নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় এক দিনে এটাই মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড। গতকাল মঙ্গলবার (১ জুন) বিকেলে নওগাঁর সিভিল সার্জন এবিএম আবু হানীফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া তিন ব্যক্তি নিয়ামতপুর, মহাদেবপুর ও পোরশা উপজেলার বাসিন্দা। এদিকে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত বছরের মে থেকে এ জেলায় এ পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে গত ১ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত ৩১ দিনে ১১ জন মারা গেলেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রামের বাসিন্দা রাশেদুল ইসলামের (৩৫) নমুনা পরীক্ষায় গত ১৭ মে তাঁর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। তিনিই বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গত সোমবার রাতে করোনা সংক্রান্ত জটিলতায় নিজ বাড়িতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নিয়ামতপুর উপজেলার কানইল গ্রামের বাসিন্দা নিয়ামত উল্লাহর (৭০) করোনা শনাক্ত হয় গত ২৪ মে।
এর পর থেকে তিনি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা গেলে সোমবার বিকেলে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। পোরশা উপজেলার নিহতপুর মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. রাজ্জাক (৫৮) করোনা আক্রান্ত হয়ে গতকাল সোমবার রাতে নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয়। গত রোববার তাঁর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষায় জেলায় আরও ৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৪৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে নিয়ামতপুর উপজেলায় ৩৫ জন, নওগাঁ সদরে ২২ জন, ধামইরহাটে ৫ জন, মহাদেবপুরে ৩ জন এবং মান্দা ও পত্নীতলা উপজেলায় ১ জন রয়েছে। নওগাঁ সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া করোনা রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঈদুল ফিতরের পর থেকে নওগাঁয় করোনা সংক্রমণের হার উর্ধ্বমুখী।
গত ২০ মে থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৪৯৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে করোনা শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ। ১১ দিনের মধ্যে গত ২৭ মে করোনা শনাক্তের হার ছিল ৫৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ওই দিন ৪৫টি নমুনা পরীক্ষায় ২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
নওগাঁয় গত বছরের ১৩ মে প্রথম একজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেই সময় থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত ১৫ হাজার ৩৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই হিসাবে জেলায় এ পর্যন্ত সংক্রমণের হার ১৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
নওগাঁর সিভিল সার্জন এবিএম আবু হানিফ বলেন, ‘নওগাঁতে ঈদুল ফিতরের পর সংক্রণের হার উর্ধ্বমুখী। এটা বেশ উদ্বেগের। এই অবস্থায় আমরা অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। মানুষকে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের উদ্যোগে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’