সোমবার

২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

চলমান উন্নয়নে রাজশাহী নগর সড়কে উড়ন্ত ধুলোবালি নিয়ন্ত্রনের দায় কার?

Paris
Update : শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার : বিগত বছর দুয়েক ধরে রাজশাহী নগরীর আন্তঃযোগাযোগ স্তরে চলছে কর্মযজ্ঞ। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ সড়কগুলোতে ছোঁয়া লেগেছে উন্নত শহরের লেবাজ। নগরীর সড়কগুলো মানসম্পন্নভাবে সম্প্রসারিত হবার কারণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার পাশাপাশি পথচারী ও গাড়ি চালকদের নিরাপত্তার বিষয়টিও বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। বৃহৎ কিংবা ভাল কোনো নাগরিক সেবা পেতে হলে মাঝে মধ্যে কিছু কষ্ট আর ভোগান্তি সহ্য করার বিপরীত কিছু নেই বলে অনেকেই বিভিন্ন আয়োজনে বলেও থাকেন। যদিওবা কথাটা মিথ্যে নয়; আমাদের দেশের উন্নয়ন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এমন ভোগান্তি পোহানো খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।

জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি যেমন সত্য ঠিক তেমনিভাবে; উন্নয়নমূলক বৃহৎ কোন কর্মযজ্ঞের প্রেক্ষিতে কিছুটা ভোগান্তি মেনে না নেবার নেই কোন বিকল্প পথও। তবে এটাও সত্য যে, ছোট কিংবা মাঝারি আকৃতির সড়ক সম্প্রসারণ উন্নয়নমূলক কাজের ফলে অনাকাঙ্খিত কোনো ভোগান্তি যদি স্থায়ি রূপ নেয় তবে সেটি গাড়িচালক ও পথচারিদের জন্য কিছুটা দূর্ভাগ্যও বটে বলে মন্তব্য সচেতনমহল সহ ভুক্তভোগীদের। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অপর্যাপ্ত পর্যবেক্ষণ, অসচেতনতা, খামখেয়ালিপনা কিংবা লভ্যাংশের পাল্লায় কিছুটা অতিরিক্ত অর্থযোগের আশায় প্রায়শই নিয়মনীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে রাস্তার

উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রাখার জন্য সৃষ্ট সমস্যা যখন স্থায়ীত্বে রূপ নেয় তখন সেটির সাথে প্রাত্যহিক যুদ্ধ করে নিয়মতি চলাচল করাটা কঠিন হয়ে পড়ে পথচারি ও যানচালকদের জন্য। এমনই এক দীর্ঘমেয়াদী ভোগান্তির মধ্য দিয়েই দিনাতিপাত করতে হচ্ছে রাজশাহী নগরীর বেশ কয়েকটি রাস্তার চলমান কাজের কারনে। এরমধ্যে অন্যতম হলো, রেলগেট থেকে বিমানবন্দর সড়ক, নওদাপাড়া বাসটার্মিনাল থেকে ভদ্রা ও খড়খড়ি রাস্তার চলমান কাজগুলো।

উক্ত রাস্তাগুলো সেই সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত ধুলোবালিতে পরিপূর্ণ হয়ে থাকে। বাস কিংবা ভাড়ি কোন গাড়ি ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় পেছনে বহন করে নিয়ে আসে ঘণ আর অভেদ্য বালু ও ধুলা রাশির বিশাল বহর। সেই উড়ন্ত ধুলার বহরে পতিত হতে হয় ঐ গাড়ির পেছনে আসা অন্যান্য ছোট ও মাঝারি আকৃতির গাড়ি ও পথচারিদের। উড়ন্ত ধুলা আর বালির কারণে চলমান রাস্তাগুলোতে নির্বিঘ্নে চলাচল করাটা প্রায় অসাধ্য হিসেবেই প্রতীয়মান হচ্ছে প্রতিনিয়তই। উড়ন্ত ধুলা আর বালির কারনে চোঁখ মুখ খোলা রাখা তো দূরের কথা সমস্ত শরীর পরিপূর্ণ হয়ে যায় পথচারিদের বলে মন্তব্য চলাচলকারিদের।

রেলগেট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় দশ কিলোমিটার লম্বা সড়কটি চারলেনে প্রশস্ত করার মতো চ্যালেঞ্জিং কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডন এন্টারপ্রাইজ (দ্বিতীয় পক্ষ) সুনামের সাথে প্রথম দিকে কাজ করলেও প্রায় শেষার্ধে এসে মাঝেমধ্যেই পারছেনা ভোগান্তি কমিয়ে কাজ চলমান রাখতে। যদিওবা সিডিউলনুযায়ী রাস্তার কাজটি প্রায় শেষার্ধে হলেও এখনো অবশিষ্ট রয়েছে অনেক কাজ। এদিকে সূত্র বলছে, নির্মাণ সামগ্রীর দাম হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজের গতিতে পড়েছে চরম ভাটা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জন্যও নাকি কিছুটা কষ্টকর হিসেবে প্রতিয়মান হয়েছে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।

তবে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে আবারো কিছুটা গতি পেয়েছে রাস্তাটির চলমান কাজ। কিন্তু চলাচলে রয়েগেছে যথেষ্ট পরিমাণে ঝুঁকি। রাস্তার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে ছোট ছোট লাল কাপড়যুক্ত বেরিকেড কিংবা সহজে দৃষ্টিগোচর তুল্য কোন চিহৃ সর্বদা ব্যবহৃত হলে চলাকালে হ্রাস পেতো দূর্ঘটনা প্রবোণতার ঝুঁকি। এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারি বড় ও ভারি গাড়িগুলো প্রায়শই পতীত হয় ছোটখাটো দূর্ঘটনায়। চারলেনের রাস্তার মধ্যভাগে (ইট-বালির প্রলেব) প্রায়শই মালবাহি ট্রাক ও বড় কাভার্ড ভ্যানের পেছনের চাকা দুটো ঢেবে যায়। বিভিন্ন পন্থায় ঘন্টাখানেক চেষ্টার পর পরিত্রাণ পান গাড়ি চালক।

গত ২৯ মার্চ দুপুরে নগরীর বিটিসিএল কার্যালযের সামনে এমনই ভোগান্তির মধ্যে পতিত হয়েছিল এইচ আর ফিড নামিয় একটি কোম্পানির কার্গো গাড়ি। মাত্র পাঁচ টন ওজনের স্যালাইন বহনকারি গাড়িটির পেছনের চাঁকাঢেবে গিয়েছিল নির্মাণাধীন রাস্তার মধ্যভাগে। একইরকম ঘটনা ঘটেছিল গত ১৬ এপ্রিল রাতে নগরীর শালবাগান তরমুজের আড়তের সামনেও। সেই ট্রাকটিরও পেছনের দুটো চাকা একইভাবে ঢেবে যায় চারলেনের রাস্তার মধ্যভাগে। এবিষয়ে ডন এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকার ঠিকাদার হারুন বলেন, রাস্তা থেকে উড়ন্ত ধুলোবালির জন্য আমরা গাড়ি দিয়ে নিয়মতিভাবে পানি ছিটায়। আর যে স্থানে গাড়ির চাকা ঢেবে গিয়েছিল ঐস্থানটি চারলেনের রাস্তার মধ্যভাগের আইল্যান্ডের স্থানটি হতে পারে। উক্তস্থানে শুধু বালি থাকার কারণে এমনটা হয়েছে।

অন্যদিকে, নওদাপাড়া বাসটার্মিনাল থেকে ভদ্রা ও খড়খড়ির নির্মাণাধীন সড়কটির অবস্থা আরো বেগতিক। চলন্ত গাড়ির পেছনে পেছনে যাওয়া বিশালাকার উড়ন্ত ধুলো-বালির বহর দেখে হতভম্ভ হতে হয়। বিভিন্ন জেলার বাস প্রায় সার্বক্ষণিক ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচল করাতে রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করাটা চরম ভোগান্তিতে রূপ নিয়েছে। একটি গাড়ি গেলে পেছনে থাকা উড়ন্ত ধুলো-বালির উপস্থিতি ছোট ও মাঝারি আকৃতির গাড়ি, পথচারি ছাড়াও রাস্তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য বয়ে নিয়ে আসে চরম দুর্ভোগ বলে মন্তব্য ভুক্তভোগিদের।

অন্যরাস্তাগুলোতে মাঝেমধ্যে পানি ছিটানো হলেও উড়ন্ত ধুলোবালি থেকে পথচারিদের পরিত্রাণ দিতে এই রাস্তাতে পানি কখনো ছিটানো হয়না বলে দাবি স্থানীয়দের। বর্ষা মৌসুমে যদিওবা কিছুটা হলেও উড়ন্ত ধুলো বালি থেকে পরিত্রাণ পাবে চলাচলকারিরা। কিন্তু সেটিও মাত্র কয়েকদিনের জন্য। তাই স্থায়ী ভোগান্তি হ্রাসের গুরু দায়িত্ব নিতে হবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই বলে মন্তব্য সচেতন ব্যক্তিদের।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris