সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

তানোরে এইচএসসি পরিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে পেটালো পুলিশ

Paris
Update : বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩

তানোর সংবাদদাতা
রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চোলায়মদ উদ্ধারের স্বাক্ষী হতে অপরগতা প্রকাশ করায় এক এইসএসসি পরীক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। গত সোমবার ঘটে ঘটনাটি। এখবর ছড়িয়ে ওই পুলিশের শাস্তির দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন সহপাঠীরা। পুলিশ এমন অনৈতিক কর্মকান্ডে হতাশ শিক্ষক মহল। দ্রুত জড়িত পুলিশদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। তানাহলে পুলিশের ভাবমূর্তি চরম ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে বলেও মনে করেন ছাত্র সমাজ।
এঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর পিতা বিনা দোষে ছেলেকে মারধরের ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এসআই রবিউলের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই পরীক্ষার্থীর নাম মেহেদি হাসান (১৭) তিনি পৌর এলাকার মাহালিপাড়া মহল্লার জিয়াউর রহমানের পুত্র। তিনি চলতি বছর মুন্ডুমালা ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজ হতে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবেন।
জানা গেছে, গত সোমবার সাড়ে তিনটার সময় নিজ বাড়ি হতে রাস্তা দিয়ে হেটে মুন্ডুমালা বাজারে যাচ্ছিলেন মেহেদি হাসান (১৭)। এমন সময় মাহালিপাড়া নামক স্থানে মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রবিউল ইসলাম ও এএসআই সুলতান তার পথ আটকিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। তিনি সাদা কাগজে কেন স্বাক্ষর করবেন তা জানতে চান। এ সময় এসআই রবিউল বলেন, এখানে চোলাইমদ উদ্ধার করা হয়েছে। তোকে স্বাক্ষী হতে হবে। এমন সময় মেহেদি বলেন, তিনি একজন ছাত্র তা ছাড়া তিনি কোন মদ উদ্ধার করতেও দেখেনি তাই তিনি স্বাক্ষী হতে অপরগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই রবিউল তার কলার ধরে প্রথমে গালে দুই তিনটা থাপ্পর লাগান। এতে ক্ষান্ত না হয়ে এসআই পাশে দোকানের কাছে পড়ে থাকা একটি মোটা পাইপ এনে তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী রোজা অবস্থায় থাকায় তিনি সেখানেই জ্ঞান হারিয়ে নুয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তার পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে মুন্ডুমালা স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করান। স্থানীয় কয়েকজন জানান, গত সোমবার দুপুরে এসআই রবিউলসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য মাহালিপাড়ায় অভিযান চালায়। এ অভিযানে এক আদিবাসি বৃদ্ধ মহিলার ঘর হতে কয়েক লিটার চোলাইমদ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে অন্য একবাড়িতে অভিযান চালাই, সেখানে কোন মদ উদ্ধার করতে পারেনি। তবুও সে বাড়ির অন্য মহিলাকে আটক করে চালান দেয়ার ভয় দেখায় এবং ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই রবিউল। বিষয়গুলো নিজচোখে দেখেছেন স্থানীয়রা। তাই মিথ্যে স্বাক্ষী হতে চাইনা কেউ।
মেহেদির পিতা জিয়াউর রহমান বলেন, আমার ছেলে একজন শিক্ষার্থী। তাকে বিনা দোষে এসআই রবিউল যেভাবে পিটিয়ে জখম করেছে তা এভাবে গরুকে মারে না কেউ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল হয়ে দাগ পরে গেছে। আমি ঘটনার পর তার ছেলের চিকিৎসা সেরে স্থানীয় গণ্যমান্য ও পৌরসভার মেয়রকে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান দেখায়েছি। এছাড়াও মঙ্গলবার বিকেলে ছেলেকে মারধরের প্রতিকার চেয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।
এবিষয়ে মুন্ডুমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী মেহেদি হাসানকে অন্যায় ভাবে পিটিয়েছে এসআই রবিউল শুধু তাই নয়। পৌর এলাকাসহ আশপাশে এমন আরো ঘটনা রয়েছে এসআই রবিউল এর বিরুদ্ধে। তিনি সাধারণ মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করেন, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আসামি ছেড়ে দেওয়াসহ এমন অনেক অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তিনি এলাকায় অনেকটা বেপরোয়া হয়ে চলাফেরা করেন। এসব বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই রবিউল ইসলাম বলেন, মেহেদি হাসানকে প্রথমে ভালভাবে বোঝানো হয়েছে। সে চোলাইমদ উদ্ধার করতে দেখে কিন্তু কেন স্বাক্ষী দিবে না। তাই বড় ভাই হিসাবে সাশন করে দুইটি থাপ্পর মেরেছি মাত্র।
মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মনিরুল ইসলাম জানান, আমি ছিলাম না, মঙ্গলবার রাতে এসেছি। ঘটনা সম্পর্কে অবহিত না। এখানে কোন অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হত। থানার ওসি কামরুজ্জামা মিয়া জানান, আমার জানা মতে আপোষ মিমাংসা হয়ে গেছে। তবে নির্যাতিত শিক্ষার্থীর পিতা জিয়াউর জানান কোন মিমাংসা হয়নি। পুনরায় ওসিকে বলা হয় মিমাংসা হয়নি আপনি কিভাবে বলেন জানতে চাইলে তিনি জানান এব্যাপারে আমার কোন কথা নাই। জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ রানার সরকারী মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

 


আরোও অন্যান্য খবর
Paris