রবিবার

১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
একাদশে ভর্তি ১৫-২৫ জুলাই ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা কেটে গেছে বাংলাদেশি টাকা পাচার করতে গিয়ে সিপিএম নেতা গ্রেফতার শিল্প গড়ে উঠুক, বর্জ্য যেন নদীতে না পড়ে : প্রধানমন্ত্রী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত পবার চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াজেদ আলী খান রাজশাহীতে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ধান উৎপাদন নাবিল গ্রুপ প্রেজেন্টস ৮ম আর ইউ সি সি জব ফেয়ার অনুষ্ঠিত স্বাচিপ রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা পরিষদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজের শুভ সূচনা মোহনপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

‘বাংলাদেশের পীর সাহেবের কাণ্ড দেখুন’

Paris
Update : সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

এফএনএস : রাজধানীর শান্তিবাগের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় ৪৯টি মামলার নেপথ্যে এক পীর সাহেব ও তাঁর অনুসারীরা রয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ওই প্রতিবেদন দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলছেন, ‘বাংলাদেশের পীর সাহেবের কাণ্ড দেখুন।’ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা সিআইডির প্রতিবেদন দেখে গতকাল রোববার আদালত এ মন্তব্য করেন। সিআইডির এই প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের পীর সাহেবের কাণ্ড দেখুন! জায়গা জমি দখলের জন্য পীর সাহেবরা অনুসারী-মুরিদ দিয়ে কী করে দেখুন!

যেখানে একজন মানুষকে একটা মামলা দিলেই জীবন শেষ হয়ে যায়, সেখানে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এত মামলা! এটাতো সিরিয়াস ব্যাপার।’ হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘একরামুল আহসান কাঞ্চনেরা তিন ভাই এবং এক বোন। ১৯৯৫ সালে তাঁদের বাবা ডা. আনোয়ারুল্লাহ মারা যান। রাজারবাগ দরবার শরিফের পেছনে তিন শতাংশ জমির ওপর তিনতলা বাড়ি কাঞ্চনদের। বাবার মৃত্যুর পর কাঞ্চনের বড় ভাই আক্তার-ই-কামাল, মা কোমরের নেহার ও বোন ফাতেমা আক্তার রাজারবাগ দরবার শরিফের পীর সাহেব দিল্লুর রহমানের মুরিদ হন।’ তবে, রিট আবেদনকারী ও তার অপর ভাই ডা. কামরুল আহসান বাদল ওই পীর সাহেবের মুরিদ হননি।

এরইমধ্যে একরামুল আহসান কাঞ্চনের মা, ভাই ও বোনের কাছ থেকে তাদের পৈতৃক জমির অধিকাংশই দরবার শরিফের নামে হস্তান্তর করা হয়। আর, একরামুল আহসান কাঞ্চন ও তাঁর ভাইয়ের অংশটুকু হস্তান্তর করার জন্য পীর সাহেব দিল্লুর রহমান এবং তার অনুসারীরা বিভিন্নভাবে চাপ দেন। কিন্তু সম্পত্ত্বি হস্তান্তর না করায় দিল্লুর রহমান ও তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে একরামুল আহসান কাঞ্চনের শত্রুতা সৃষ্টি হয়। সে কারণেই একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় হয়রানিমূলক মামলা করা হয়। সিআইডির এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় সর্বমোট ৪৯টি মামলা করা হয়েছে।

এর মধ্যে জিআর মামলা ২৩টি এবং সিআর মামলা ২৬টি। এরইমধ্যে জিআর ১৫টি মামলা এবং সিআর ২০টি মামলায় আবেদনকারী আদালত থেকে খালাস পেয়েছেন। বর্তমানে ১৪টি মামলা আদালতে বিচারাধীন। যার মধ্যে আটটি জিআর এবং ছয়টি সিআর মামলা রয়েছে। অধিকাংশ মামলার নথিপত্র সংগ্রহের পর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আবেদনকারীর বিরুদ্ধে একাধিক মানবপাচার, নারী নির্যাতন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, হত্যার চেষ্টা মামলাসহ প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি, ডাকাতির প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন ধর্তব্য ও অধর্তব্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলাগুলো সম্পর্কে প্রকাশ্য ও গোপনে অনুসন্ধান করে জানা যায়, অধিকাংশ মামলার বাদী, সাক্ষী, ভুক্তভোগীরা কোনো না কোনোভাবে রাজারবাগ দরবার শরিফ এবং পীর সাহেবের সঙ্গে সম্পৃক্ত।’

এর আগে দেশের বিভিন্ন জেলায় ৪৯টি মামলা হওয়ার প্রেক্ষাপটে একরামুল আহসান কাঞ্চন ন্যায়বিচার পেতে এবং এ ঘটনার পেছনে কারা তা তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) একরামুলের বিরুদ্ধে হওয়া ৪৯টি মামলার তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে রুলসহ আদেশ দেন। এরপর মামলাকারীদের কয়েকজন হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। গতকাল রোববার সিআইডির প্রতিবেদন দেখে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে আপিল বিভাগের আদেশটি দেখার জন্য এ বিষয়ে শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেন। আদালতে একরামুল আহসান কাঞ্চনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এমাদুল হক বসির। অপর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ওজিউল্লাহ। আর, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris