মান্দা প্রতিনিধি : পাড় না রেখেই পুন:খনন করা হয়েছে ভরাট হয়ে যাওয়া একটি পুকুর। বর্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির পানিতে পুুকুরে বিলিন হতে শুরু করেছে দুইশত বছরের পুরোনো শীতলীমাতা মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি। এতে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের গোসাইপুর গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার চককসবা (কালীগাঁও) বিলের পশ্চিমধারে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী শীতলীমাতা মন্দির। এটি অনেক পুরোনো। প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহের মঙ্গলবার মন্দিরটিতে পুজা-অর্চনা ও পাঠাবলি দেওয়া হয়। মন্দিরের চারপাশে রয়েছে ৪১ শতক দেবোত্তর সম্পত্তি। এর পূর্বপাশে রয়েছে ব্যক্তি মালিকানার একটি পুকুর। ভরাট হয়ে যাওয়া এ পুকুরটি সম্প্রতি পুন:খনন করায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মন্দিরের সম্পত্তি।
গোসাইপুর গ্রামের কার্তিক চন্দ্র মন্ডল জানান, পুকুরটি পুন:খননের সময় দেবোত্তর সম্পত্তির সীমানা নির্ধারণ করে কাজ করার জন্য পুকুর মালিক আলহাজ্ব আইয়ুব আলীকে প্রস্তাব দেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই প্রস্তাব উপেক্ষা করে খননকাজ শুরু করেন পুকুর মালিক আইয়ুব আলী। এ অবস্থায় মন্দির কর্তৃপক্ষ সার্ভেয়ার দিয়ে জরিপসহ দেবোত্তর সম্পত্তির সীমানা নির্ধারণ করেন। এসময় এলাকার লোকজনসহ পুকুর মালিক গংরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে সেই জরিপ না মেনে জোরপূর্বক খননকাজ করেন তাঁরা। একই গ্রামের রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, এটি ঐতিহ্যবাহী মন্দির। পাড় না রেখে জোর করে পুকুর খনন করায় ইতোমধ্যে দেবোত্তর সম্পত্তির একাংশ পুকুরে বিলিন হয়ে গেছে। এখনই ব্যবস্থা নেওয়া না হলে মন্দিরটিও পুকুরে বিলিন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
শীতলীমাতা মন্দির কমিটির সভাপতি ডা. বিজয় কুমার প্রামানিক বলেন, সম্প্রদায়ের বাধা সত্ত্বেও দেবোত্তর সম্পত্তির কোল ঘেঁষে গভীরভাবে পুকুরটি খনন করা হয়েছে। এতে করে চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে মন্দিরসহ দেবোত্তর সম্পত্তি। এ অবস্থায় মন্দিরসহ দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। পুকুর মালিক আলহাজ্ব আইয়ুব আলী বলেন, পুকুরটি ওয়ারিশান। এটি লিজ দেওয়া আছে। পুকুরে পানি নামাতে গিয়ে বেশকিছু জায়গা ভেঙে গেছে। খুব তাড়াতাড়ি ভাঙনস্থানে মাটি ফেলে মেরামত করে দেওয়া হবে।