মচমইল থেকে সংবাদদাতা : রাজশাহীর বাগমারার বিলসতি বিলের দ্বীপপুর এলাকায় প্রভাবশালীদের বাধার কারণে স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে তাদের জালসহ মাছ ধরার উপকরণে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছেন প্রভাবশালীরা। ভরা মৌসুমে মাছ ধরতে না পারার জেলেরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
জেলেদের অভিযোগ, তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে বর্ষা মৌসুমে বিলসতি বিলে মাছ ধরে থাকেন। বিলসতি বিলে বেশ কিছু সরকারি জমি রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ওইসব জমিতে পানিবদ্ধ থাকায় সেখানে মাছ পাওয়া যায়। বিলের মাছ ধরে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন জেলেরা। এজন্য প্রতিবছর বর্ষার শুরুর আগে অনেক জেলে মাছ ধরার জাল, দড়ি, নৌকাসহ মাছ ধরার উপকরণ ঋণ নিয়ে কিনে থাকেন। এবছরও অর্ধশত জেলে মাছ ধরার উপকরণ প্রস্তুত করেছেন। তাঁরা মাছ ধরার প্রস্তুতিও নিয়েছেন।
সপ্তাহ খানেক আগে কয়েকজন মৎস্যজীবী দ্বীপপুর এলাকায় বিলসতি বিলে মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে নামেন। এসময় স্থানীয় প্রভাবশালী শহিদুল ইসলাম, জমিন উদ্দিন, মনিরুল ইসলামসহ কয়েকজন প্রভাবশালী তাঁদের মাছ ধরতে বাধা প্রদান করেন। তারা স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ও বিলসতি বিল মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি লোক হিসাবে পরিচিত। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জেলেদের মারপিট করে তাঁদের মাছ ধরার উপকরণ কেড়ে নিয়ে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। কয়েক দফা জেলেদের জাল দড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
এই বিষয়ে জেলেদের পক্ষে কফের আলী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগের তদন্তকারী থানার উপপরিদর্শক আমিরুল ইসলাম বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জালদড়ি পুড়িয়ে ফেলা নয়, সেগুলো ক্ষতি করা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিলসতি বিল মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি অমূল্য হাওলাদার দাবি করেছেন, বিলটি তাঁরা ইজারা নিয়ে মৎস্যচাষ করছেন। কিছু জেলে সেখানে মাছ ধরলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জাফর আলীসহ ২০-২৫জন মৎস্যজীবী অভিযোগ করে বলেন, প্রভাবশালীদের হুমকী ও বাধার কারণে তাঁরা মাছ ধরতে পারছেন না। তাঁদের অনেক ক্ষতি করা হয়েছে। এ কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন বলে জানান। আব্দুর রাজ্জাক নামের আরেক মৎস্যজীবী অভিযোগ করেন, এলাকার শতাধিক কার্ডধারী মৎস্যজীবীরা এখন বেকায়দায় পড়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ জানান, এ ঘটনায় কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।