শাহানুর রহমান : করোনাকালিন এই মহামারির মধ্যেও গত ২ জুন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বৃহৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ আরএফএল প্রায় হাজারখানেক চাকরী প্রার্থীর অংশগ্রহণে সম্পন্ন করলেন তাদের প্রশাসনিক কাজ। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত উক্ত পরীক্ষায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শিবগঞ্জ ও নওগা এলাকার পরিক্ষার্থীর সংখ্যার উপস্থিতিই ছিল বেশি। পরিক্ষাটি নেওয়া হয়েছিল রাজশাহী সরকারি শারিরীক শিক্ষা কলেজের মিলনায়তনে। করোনাকালীন সময়ে হাজারো মানুষের এই সমাগমে ভীত হয়ে পড়েছিলেন উক্ত ক্যাম্পাসের কোয়ার্টারে থাকা মানুষজন।
এছাড়াও হুমকির মধ্যে ছিল সেখানে কর্মরতরাও বলে অভিযোগ অনেকেরে। এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে, উক্ত মিলনায়তনের ভাড়া নিয়েও। সেখানে কর্মরতদের অনেকেই বলছেন, আরএফএল কে পরিক্ষাবাবদ যে বিশাল মিলনায়তন ও খেলার মাটটি ভাড়া দেয়া হয়েছিল সেটি সর্বনিম্ন বিশ হাজার টাকা হবে। কিন্তু, প্রতিষ্ঠানের কাগজে কলমে লিখা হয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। বিষয়টি অবিশ^াস্যও বটে। এবিষয়ে জানার জন্য ঐদিন কলেজের অধ্যক্ষের সাথে দেখা করতে গেলে উঁনাকে পাওয়া যায়নি। তবে ঐসময় দায়িত্বে থাকা হিসাব শাখার একজন উক্ত ভাড়া প্রদানের বিপরীতে একটি বিল বা চালান রশিদ দেখান পত্রিকার প্রতিনিধিকে।
করোনাকালিন সময়ে দেশের পরিস্থিতি সামলাতে সরকার যেখানে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে প্রাণ আরএফএল’র মতো একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠান হাজারো পরিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অন্যান্য স্থান বা নিজেদের প্রধান কার্যালয় ব্যতীরেকে কেনো রাজশাহীতে পরীক্ষার আয়োজন করেছিল সেটি নিয়ে রাজশাহীর সচেতন মহলের নানা প্রশ্ন। কেউ কেউ বলছেন, ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখার জন্যই হয়তো এমন আয়োজন। কেউবা বলছেন, করোনার রেড জোনের দিকে ধাঁবিত রাজশাহীকে আরো বেশি বিগদগামী করার জন্য হয়তো এই অপ্রয়োজনীয় আয়োজন।
কারণ, হিসেবে তারা বলেন, জেলা ভিত্তিক যেহেতু উক্ত প্রতিষ্ঠানের সেলস পয়েন্ট ও কার্যালয় আছে সেহেতু জেলা ভিত্তিক পরিক্ষা নেবার আয়োজন করলে হয়তো হাজার মানাুষের এই ভীতিকর পরিস্থিতির সৃস্টি হতোনা। কিন্তু, দেশে চলমান এই মহামারির ভেতরে এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়াটা কখনোই দেশ ও জাতীর জন্য মঙ্গল কিছু বয়ে আনবে না। বরংচো, এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে শারিরীক শিক্ষা কলেজকে করোনাভাইরাসের দিকে বিপদগামী করে তোলা হলো।
সেখানের সরকারি কোয়ার্টারে বসবানরতরা জানান, পরিক্ষা চলাকারীন সময়ে পরিক্ষাকেন্দ্রকে ঘিরে আয়োজন করা হয়নি হাত ধোয়া কোন ব্যবস্থা। রাখা হয়নি স্যানিটাইজার। অনেক পরিক্ষার্থীর মুখেও ছিলনা মাস্ক। সর্বপরি বিষয়টি সর্বোচ্চ ঝুঁকির সমতুল্যই ছিল বলে মন্তব্য সেখানে কর্মরতদের। হাজারো মানুষের সমাগমে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট থানা থেকে কিভাবে লিখিত অনুমতি নিলেন আরএফএল কোম্পানী কর্র্তৃপক্ষ সেটিও ভাববার বিষয় বলেও মন্তব্য অনেকের।
প্রাণ আরএফএল প্লাস্টিক বিভাগের রাজশাহীস্থ সিনিয়র প্রটেকশন অফিসার (সিপিও) হাশেম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, রাজশাহীর নিজস্ব সেলস্ পয়েন্টে জায়গা স্বল্পতার জন্য আমরা শারীরিক শিক্ষা কলেজের মিলনায়তন প্রার্থীদের পরীক্ষার জন্য ভাড়া নিয়েছি। কিন্তু, করোনাকালিন এই মহামারির সময় হাজারো চাকরী প্রার্থীর এমন সমাগম বিপদগামী একটি আয়োজন হবার পরেও লিখিত ও ভাইবা পরিক্ষা নেবার আয়োজন কেনো করা হলো প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে ঢাকাতে যোগাযোগ করার কথা বলেন তিনি।