সোমবার

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়ামতপুরে ভাবিচা গ্রাম যেন পাখিদের অভয়ারণ্য

Paris
Update : সোমবার, ১২ জুলাই, ২০২১

নিয়ামতপুর থেকে প্রতিনিধি : এ যেন পাখির অঘোষিত অভয়ারণ্য। বিগত ৫ বছর থেকে গ্রাম জুড়ে বছরে ৪/৫ মাস দেখা মেলে শামুকখৈল প্রজাতির হাজার হাজার পাখি। বলা হচ্ছে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা গ্রামের কথা। সেখানে পাখির মিষ্টি কলতানে প্রতিদিন ভোরবেলা ঘুম ভাঙে মানুষের। সারাদিনই সেখানকার গাছে গাছে পাখিদের কিচির-মিচির শোনা যায়। উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে সেখানে এমন পাখিদের সমারোহ।

পাশাপাশি, গ্রামবাসীও পাখিদের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে পাখিদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল। স্থানীয় উদ্যোগে গ্রামটিকে ঘোষণা করা হয়েছে “পাখি শিকার মুক্ত এলাকা” হিসেবে। ভাবিচা সীমানায় প্রবেশ করা মানে পাখিটি নিরাপদ। আর এ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন গ্রামের সবাই। পাখি শিকার রোধে তারা যথেষ্ট সচেতন। তবে জৈষ্ঠ্যমাসের মাঝামাঝি সময়ে শামুকখৈল পাখির আগমন ঘটে এবং অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে যেখান থেকে সেখানে চলে যায়।

নিয়ামতপুর উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার পূর্বে এই গ্রামে পাখিদের সমারোহ রীতিমতো মনমুগ্ধকর। প্রতিদিনই সেখানে পাখি দেখতে যান বিভিন্ন এলাকার মানুষ। বিশেষ করে প্রজনন মৌসুমে শামুকখৈল ও বক পাখি দেখতে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে ভাবিচা গ্রামে। ভাবিচা গ্রামের অবিনাশ চন্দ্র মহন্ত প্রতিবেদককে বলেন, অতিথি পাখি ভাবিচা গ্রামে কেনো আসে জানিনা।

তবে এটা আমাদের জন্য আশির্বাদ। তাছাড়া গ্রামের রাস্তার আশেপাশে বড় বড় নিম, তেঁতুল, কড়ই গাছ থাকার ফলে এখানে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য তৈরি হতে পারে। অতিথি পাখি আসার ফলে গ্রামবাসী অনেক খুশি। গাছগুলো রাস্তার ধাওে হওয়ায় পাখিরা মল ত্যাগ করলে অনেক মানুষের শরীরে পড়ে। অতিথি পাখি ভালবাসায় গ্রামের সকলে এই বিব্রতকর অস্থাকে মেনে নিয়েছে।

ভাবিচা গ্রামের পাখিপ্রেমি সবুজ সরকার বলেন, আমিসহ গ্রামবাসী পাখি রক্ষণাবেক্ষনের জন্য গ্রামে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। বাহির থেকে কেউ এসে এই অতিথি পাখি শিকার করতে না পারে। আমরা চাই অতিথি পাখি এখানে নিরাপদে থাকুক। তিনি আরও বলেন, শামুকখৈল সাধারণত এখানে প্রজননের জন্য আসে। এরপর বাচ্চা বড় হলে বাচ্চা নিয়ে তাদের গন্তব্যে চলে যায়।

এছাছাও গ্রামের সুধীজনেরা বলেন, সরকারী প্রশাষনের সহযোগীতায় ভাবিচা গ্রামে একটি পাখি সংরক্ষণ কমিটির প্রয়োজন। কমিটির মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে যেমন ‘‘পাখি শিকার করবেন না, পাখি মারবেন না”, “পাখিরাও আমাদের মতো বাঁচতে চায়, পাখি আমাদের পরম বন্ধু, তাদের আগলে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে” ইত্যাদি প্রচার করলে এই পাখির অভয়অরণ্য অনেকদিন থাকবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়া মারীয়া পেরেরা বলেন, আমি ভাবিচা গ্রামের পাখিদের অভয়ারণ্য পরিদর্শন করে মুগ্ধ হয়েছি। তিনি বলেন সবুজ প্রকৃতির বুকে সুশোভিত বৃক্ষের ডালে ডালে পাখিগুলোর দ্বিধাহীন অবাধ বিচরণ এক আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। পাখিগুলোর আগমনে এলাকাবাসীও অত্যন্ত খুশি। স্থানটিকে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris