সোমবার

১৭ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৩রা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়ামতপুরে যত্রতত্র পশু জবাহ হচ্ছে

Paris
Update : মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২

নিয়ামতপুর নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ছাড়পত্র ছাড়াই উপজেলা সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে অবাধে গবাদি পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে জবাইকৃত পশুর শরীরে কোন রোগ বালাই রয়েছে কি-না এমন কোনো ধারণাই রাখেন না ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ই। যদিও সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আইন প্রয়োগের দায়িত্ব প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এমন নিরবতা আর অন্যদিকে জনসচেতনতার অভাব। এ দুইয়ে মিলেই যেন হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য এবং দিন দিন প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিয়ামতপুর সদরের বাজার , টিএলবি বাজার, বরেন্দ্র বাজার, গাবতলি বাজার, খড়িবাড়ি বাজারসহ উপজেলার সকল বাজার গরু, ছাগল, ভেড়া জবাই করা হয়। তাছাড়া হাটের দিন সবচেয়ে বেশি গরু, ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হয় বলে জানান হাট কমিটির লোকজন। সরকারি বিধিমালা মোতাবেক প্রতিটি গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও, সে নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না কখনোই। নিয়ামতপুর সদরের বাজারে খড়িবাড়ি থেকে আসা আতিক, কাপাস্টিয়া গ্রাম থেকে আসা বদিউজ্জামান বলেন, আমরা যেসব গবাদিপশুর মাংস খাচ্ছি। সে সকল গবাদিপশু সুস্থ না অসুস্থ, তা-তো আমরা জানিনা।

তবে শুনেছি, নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার পূর্বে পশু চিকিৎসক পশুটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছাড়পত্র এবং সীল মেরে দিবে। তারপর ব্যবসায়ীরা পশুটি জবাই করে বিক্রি করবে হাটবাজারে। কিন্তু বাস্তবিকভাবে দেখা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ধরনের কোন তদারকি না থাকায়, সাধারণ জনগণ মরা গবাদিপশু, নাকি রোগাক্রান্ত গবাদিপশুর মাংস খাচ্ছে তা বুঝার কোন উপায় নেই। পাশাপাশি ধর্মীয় নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে পশুটি জবাই করা হচ্ছে কিনা, সেটাও সকলের অগোচরে।

এমতাবস্থায়, গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোন ছাড়পত্র আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মাংস ব্যবসায়ী তফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা অনেক দিন থেকে গরুর মাংস বিক্রি করে আসছি। গরুর জবাই করার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় না। আগে পশু হাসপাতাল থেকে খোঁজ রাখলেও এখন আর কেউ খোঁজখবর রাখেন না। মাঝে মাঝে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লোক আসে খোজ খবর নিতে। এদিকে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পশু জবাই করার পূর্ব পর্যন্ত পশুটি সুস্থ কিনা,

রোগাক্রান্ত কিনা, পশুটি গর্ভবর্তী কিনা, এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দায়িত্ব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা চিকিৎসকের। স্যানিটারি ইন্সপেক্টর এর দায়িত্ব পশু জবাই এর পরবর্তীতে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে বিক্রি হচ্ছে কিনা এবং ওজনের কারচুপি করছে কিনা, সেটা দেখভালের। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইয়ামিন আলী বলেন, পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য ভেটেনারী সার্জন আমাদের নেই। একারণে পশুর চিকিৎসা ছাড়াই নির্বিগ্নে পশু জবাই হয়। তবে অসুস্থ গবাদিপশুর মাংস খাওয়া অবশ্যই জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris