এফএনএস : নওগাঁর পত্নীতলায় এক কৃষকের মৃত্যু নিয়ে নানা মহলে চলছে গুঞ্জন। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ মেটাতে ওই কৃষক কয়েকদিন আগে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ বিষয়টি সমঝোতা করে দেয়। সেই সূত্র ধরে মৃত্যুর কারণ হিসেবে পুলিশের দিকে তীর ছুঁড়ছেন অনেকে। অন্যদিকে, নিহতের প্রতিবেশী ও গ্রামবাসীরা বলছেন তালাক দেওয়া স্ত্রীর খাবার খেয়ে হামিদুর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা যায়, পত্নীতলা উপজেলার কাটাবারি গ্রামের কৃষক হামিদুর গেল ২৭ এপ্রিল অসুস্থ হয়ে প্রথমে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যান হামিদুর। হামিদুরের প্রতিবেশীরা জানান, ২৭ এপ্রিল হামিদুর ও তার তালাক দেওয়া স্ত্রী ফাহিমা বিবি ছাড়া বাড়িতে আর কেউ ছিল না। দুপুরে হঠাৎ হামিদুর চিৎকার দিয়ে ওঠেন। তার চিৎকার শুনতে পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে দেখেন মাটিতে গড়াগড়ি করছে হামিদুর। এ সময় হামিদুর বলছিল ‘আমাকে কি খাওয়াইলো? আমার বুকটা জলে যাচ্ছে’। তখন হামিদুরের মুখ দিয়ে লালা পড়ছিল। এরপর উপস্থিত গ্রামবাসী তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রতিবেশীদের ধারণা তালাক দেওয়া স্ত্রী উদ্দেশ্যমূলকভাবে হামিদুরকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানোর কারণেই সে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। মৃত্যুর পরদিন হামিদুরের কয়েকজন আত্মীয় অভিযোগ করে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ মিটাতে গিয়ে সমঝোতার সময় পুলিশ হামিদুরকে চড়-থাপ্পড় দেয়। এতে দু’দিন পর অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যায়। পত্নীতলা থানার ওসি শামসুল আলম শাহ জানান, হামিদুর ও তার স্ত্রী ফাহিমার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ ও মারপিটের ঘটনা ঘটতো। স্ত্রীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে হামিদুর গেল ১৫ এপ্রিল থানায় একটি অভিযোগ করেন।
এ নিয়ে দুই পক্ষকে ডেকে পরামর্শ দিলো তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়। কয়েকদিন পর তার স্ত্রী আবার হামিদুরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দিতে থানায় যান। এরপর আবারো তাদের সমঝোতার জন্য পরামর্শ দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। ওসি আরও জানান, ২৮ এপ্রিল শোনা যায় হামিদুর অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। পরে এ নিয়ে মৃতের কয়েকজন আত্মীয় অস্বাভাবিক মৃত্যু দাবি করায় ২৮ এপ্রিল মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করা হয়। বিকেলে তার স্বজনরা দাফন করে। এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করা হয়েছে।