রবিবার

১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ইলেকট্রনিক ইমুনাইজেশন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা বিনিময়ে চসিক পরিদর্শনে রাসিক প্রতিনিধি দল গোদাগাড়ীতে বিদ্যুতের ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন রাজশাহীতে আ’লীগ কর্মী নয়নালের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি ‘সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে বাধা নেই’ রক্তস্বল্পতা দূর করবে কচু যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক কি একদম তলানিতে কান উৎসবে নজর কাড়লেন অন্তঃসত্ত্বা প্রিয়তি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকের আমানত কমেছে, ঋণ বাড়ছে, আস্থার সংকট

পদোন্নতি ও সুযোগ-সুবিধায় বাড়ছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য

Paris
Update : শনিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২১

এফএনএস : পদোন্নতি এবং সুযোগ-সুবিধায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য বাড়ছে। বিগত ২০১২ সালে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে তার তৎকালীন জনপ্রশাসন উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করলেও সময়ের অভাবে তা কার্যকর করা যায়নি। আর দ্বিতীয় দফায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে তারা নানা সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছে। পঞ্চম গ্রেডের (উপসচিব) কর্মকর্তা হয়ে সুদমুক্ত গাড়ির ঋণ সুবিধাসহ প্রতি মাসে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ অর্ধলাখ টাকাও মিলছে। আর এমন সুযোগ-সুবিধা শুধু প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারাই পেয়ে আসছে। অথচ একই গ্রেড বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তা হয়েও বিসিএস কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ ২৬ ক্যাডারের কর্মকর্তারা ওই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফলে তাদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি প্রকৌশলী, কৃষিবিদ ও চিকিৎসক (প্রকৃচি) সংগঠনের নেতারা জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে লিখিতভাবে তাদের দাবি তুলে ধরে। তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য প্রতিমন্ত্রীর সহায়তা চান। পাশাপাশি তারা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলনের কর্মসূচিও ঘোষণা করতে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, জনপ্রশাসনের উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের মতো সব ক্যাডারে সুপারনিউমারারি পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টির বিষয়ে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ওই সময় গঠিত কমিটি তিনটি ক্ষেত্রে কিছু কাজ করলেও তা থেকে ইতিবাচক ফল আসেনি। ২০১৫ সালে বেতন স্কেল নিয়ে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তৎকালীন মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব ও শিক্ষা সচিব প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে সব ক্যাডারের পদ সুষম করতে পদোন্নতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। তবে ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে সচিব সভায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় নির্দেশনা দিলেও ওই বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অথচ ইতিমধ্যে প্রশাসন ক্যাডারের উপসচিব পর্যায়ের পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ ও গাড়ি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়ায় অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। সূত্র আরো জানায়, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে।

পদ না থাকলেও প্রশাসন কাডারে উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে পঞ্চম গ্রেডের (উপসচিব) বিপুলসংখ্যক পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগত গাড়ি কেনায় সুদমুক্ত ঋণ প্রদান ও গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। অথচ অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের শূন্য হওয়া সাপেক্ষে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। তাতেও নানাভাবে সময়ক্ষেপণ করা হয়। তাতে বৈষম্য বাড়ছে। সমপর্যায়ের কর্মকর্তা হয়েও তারা ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। এমন বৈষম্য চলতে থাকলে অন্য ক্যাডার কর্মকর্তারা কাজের গতি হারিয়ে ফেলবে।

এদিকে এ বিষয়ে বিসিএস সমন্বয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী কবীর আহমেদ ভূঁইয়া জানান, এটি জাতীয় সংসদে অনুমোদিত সার্ভিস (রিঅর্গানাইজেশন অ্যান্ড কন্ডিশন) অ্যাক্ট ১৯৭৫-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের পরিবর্তে বৈষম্য আরো বাড়ানো হচ্ছে। প্রশাসন ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মতো একই পর্যায়ের অন্য ক্যাডার ও সার্ভিসের কর্মকর্তাদেরও গাড়ি ক্রয়ে ঋণ সুবিধা দেয়ার দাবি জানান তিনি।

অন্যদিকে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, সম্প্রতি প্রকৃচির নেতারা দেখা করে যেসব দাবি জানিয়ে গেছেন সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রকৃচিসহ অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গত অক্টোবরে সভা হয়েছিল। ওই সভায় কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারই আলোকে সরকার কাজ করছে। তাছাড়া করোনার কারণে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা সম্ভব হয়নি। তবে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এ সম্পর্কে অবগত করা হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris