এফএনএস : যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে ইউরোপ যাচ্ছেন জো বাইডেন। তার ৮ দিনের এ সফর যুক্তরাজ্যে জি-৭ সম্মেলন দিয়ে শুরু হলেও জেনিভায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে ডনাল্ড ট্রাম্পের উত্তরসূরীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ওপরই মূলত সবার নজর থাকছে। বিশ্বের শীর্ষ দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন অনেকদিনের; বাইডেন তা কমিয়ে আনতে পারবেন, নাকি উত্তেজনা আরও উসকে দেবেন তা নিয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে বাইরে চলছে তুমুল আলোচনা। জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে বাইডেন বুধবার যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাজ্যের কর্নওয়ালে সমুদ্রের ধারের গ্রাম সেইন্ট আইভসে এবারের শিল্পোন্নত ৭টি দেশের সম্মেলনে ভ্যাকসিন কূটনীতি, বাণিজ্য, জলবায়ু ও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামো পুননির্মাণের একটি উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও কোভিড টিকা পাঠাতে সম্মেলনে অংশ নেওয়া অন্য দেশগুলোর নেতারা বাইডেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন বলেও অনুমান করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস টিকার ২ কোটি ডোজ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
কর্নওয়ালেই বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বাইডেন। সুযোগ পাবেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিশেষ সম্পর্ক’ ঝালাই করে নেওয়ার। তিন দিনের জি-৭ সম্মেলন শেষে ৭৮ বছর বয়সী বাইডেন ও তার স্ত্রী জিল উইন্ডসর প্রাসাদে গিয়ে রানি এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করবেন। ব্রিটিশ রানির সঙ্গে আগেও একবার বাইডেনের সাক্ষাৎ হয়েছিল, ১৯৮২ সালে। সেবার তিনি ডেলাওয়ারের সিনেটর হিসেবে দেখা করেন।
যুক্তরাজ্যের পর বাইডেন যাবেন ব্রাসেলসে, কথা বলবেন নেটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে। তাদের আলোচনায় রাশিয়া, চীন আর সামরিক জোটটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য দেশগুলোর চাঁদার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সফরের একেবারে শেষভাগে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে; জেনিভায় তাকে মুখোমুখি হতে হবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি গেল ৪ বছর প্রায়ই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে স্থান পেয়েছে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান বলেছেন, জি-৭ সম্মেলন এবং নেটো নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে তিনি মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বকে মজবুত করেই পুতিনের মুখোমুখি হবেন। দুই নেতার বৈঠক থেকে গুরুত্বপূর্ণ তেমন কোনো সিদ্ধান্ত আসবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। বৈঠক শেষে দুই নেতার একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা যায় কিনা, তা নিয়ে রুশ-মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে।