শনিবার

১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
কান উৎসবে নজর কাড়লেন অন্তঃসত্ত্বা প্রিয়তি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকের আমানত কমেছে, ঋণ বাড়ছে, আস্থার সংকট ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে : শেখ হাসিনা রাজশাহীতে আমের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে সজাগ থাকার পরামর্শ কৃষিমন্ত্রীর বড়াল নদের উপর ব্রীজ নির্মান স্থান পরিদর্শন করেন যুগ্ম সচিব পবায় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের নিয়ে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠান ইসলামী নার্সিং কোচিং সেন্টারের উদ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা রাজশাহীতে গ্রীষ্মকালীন কারুশিল্প উদ্যোক্তা মেলার উদ্বোধন অংকের হিসাব লাগে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত : আব্দুল ওয়াদুদ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন

বাগমারায় বাড়ছে নির্বাচনী সহিংসতা ১৫৩ ভোট কেন্দ্রের ৭২টিই ঝুঁকিপূর্ণ

Paris
Update : শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১

মচমইল থেকে সংবাদদাতা : রাজশাহীর বাগমারায় নির্বাচনের দিন যতো ঘনিয়ে আসছে সহিংসতা ততোই বাড়ছে। একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনী অফিস ভাংচুর সহ হামলার অভিযোগ উঠেছে। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষষদ নির্বাচন উপলক্ষে সম্প্রতি উপজেলা বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের দলীয় সহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস গুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত বুধবার রাতে উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নে নৌকা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে নৌকা সমর্থিত সরদার জান মোহাম্মদ এর কর্মী সমর্থকের উপরে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ টি মটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নৌকা প্রার্থীর কর্মীর মটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খালগ্রাম বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রহিমের পক্ষের এক কর্মীর মটর সাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটায় নৌকা সমর্থিত নেতাকর্মী।

সেই সাথে রাতে নৌকা প্রার্থীর মটরসাইকেল ভাংচৃুরের প্রতিবাদে খালগ্রাম বাজারে প্রতিবাদ মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ এসে তা বন্ধ করে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পরে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে উত্তেজিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

বুধবার রাত উপজেলার আউচপাড়া, কাচারী কোয়ালীপাড়া ও গোয়ালকান্দিসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা একে অপরের নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। আউচপাড়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিম জানান, রাত সাড়ে ৭ টার দিকে ৩০/৩৫ জন যুবক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আউচপাড়া ইউনিয়নের অধিকাংশ তার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে। পরে স্থানীয় লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে হামলাকারী তাদের ব্যবহৃত মটরসাইকেল গুলো ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাদের মটরসাইকেল গুলো ভাংচুর করে। স্থানীয়দের অভিযোগ নৌকার মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সরদার জান মোহাম্মদ ইচ্ছা করে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করেছেন।

এদিকে সরদার জান মোহাম্মদ জানিয়েছেন, তার পক্ষের লোকজন মটরসাইকেল নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হয়। এ সময় তাদের উপরে হামলা চালিয়ে ১৫টি মটর সাইকেল ভাংচুর করার পাশাপাশি তাদেরকে ধরে বাড়িতে আটকিয়ে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে ভাংচুরকৃত মটর সাইকেল সহ আটকিয়ে রাখা নেতাকর্মীদের উদ্ধার করে থানায় নেয়।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েকটি ইউনিয়নে বিশৃংখলা ঘটেছে। পুলিশ সর্বদায় যে কোন বিশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলায় আইন শৃংখলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে আগামী ৫ জানুয়ারি রাজশাহীর বাগামরা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে যাচ্ছে। এতে ১৫৩ টি ভোট কেন্দ্রের ৭২ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচনী মাঠে ব্যাপক পর্যবেক্ষন শুরু করছে। সবগুলো ভোট কেন্দ্রেই যাতে করে কেউ কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এবং ভোটাররা শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করতে পারেন সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছে স্থানীয় প্রশাসন। ইতিমধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে একযোগে আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। এ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৭ জন। উপজেলার মোট ১৫৩ টি কেন্দ্রে ভোটাররা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনে ৫৪ জন চেয়ারম্যান, ৫২৮ জন সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

এদিকে, নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারনা শুরু করেছেন। তবে এরই মধ্যে প্রার্থীরা একে অপরের কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, হামলা ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোসহ নানা অভিযোগ করেছেন নির্বাচন অফিসে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নে প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস পুড়িয়ে ফেলাসহ প্রার্থীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সহিংসতার অভিযোগ আসছে। এ নিয়ে দলীয়, বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ করছেন। ভোটাররা সহিংসতার আশঙ্কা করছেন। ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে রয়েছে তাঁদের শঙ্কা।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৫৩টি কেন্দ্রের ৭২ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ভোটের আগে ও পরে যাতে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা ঘটাতে না পারে এবং ভোটাররা যাতে করে নির্ভয়ে শান্তিপুর্ণ পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ইতিমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭২ টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপুর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা পর্যবেক্ষণে র‌্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris