মঙ্গলবার

২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাহে রমজানের সওগাত

Paris
Update : বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২

এফএনএস : আজ পবিত্র মাহে রমাজানের চতুর্থ দিন অতিক্রম করছি আমরা। বিশ্ব মানবের নেতা মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন, রমজান এমন একটি মাস যার প্রথম দশ দিন রহমতের, দ্বিতীয় দশ দিন মাগফিরাতের বা ক্ষমার এবং তৃতীয় দশ দিন জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের জন্য নির্দিষ্ট। বায়হাকীর বর্ণনায় রয়েছে, রমজানের প্রতিটি দিবা-নিশিতে অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্তি দেয়া হয় এবং প্রতিদিন মুমীন মুসলমানের একটি করে দোয়া কবুল করা হয়। রমজান মাসে আল্লাহর অপার রহমতের বারিধারা সকল মুমীন বান্দার অন্তরকে সিক্ত করে তোলে।

এর মাধ্যমে তাদের ঈমানের তেজদীপ্ততা বৃদ্ধি পায়। ধন্য হয় প্রতিটি মুখলেস বান্দা। রমজানের সিয়াম সাধনায় ক্ষুৎ-পিপাসার কষ্ট মানুষকে অভাবী ও দরিদ্র লোকদের দুঃখ সরাসরি অনুভব করার বাস্তব শিক্ষা দেয়। গরীবের বন্ধু হতে প্রেরণা দেয় ধনীদের। ধনীরা বুঝতে পারে গরীবের দুঃখ-দুর্দশা। ফলে একে অপরের দরদী হয়। দুঃখ লাঘবের প্রয়াসে একত্রে কাজ করে। এতে সমাজের মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় সম্প্রীতি। সমতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। আল্লাহর রহমত হচ্ছে এসব কিছুর মূল কারণ। এজন্য বলা হয় মাহে রমজান হচ্ছে রহমতের মাস।

তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেভাবে বান্দাকে রহমত সিক্ত করেন, সেভাবেই সিয়াম সাধক মুমীন বান্দার কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টিকুলের প্রতি অধিক পরিমাণ দয়ার দৃষ্টি নিক্ষেপ করা। আবু দাউদ ও তিরমিজীর ভাষ্য হচ্ছে, যমীনে যারা আছে তাদের প্রতি দয়া কর। আসমানে যিনি আছেন তিনিও তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।

স্বাভাবিক ভাবেই মাহে রমজানে মুমীন বান্দার হৃদয় মন কোমল থাকে। সমাজের সকল মানুষই এই কোমলতার স্পর্শ্ব পায়। তারাও কোমল দয়ার্দ্র হয়ে যায়। কুরআন হাদীসের অধিক চর্চার কারণে মানুষ পরকালের চিন্তায় মগ্ন হয়। ফলে তাদের ঈমান শানিত হয়, তেজদীপ্ত হয়। শয়তানের বিরুদ্ধে, ঈমান ও ইসলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মনোবল বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী এগার মাস ইবলিশ ও নিজের নফসের সাথে জেহাদে বিজয়ী হওয়ার মনোভাব সৃষ্টি হয়। আরবী ভাষায় রমজানে রা, মীম, দোয়াদ, আলিফ ও নুন-এই পাঁচটি বর্ণ রয়েছে। এই পাঁচটি অক্ষর এক একটি অর্থ বহন করে থাকে। যেমন রা অক্ষরটি দ্বারা রিদওয়ানুল্লাহ বা আল্লাহর সন্তুষ্টি বুঝায়।

মীম দ্বারা মাগফিরাতুল্লাহ মানে আল্লাহর ক্ষমা প্রদর্শনপ্রকাশ পায়। দোয়াদ দ্বারা যিমানুল্লাহ বা আল্লাহর যামিন হওয়া আর আলিফ অক্ষর দ্বারা উলফাতুল্লাহ মানে আল্লাহর প্রেম ও ভালবাসা এবং নুন অক্ষর দ্বারা নিয়ামাতুল্লাহ মানে আল্লাহর নিয়ামত লাভের কথা বুঝানো হয়েছে। কাজেই মাহে রমজানের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে সায়েম বা রোজাদারগণ আল্লাহর সন্তুষ্টি, আল্লাহর ক্ষমা প্রদর্শন, আল্লাহর যিম্মাদারী, আল্লাহর প্রেম ও ভালবাসা এবং আল্লাহর নিয়ামত লাভে ধন্য হয়ে থাকেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris