স্টাফ রিপোর্টার : আবারো রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে কর্মকর্তাদের মাঝে তর্কবিতর্ক রেশারেশিসহ হাতাহাতিরও ঘটনা ঘটেছে। গত রবিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যানাগাদ এই অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। কয়েক বছর পূর্বে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের হট্টগোলে একজনের নাঁক ফাঁটিয়ে রক্ত ঝরার মতো অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটেছিল বলে জানান সেখানে কর্মরতরা। সেই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার শিক্ষা বোর্ডের সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের দপ্তরে প্রায় ত্রিশ মিনেট ধরে রুদ্ধদ্বার অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে বলে স্বীকার করেন সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পরেই তিনি বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেন। আর গতকাল সোমবার তিনি লিখিতএকটি অভিযোগ দায়ের করবেন বলেও জানান। পত্রিকার প্রতিনিধির সাথে কথা বলাকালীন সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন সেই লিখিত অভিযোগ পত্রটি লিখতে ছিলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে অবশেষে বোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারি ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি অনুকূলে আনেন বলে জানান সেখানে কর্মরতরা।

বোর্ডের সূত্রানুযায়ী ঐদিন বিকেলে অফিসার্স কল্যাণ সমিতির একজন সদস্য শিক্ষা বোর্ড সচিবের দপ্তরে প্রবেশ করেন বেশ কয়েক জন কর্মকর্তার আটকে থাকা প্রমোশনটি কার্যকারি করার অভিপ্রায় নিয়ে। অন্য একটি সূত্র জানায়, শিক্ষা বোর্ডে কর্মরত বেশকিছু কর্মকর্তা ষষ্ঠ গ্রেড থেকে পঞ্চম গ্রেডে নিজেদেরকে উর্ণীত্ত করার আবদার নিয়ে প্রবেশ করেন সচিবের দপ্তরে। বিষয়গুলো নিয়ে পূর্বের ন্যায় সচিবের সাথে ঐ কর্মকর্তার (মধ্যস্থতাকারি) বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতিরও ঘটনা ঘটে ! সূত্র আরো জানায়, বিষয়টি নিয়ে হাতাহাতি শুরু হলে সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন দপ্তরের সামনে দায়িত্বরত আনসার সচিবের রুমের দরজা ফেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। যার কারণে সেখানে কর্মরতরা দরজার সামনে এসে জড়ো হন। এবং প্রায় দশ পনের মিনিট দরজা নক করার পর অপরপ্রান্ত থেকে দরজা খোলা হয়। ইতিমধ্যেই শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ পুলিশও হাজির হন ঘটনাস্থলে।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোপ প্রকাশ করেছেন সেখানে কর্মরতদের অনেকেই। সেখানে কর্মরতরা আরো জানান, প্রায় দেড়বছর পূর্বে ছয়জন কর্মকর্তার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পদোন্নতির বিষয়টি বোর্ডের নিয়মনীতিকে কিছুটা ভায়োলেট করার প্রেক্ষিতে ঐসময় বোর্ড সচিব উক্ত পদোন্নতির ফাইলটি আজ অবদি স্বাক্ষর করেননি। হয়তো সেটারই ধারাবাহিকতায় এই অনাকাঙ্খিত ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে। এ বিষয়ে, বোর্ডের সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে প্রথম প্রথম তিনি বিষয়টি ওভারকাম করার চেষ্টা করেন। তবে অবশেষে তিনি বলেন, বিষয়টি অনেক গভীরে চলে গেছে। বিসিএস ক্যাডার একজন কর্মকর্তার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়, কিভাবে আচরণের বহিঃপ্রকাশ করতে হয় সেটা তাঁদের জানা নেই। তাঁরা কিছু হলেই পেশীশক্তি, স্থানীয়ত্ব ও সংগঠণের প্রভাব দেখানো ছাড়াও নোংরা ভাষায় অবাঞ্ছিত কথা বলে পরিস্থিতি প্রতিকূলে নেবার একটি অপপ্রয়াস চালান।

তিনি আরো বলেন গতকাল (রবিবার) আমার দপ্তরে যেটা হয়েছে সেটা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। তবে, বিষয়টি নিয়ে আজ (গতকাল) চেয়ারম্যান স্যার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করবো। এবিষয়ে, হিসাব ও নিরিক্ষা শাখার ডেপুটি ডিরেক্টর (ডিডি) বাদশা সাহেব কোন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও তিনি অবশেষে বলেন, আগত সেবাগ্রহীতাসহ শিক্ষাবোর্ডে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে কি ধরণের ভাষায় কথা বলতে হবে আর কি ধরণের আচরণ করতে হবে সেটা পিএসসি থেকে আমাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েই সরকারি চেয়ারে অধিষ্ঠিত করেছে। নিজের কিংবা নিজেদের চাওয়া পাওয়া পূর্ণ না হলেই অন্যের সাথে অসদাচরণ করতে হবে বিষয়টি কর্মকর্তা কেনো কারো কাছেই কাম্য নয়।