শামীম রেজা : সকাল হলেই ঘাড়ে খেলনার পসরা সাজিয়ে বেরিয়ে পড়েন সেকেন্দার আলী। বয়স প্রায় ষাটের অধিক। নেই তেমন আবাদী জমি। এক ছেলে আর ২ মেয়ে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। ছেলে-মেয়েদের বিয়েও দিয়েছেন। বিয়ের পর একমাত্র ছেলে অন্যস্থানে সংসার পেতেছেন। সংসারে উপার্জনের কেউ না থাকায় সেকেন্দার আর তাঁর স্ত্রীর। ভারী কাজ করার শক্তিও তেমন নেই তার। সেই সাথে নেই অনেক পুঁজি ভালো কোন ব্যবসা করা জন্য। রোবার রাজশাহীর বাগমপারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ বাজারে ঘুরে ঘুরে বিক্রয় করছেন কয়েক রকমের খেলনা। তাঁর বাড়ি নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে। অর্থের অভাবে নিজ বাড়িতে গড়ে তুলতে পারেননি খেলনার কারাখানা।
পাশ্ববর্তী জামগ্রামের আব্দুল খালেকের নিকট থেকে পাইকারী মূল্যে কেজি দরে ক্রয় করেন এসব খেলনা। সেই খেলনা বাড়িতে এনে তৈরি করেন আলাদা আলাদা আইটেম। খেলনার প্রকৃত ক্রেতা মূলত শিশুরা। খেলানার মধ্যে রয়েছে জবা ফুল, গোলাপ, ছোট গোলাপ, সূর্যমূখী, পতাকা ঘুড়ি ইত্যাদি। খেলনাগুলো তৈরি করা হয়েছে কাপড় দিয়ে। বিভিন্ন রংএর মিশ্রন ঘটিয়ে ফুটিয়ে তুলা হয়েছে এর সৌন্দর্য। খেলনা ভেদে দাম ১০- ৩৫ টাকা। পছন্দের খেলনা পেয়ে খুশি শিশুরাও। মামার বাসায় বেড়াতে এসেছেন আফিয়া নামের এক শিশু। খেলনা দেখে জেদ ধরেছেন কেনার জন্য। অবশেষে ছোট গোলাপ ফুল কিনে দিয়েছেন তার ভাই।
এদিকে উপজেলার পোড়াকয়া গ্রামের আকের শিশু সাজিদ হাসানও একটি পতাকা ঘুড়ি কিনেন সেকেন্দারের নিকট থেকে। প্রতিদিন গড়ে পাঁচশত থেকে এক হাজার টাকার খেলনা বিক্রয় করে থাকি। এখান থেকে যে টাকা আয় হয় সেটা দিয়েই সংসার চালায়। খেলনা বিক্রেতা সেকেন্দার আলী বলেন, বর্তমানে করোনার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় খেলনা বিক্রি কমে গেছে। নওগাঁ, নাটোর, বাগমারা, নলডাঙ্গা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে খেলনা বিক্রয় করে থাকি। প্রতিদিন গড়ে একশ থেকে একশ বিশটা বিক্রয় হয়। সারাদিন ধরে ঘুরে ঘুরে বিক্রয় করি। খেলনা বিক্রিকেই এখন উপার্জনের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছি।