এফএনএস : ১৩ বছর আগে পটুয়াখালীর দশমিনায় ৮ বছরের শিশুসন্তান শাকিল হোসেনকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাবা শহিদ রাড়ীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায়ে শহিদ রাড়ীকে অবিলম্বে কারাগারের কনডেম সেল থেকে বের করে সাধারণ সেলে রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে সাজার ক্ষেত্রে রেয়াদ সংক্রান্ত আইনের সকল সুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে এদিন শহিদ রাড়ীর পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। জানা গেছে, প্রলয়ঙ্করী ঘুর্নিঝড় সিডরে নিজের বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চরগুনি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেন শহিদ রাড়ী। সেখানেই ঘরজামাই হিসেবে থাকতে শুরু করেন তিনি।
এরইমধ্যে একদিন শ্বশুরবাড়ি থেকে তার এক ভায়রা টাকা চুরি করেন। কিন্তু সে অভিযোগে শহিদ রাড়ীকে মারধর করা হয়। এর জেরে রাগে-ক্ষোভে ২০০৮ সালের ২২ মে রাতে নিজের ছেলেকে বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেন শহিদ। পরদিন ছেলের লাশ উদ্ধার হওয়ায় তাকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়। পরদিন (২৩ মে) এ ঘটনায় মামলা হয়। মামলার পর হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শহিদ।
এরপর পুলিশ এ মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেয়। এ মামলায় পটুয়াখালীর আদালত ২০০৯ সালের ১৪ মে শহিদ রাড়ীকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। আর নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামি। উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট শহিদ রাড়ীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন শহিদ রাড়ী। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে শহিদ রাড়ীর সাজা কমিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ।