সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানোর কামারগাঁ হাট বিলুপ্তর পথে

Paris
Update : মঙ্গলবার, ২ মে, ২০২৩

রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরের প্রায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কামারগাঁ হাটের সিংহভাগ বেদখল এতে হাটের অস্বিত্ব এখন বিলুপ্ত প্রায়। অথচ হাটের এসব বেদখল সম্পত্তি উদ্ধার ও ইজারা দেয়া হলে সরকারের প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় সম্ভব। গত ৩০ এপ্রিল এলাকাবাসী এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে ডাকযোগে ভুমি মন্ত্রণালয়, রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছেন। স্থানীয়রা জানান, যে যেমন পারছে নিজের ইচ্ছেমতো হাটের সরকারি জায়গা জোরপূর্বক দখল ও অবৈধ স্থাপনা (ঘর) নির্মাণ করছে। তাদের অভিযোগ স্থানীয় ভূমি অফিসের একশ্রেণীর কর্মকর্তার যোগসাজশে দখলদারগণ তাদের এই অবৈধ দখলদারিত্ব কায়েম করেছেন। আর দীর্ঘদিন ধরে হাটের জায়গা এভাবে বেদখল হতে থাকায় এখন হাটের অস্থিত্ব প্রায় বিলুপ্ত। গতকাল সরেজমিন কামারগাঁ হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ভূমিগ্রাসীদের কবলে পড়ে ঐতিহ্যবাহী এই হাটের প্রায় পুরোটা
বেদখল। স্থানীয়রা জানান, কামারগাঁ গ্রামের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা জাকির হোসেন জুয়েল, যুবদলের সক্রিয় কর্মী সেলিম মন্ডল ও আফাজ আলী কবিরাজপ্রমূখ হাটের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন। এলাকাবাসী বাধা দিলেও তাদের বাধা উপেক্ষা করে পেশী শক্তির জোরে তারা এসব ঘর নির্মাণ করেছেন। সরেজমিন তদন্ত করলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।
স্থানীয়রা ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) ও ইউপি চেয়ারম্যানকে বার বার অভিযোগ দিলেও রহস্যজনক কারণে তাঁরা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এদিকে এসব ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে চাঁপাক্ষোভ ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এসব অবৈধ দখলদারদের নেই কোন কাগজপত্র। প্রশ্ন করলেই তাঁরা বলেন, স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে লীজ নিয়েছি। কিন্ত্ত তাঁরা বৈধতা বা লীজের
কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। অন্যদিকে স্থানীয় ভূমি অফিসও দখলদারদের নিকট হাটের জায়গা লীজ (ইজারা) দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। এলাকাবাসী এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ভুমি অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা এসব দখলদারদের একাধিকবার নোটিশের মাধ্যমে সতর্ক করেছেন। কিন্ত্ত দখলদারগণ তাঁদের কোন কথা শুনছেন না, আবার ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী মহলের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে এসব সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে কামারগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী ফরহাদ
বলেন, হাটের জায়গায় কে কি ভাবে ঘর নির্মাণ করছেন সেটা তাঁর দেখার বিষয় নয়। এবিষয়ে কামারগাঁ ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (তহসিলদার) কাওসার আলী বলেন, তিনি এখানে নতুন এসেছেন তবে এখানো কোনো অভিযোগ পাননি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, তিনি এখানো কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি, তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, তিনি বৈধভাবে দোকানঘর করেছেন।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris