আর কে রতন : স্থানীয় বাজারে একটি চা স্টলেই ছিলো আয়ের একমাত্র উৎস। কিন্তু মহাসড়ক প্রশ^স্ত করার ফলে শেষ স্বম্বল দোকানের জায়গা হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অভাব অনটনের মধ্য উৎকণ্ঠায় দিন কাটছিল আব্দুল খালেকের। পরে চা বিক্রির জন্য তার নির্দিষ্ট কোনো দোকান না থাকায় নিরুপাই হয়েই ফেরি করে চা বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি। তবে তার ফেরি করে চা বিক্রি ধরন অনেকটাই ভিন্ন। তিনি চা বিক্রি করে বেড়ান বাইসাইকেলে করে।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালেক। করোনা মহামারির মধ্যে যখন বাজারের অধিকাংশ চায় দোকান বন্ধ, তখন তিনি ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়ে উপজেলা শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে চা বিক্রি শুরু করেন। তার চায়ের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। কারো চায়ের প্রয়োজন হলে তাকে ফোন করা মাত্র বাইসাইকেলে চায়ের ফ্ল্যাক্স নিয়ে দ্রুত সেখানে হাজির হয়ে যান খালেক।
আব্দুল খালেক জানান, তার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৪ জন। চা বিক্রি করে প্রতিদিন সব খরচ বাদ দিয়ে ৫০০-৬০০ টাকা আয় হয়। ওই টাকায় সংসারের যাবতীয় চালান। বাইসাইকেলে করে চা বিক্রি করেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল খালেক এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘যারা আমার চা পান করেন এদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ দোকানি ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী। তারা তাদের প্রতিষ্ঠান ফেলে চা পান করতে কোথাও যেতে পারেন না।
তাই আমাকে ফোন করে বললে আমি গিয়ে চা দিয়ে আসি। এতে তাদের সময় বেঁচে যায়, আর আমার কিছু টাকাও আয় হয়। মোহনপুর বাজার বণিক সমতির সভাপতি মুদি ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, আমার মুদিও পাইকারী ব্যবসা আছে মালামাল ক্রয় করতে অনেক মানুষ আসে। দোকান ফেলে চা পান করতে যাওয়ার সময় হয় না। তাই ফোন করলে খালেক ভাই চা দিয়ে যান, এতে আমার সময় বেঁচে যায়। তাছাড়া খালেক ভায়ের চায়ের মানও অনেক ভাল।
বাকশিমইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল মোল্লা বলেন, বাইসাইকেলে করে চা বিক্রি করে বেড়ানো এটি মোহনপুর বাজারে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। ফোন দিলেই খালেক চা নিয়ে হাজির হন। তার এক কাপ চায়ের দাম ৫ টাকা। তার তৈরি চা খেতে ভালোই লাগে। মোহনপুর গালস্ ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, খালেক একজন পরিশ্রমী মানুষ। তিনি বাইসাইকেলে করে বাজারের বিভিন্ন জায়গায় চা বিক্রি করেন। তার চায়ের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। তার এমন উদ্যোগে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে সাধুবাদ জানাই।