এফএনএস : নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর আধ্যাত্মিক নেতা মাহমুদ হাসান ওরফে গুনবী চলতি বছরের মে মাসের প্রথম দিকে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। তিনি কুমিল্লা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার দুগর্ম এলাকায় আত্মগোপন করেন। জুনের শেষের দিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পুনরায় স্থান পরিবর্তন করে বান্দরবানে অবস্থান নেন। সেখানে ২-৩ দিন অবস্থান করেন। এরপর কয়েক বার তিনি অবস্থান পরিবর্তন করে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-৪ এর অভিযানে রাজধানীর শাহ আলী থানার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে গুনবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে উদ্ধার করা হয় উগ্রবাদী বই ও লিফলেট। গতকাল শুক্রবার বিকেলে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার মাহমুদ হাসান ওরফে গুনবী পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর মাদরাসায় ভর্তি হয়।
২০০৮ সালে সে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া থেকে তাইসির দাওরায়ে হাদিস শেষ করে। এরপর সে ঢাকাসহ কুমিল্লা, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের বিভিন্ন মাদরাসায় শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত ছিল। পাশাপাশি ধর্মীয় মতাদর্শের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়। সে ২০১০ সাল থেকে ওয়াজ শুরু করে। ২০১৪ সাল থেকে ধর্মীয় বক্তব্যে উগ্রবাদীত্ব প্রচারে নিজেকে সম্পৃক্ত করে। এ ছাড়া সে ধর্মীয় পুস্তকের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গুনবী প্রথমে হুজির সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরবর্তীতে জসিম উদ্দিন রহমানির সঙ্গে তার পরিচয় সূত্রে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। ওই ঘনিষ্ঠতার সূত্রে সে আনসার আল বাংলা টিমের (আনসার আল ইসলাম) সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। জসিম উদ্দিন রাহমানি গ্রেপ্তারের পর গুনবি উগ্রবাদীত্ব প্রচারক হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করে। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার জঙ্গি মাহমুদ হাসান গুনবী আনসার আল ইসলামের দাওয়াত ও প্রশিক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
সে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি মাদরাসায় খণ্ডকালীন, অতিথি বক্তা বা দীর্ঘমেয়াদী শিক্ষকতা বা পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। ওই মাদরাসায় সম্পৃক্ত হয়ে জঙ্গিবাদের বিস্তৃতি ঘটিয়ে থাকে বলে জানা যায়। সে মাদরাসাগুলোতে উগ্রবাদী বক্তব্য প্রদান ও একইসঙ্গে উগ্রবাদী বইয়ের বিস্তারের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আগ্রহী করে তোলে।
পরবর্তীতে সেই উগ্রবাদী বই সরবরাহ করে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষকদের উগ্রবাদী লেকচার প্রদানে উদ্বুদ্ধ ও উগ্রবাদী বই তৈরি, প্রকাশ, প্রণয়নে সহায়তা করে থাকে। তিনি আরও বলেন, মাহমুদ হাসান গুনবী ওরফে হাসান একজন দর্শন পরিবর্তনকারীর ভূমিকা পালন করে থাকে। সে আনসার আল ইসলামের (এবিটি) পক্ষে অন্যতম একজন দর্শন পরিবর্তনকারী।