সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

রাজশাহীতে বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ফলনও ভালো

Paris
Update : শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩

আলিফ হোসেন
রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে রাজশাহী অঞ্চলে বোরো ধান আবাদের যে লক্ষ্য মাত্রানির্ধারণ করা হয়েছিলো তা ছাড়িয়ে গেছে এবং ফলনও বেশ ভালো হচ্ছে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলায় চলতি মৌসুমে বোরো চাষাআবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৬৫ হাজার ৩০০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৬৮ হাজার ৬০০ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০০ হেক্টর বেশী। রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৪৫০ হেক্টর এবং ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিকটন। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশী জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।বিগত প্রায় ১০ বছরের মধ্যে বোরোর এমন ফলন হয়নি। গোদাগাড়ী উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো দের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিলো ১৬ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে। কিন্ত্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৪০ হেক্টর বেশী। বোরো চাষি কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন আশা করা যাচ্ছে বেশ ভালই হবে। তবে ঈদের আগের তাপদাহের কারণে জমিতে বেশী পরিমাণ সেচ দিতে হয়েছে। এতে খরচ কিছুটা বেশী হয়েছে গভীর নলকুপ গুলোতে পানি কম উঠায় কৃষকদের দিনরাত জেগে পানি দিতে হচ্ছে। গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম, রিশিকুল ইউনিয়ন(ইউপি) ও কাঁকনহাট পৌরসভার বেশ কিছু এলাকায় ইদ পরবর্তী সময়ে শিলা বৃষ্টিতে আম, লিচু ও ধানের ফলন কমে যাওয়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। অপরদিকে সব ধরণের সারের দাম বস্তাপ্রতি ২৫০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ধানের আবাদের খরচ বেড়েছে ধান চাষে এবার কৃষকরা তেমন লাভবান হবেন না বলে জানান।এছাড়াও এবার ধানের যে দাম তা নিয়েও খুশি নন কৃষকরা। তানোর পৌর এলাকার কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, এবার তিনি ৮ বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ও জিরা শাইল জাতের ধান আবাদ করেছেন। বিঘাপ্রতি ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ধানের ফলন বেশ ভালই হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আশা করছি বিঘাপ্রতি ধানের ফলন ২০-২২ মণ হবে। তবে ধানের যে দাম, তা থাকলে তেমন ভাবে লাভবান হবেন না বলে জানান। গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষক আদিল হোসেন বলেন, বোরো ধানের ফলন বেশ ভালই হবেই বলে আশায় ছিলাম কিন্তু ঈদের পরে যে শিলাবৃষ্টি হলো তাতে এই ইউনিয়নের, ধাতমা, বরশিপাড়া, বলিয়াডাইংসহ বেশ কিছু এলাকায় শিলা বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। এতে ধানের ফলন কমে যাবে। তবে বিঘাপ্রতি এবার ধানের ফলন হচ্ছে ১৮ থেকে ২২ মণ। মোহনপুর উপজেলার ঘাষিগ্রাম ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষক আব্দুল কাদের জানান, ব্রি-৮৮ জাতের ধান ৭ বিঘা জমিতে লাগিয়েছেন। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৮ থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় ধানের ফলন হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মনের মধ্যে। তবে ধানের যে বর্তমান বাজার মূল্য মণ প্রতি সাড়ে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা। এই মূল্য নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমন ধানের দাম ১৩শ’ টাকা মণ আমরা পেয়েছি। বোরো ধানের আবাদে খরচ বেশী এর দাম ১২শ’ টাকা মণ যদি হয় তাহলে আমাদের চলবে না। এছাড়াও হঠাৎ করে সারসহ কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে আগামী আবাদে খরচ বেড়ে যাবে এবং দাম কম পেলে কৃষক ধান চাষে আগ্রহ হারাবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ এপ্রিল গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের (ইউপি) কদমশহর এলাকায় বোরো ধানের কাটা-মাড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোজদার হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল ও কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহম্মেদপ্রমুখ। এবিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে গোদাগাড়ীতে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েগেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। ধান কাটার আগের মুহূর্তে ধানের জমিতে সেচের জন্য কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে জমিতে পানি বেশী লেগেছে। গভীর নলকুপগুলোতে পানি কম উঠায় কৃষকরা সমস্যায় পড়ে। তবে তিনি বলেন, ধানের ফলন বেশ ভালই হয়েছে। আশা করা যায় কৃষকরা যথাসময়ে তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris