কে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শুক্রবার (১২ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘূর্ণিঝড় মোখার সবশেষ অবস্থান তুলে ধরতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে- এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ‘মোখা’ সিডরের মতো আই ফরমেশন বা চোখাকৃতির দিকে এগোচ্ছে। উপকূলের দিকে এগিয়ে আসার গতি গড়ে ঘণ্টায় আট থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে। তবে, মোখা উপকূলে আঘাতের সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৭৫ কিলোমিটার। এ গতিবেগ থাকলে রোববার দুপুর নাগাদ দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল দিয়ে ও মিয়ানমারের উত্তর উপকূল দিয়ে মোখার অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। ঝুঁকিতে আছে চট্টগ্রাম বিভাগ। এছাড়া রয়েছে সেন্টমার্টিনসহ পুরো কক্সবাজার জেলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া। আজ শনিবার থেকে সারাদেশেই বেড়ে যাবে বৃষ্টিপাত। বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বইবে দমকা বাতাস। পরদিন রোববার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান- আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যে গতিতে ঘূর্ণিঝড় মোখা এগোচ্ছে, তাতে রোববার দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ও মিয়ানমারের উত্তর-উপকূল দিয়ে এটি অতিক্রম করতে পারে। উপকূলে আঘাত হানার ৪-৬ ঘণ্টার মধ্যে মোখা শক্তি হারাবে। ঘূর্ণিঝড়টি যাত্রাপথ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ভৌগলিক অবস্থান ও আকৃতির কারণে এমনটি হবে। পোস্টে আরও বলা হয়, কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ১০ থেকে ১২ ফুট। বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোতে ৮ থেকে ১২ ফুট ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মোখা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সুপার সাইক্লোন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে, মোখা উপকূলে আঘাতের সময় বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৭৫ কিলোমিটার। মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, মোখার প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় শনিবার সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস শুরু হতে পারে। তখন থেকে ওইসব এলাকায় এর প্রভাব শুরু হবে।
এদিকে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবিরে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার বসবাস। ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানলে টেকনাফের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিবিরে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে শিবিরের নিকটবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়। কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছুদ্দৌজা নয়ন জানান, সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিসহ রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সে লক্ষে কাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবক, রেডক্রিসেন্টসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও পুলিশ সেখানে সমন্বিতভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের জরুরি মেডিকেল টিম ও মোবাইল মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris