শুক্রবার

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা মোকাবেলায় বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ

Paris
Update : সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১

এফএনএস : বিদ্যমান করোনা মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) মাধ্যমে ওসব চিকিৎসককে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেস্থেসিওলজি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে। সেজন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮১ সংশোধন করেছে। চলতি মাসেই ওই ৪৪তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই অনেক জনবল শূন্য।

ফলে চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার মধ্যে করোনাকালে সারাদেশে সিসিইউ ও আইসিইউতে রোগীর চাপ আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গেছে। ফলে অ্যানেস্থেসিওলজির শূন্য পদ দ্রুত পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিধিমালা সংশোধন করে গত ২৮ জুন গেজেট প্রকাশ করা হয়। অ্যানেস্থেসিওলজির শূন্য পদে নিয়োগ পেতে ওই বিষয়ে ৫ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা লাগবে। তাছাড়া ওই বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট বা ডিপ্লোমা থাকতে হবে।

সূত্র জানায়, করোনা সংক্রমণের কারণে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি০ গত ২২ জুন ৪২তম বিশেষ বিসিএসের চলমান মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করেছে। তার আগে ৩৯তম বিসিএসে (বিশেষ) ২০০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে ৫ হাজারের মতো চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। করোনায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ৩৯তম বিসিএসের নন-ক্যাডার থেকে ২ হাজার চিকিৎসক নেয়া হয়। তারা ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়। স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন হিসেবে তাদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। তাছাড়া ২০১৮ সালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে করোনায় ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, বিগত ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল চিকিৎসকদের জন্য ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ওই বছরের ৩ আগস্ট প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ৩৭ হাজার ৫৮৩ জন অংশ নেয়। পরীক্ষায় পাস করে ১৩ হাজার ৭৫০ জন চিকিৎসক। আর চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষার পর ৮ হাজার ৩৬০ জন উত্তীর্ণ হন। সেখান থেকে ৪ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসককে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি।

গত বছর নভেম্বর মাসে তাদের মধ্য থেকে ৪ হাজার ৪৪৩ জনকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বাকিরা অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিল। ওই তালিকা থেকে এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি ওই ৫৩৫ জন চিকিৎসককে মেডিকেল অফিসার হিসেবে পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ অধিদপ্তরে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। তাছাড়া আরো ২৯ জনকে অন্যান্য দপ্তরে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। নতুন করে ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পিএসসি নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ৫৬৪ জনের নিয়োগ বাতিল করে দেয়।

এদিকে চিকিৎসক নিয়োগ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, অন্যান্য বিষয়ের মতো অ্যানেস্থেসিওলজি নিয়ে বেশিরভাগ চিকিৎসক পড়তে চায় না। ফলে অনেক পদ শূন্য রয়েছে। ওসব পদ দ্রুত পূরণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখন দ্রুত নিয়োগের জন্য কাজ চলছে।

অন্যদিকে একই প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিধি অনুবিভাগ) আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন জানান, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেস্থেসিওলজি) পদে অনেক পদ শূন্য, কিন্তু পদোন্নতির লোক নেই। তাই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকদের ওই পদে বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হবে। সেজন্য বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। নিয়োগের প্রস্তাব ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বিশেষ বিসিএস পরীক্ষায় চিকিৎসক নিয়োগ প্রসঙ্গে সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন জানান, শর্ত শিথিল করা হলে আলাদা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশেষ বিসিএস নিতে হতে পারে। নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের কপি এখনো পিএসসিতে আসেনি। এলে ওই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কত নম্বরের পরীক্ষা নেয়া হবে সে বিষয়ও কমিশন সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris