সোমবার

১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্যকে আ’লীগের মনোনয়ন দেয়ার তৎপরতা?

Paris
Update : রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ৫ম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। এখনো তফসিল ঘোষনা না হলেও ওই উপজেলার দিবর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্য মো. রেজুয়ান হোসেন আন্টু নানা তৎপরতা শুরু করেছেন। বিত্তশালী রেজুয়ান ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন হাতের মুঠোয় বলে এলাকায় লম্প-ঝম্প করে বেড়াচ্ছেন। তার এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা,আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোকজন ফুসে উঠেছে।

আর এই রাজাকারের সন্তানকে যেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া না হয় সেই দাবিতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা,আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোকজন ইতিমধ্যে এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে। সর্বশেষ শনিবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নূরুল ইসলাম। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দিবর ইউনিয়নের নকুচা মোড়ে শত শত এলাকাবাসী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোখলেছুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম,আওয়ামীলীগ নেতা শাহেদ আলী, আতিয়ার রহমান, শফিউদ্দিন প্রমুখ। মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী,সমর্থক ও স্বাধীনতা স্বপক্ষের প্রায় শত শত মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ গ্রহন করে। এসময় রেজুয়ান শতাধিক কর্মী-সমর্থক নিয়ে মানববন্ধন ভুন্ডল করার চেষ্টা করে। তবে আন্দোলন কারীদের শক্ত অবস্থানের কারনে ঘটনাস্থল থেকে তিনি সরে যেতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন তারা।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন দিবর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশি মোঃ রেজুয়ান হোসেন আন্টুর বাবা মোজাফফর হোসেন এলাকার একজন চিহ্নিত রাজাকার ছিলেন। তার দাদা অজির উদ্দিন ওরফে ঝটপটা দিবর ইউনিয়নে আল বদর আল সামস কর্তৃত গঠিত শান্তি (পিচ) কমিটির সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ,ধর্ষণ ও লুটপাট চালিয়েছে। তাদের হামলায় এলাকার অনেককেই প্রাণ দিতে হয়েছে। তারা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জামাত-বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।

সম্প্রতি অর্থের বিনিময়ে নানা কৌশলে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ম্যানেজ করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেন। এখন তিনি সেই দোহায় দিয়ে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন। তার সমর্থকরা বলছেন রেজুয়ান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রায় পেয়ে গেছেন। এখন শুধু ঘোষনার অপেক্ষা। আবার তাকে নৌকার প্রার্থী করার লক্ষে উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও নানা তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছেন। যুদ্ধাপরাধী রাজাকার পরিবারের কোন সদস্য যেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পান সেই দাবি করেন এলাকাবাসী।

তবে রেজুয়ান হোসেন আন্টু বলেন আমার পরিবারের কেউ রাজাকার ছিল না। কেউ যুদ্ধাপরাধীও ছিল না। আমার জনপ্রিয়তায় ঈশ্বান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। এদিকে এব্যাপারে পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল খালেক চৌধুরী বলেন কোনো যুদ্ধাপরাধীর পরিবারে সদস্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারবে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris