আককাস আলী : নওগাঁয় ১৬৭ তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নিয়ামতপুর ও পোরশা উপজেলা শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ৩০ জুন সকাল ১১টায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি সুফল হেমরমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অজিত মুন্ডার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসাইন মন্ডল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাদিরা বেগম, বিআরডিবির চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় সরদার, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ রসুলপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মধু উরাও, যুব পরিষদ নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার আহবায়ক নিপেন পাহান প্রমূখ। অপরদিকে পোরশায় আদিবাসীদের ১৬৭তম সাঁওতাল বিদ্রোহ ও সিদুকানু দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সারাইগাছী মন্দির প্রাঙ্গনে সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ধীরেন লাকড়া। সংগঠনের সাধারন সম্পাদক আইচন পাহানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নরেন চন্দ্র পাহান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা শাখার সদস্য সচিব মহেন্দ্র পাহান, উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নিতাই চন্দ্র মুন্ডা ও নারী নেত্রী মালতি এক্কা।
বক্তারা বলেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের ইতিহাসে ১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম। সাঁওতাল বিদ্রোহীদের সেদিনের দেশপ্রেমিক সংগ্রাম, আদর্শ ও অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ পরবর্তীকালে ভারতবর্ষের জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিল। জুগিয়েছিল সাহস ও উদ্দীপনা। মুক্তিকামী মানুষের কাছে আজও তা অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে। তারা বলেন সাঁওতাল বিদ্রোহের নায়ক দুই ভাই সিধু মুরমু ও কানু মুরমু স্মরণে ও শ্রদ্ধায় সাঁওতালদের অনেকেই দিনটিকে সিধু-কানু দিবস বলে থাকেন। ব্রিটিশ সাম্রজ্যবাদ ও তাদের এদেশীয় দালাল সামন্ত জমিদার, সুদখোর, তাদের লাঠিয়াল বাহিনী, দারোগা-পুলিশের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাঁওতাল নেতা সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব এই চার ভাইয়ের নেতৃত্বে রুখে দাঁড়ান সাঁওতালরা। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের দুই বোন ফুলোমনি মুরমু ও ঝালোমনি মুরমু। ভারতের ভাগলপুর, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার প্রায় দেড় হাজার বর্গমাইল এলাকা দামিন-ই-কোহ্ বা ‘পাহাড়ের ওড়না’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। ভাগলপুরের ভগনা ডিহি গ্রামের সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব। এই চার ভাইয়ের নেতৃত্বে দামিন-ই-কোহ্ অঞ্চলে সংঘটিত হয় সাঁওতাল বিদ্রোহ।