এফএনএস : রাজশাহীর তানোরে পূর্ব শত্রুতার জেরে হাতকাটার পর এবার প্রকাশ্যে মশুর ডালের পালায় আগুন দেয় আহাদ আলী (৪৫) নামের এক সন্ত্রাসী। এনিয়ে ইসমাইল (২৬) নামের একব্যক্তি বাদী হয়ে রাজশাহীর আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে গত (২৩ এপ্রিল) শুক্রবার দিবাগত রাতে আগুন সন্ত্রাস আহাদ আলীকে গ্রেফতার করেছে তানোর থানা পুলিশ।
পরে শনিবার সকালে তাকে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠানো হয়। মামলার এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাঁধাইড় ইউপির বৈদ্যপুর গ্রামের মৃত খোদা বক্সের পুত্র আহাদ আলী তার বড়ভাই সাইদুর রহমানের সঙ্গে বাড়ি ভিটে নিয়ে প্রায় দিন দ্বন্দ্ব করে আসছিলেন।
এ অবস্থায় গত ২০১৫ সালের ৩ এপ্রিল সকালে স্থানীয় সার্ভেয়ার দ্বারা বাড়ি ভিটে জরিপ শুরু হয়। এ সময় আহাদ আলী জরিপ মানি না বলে সার্ভেয়ারের টেপ ফিতা কেড়ে নেয়। তার এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে সাইদুরকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাসুয়া দিয়ে কোপ দেয় আহাদ আলী। এ সময় স্বামীকে রক্ষার জন্য সাইদুরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪২) হাসুয়ার কোপ ধরে নেয়। এতে তার বাম হাতের কব্জি পর্যন্ত ঘটনাস্থলে কেটে পড়ে।
এনিয়ে মনোয়ারা জানান, আমার হাতের কব্জি কেটে নেয়ার পর স্বামী সাইদুর বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় বেশ কয়েক মাস হাজতে ছিলেন আহাদ আলী। পরে লোক মাধ্যমে হাতে পায়ে ধরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের মাধ্যমে আপস মিমাংসা করা হয়। এতে শর্ত থাকে বৈদ্যপুর মৌজার আরএস ১১১৫ ও ১১১৬ নম্বর দাগ ছেড়ে আহাদ আলীকে অন্যত্র চলে যেতে হবে। এছাড়াও চিকিৎসা খরচসহ শালিসদারের বেশ কয়েকটি শর্ত মেনে নেওয়ায় স্বামী সাইদুর সংশ্লিষ্ট আদালত হতে মামলা তুলে নেন।
তিনি আরও জানান, মামলা উত্তোলন হলেও মিমাংসার দেড় বছরেও চিকিৎসা খরচের ৩০ হাজার টাকা ও কোন শর্ত পূরণ করেননি সন্ত্রাসি প্রতারক আহাদ আলী। সম্প্রতি তার পরিবারের প্রতি অন্যায়-অত্যাচার শুরু করেছেন। এ ছাড়া উল্টো তার স্বামী ও সন্তানকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের নামে একাধিক মিথ্যা মামলা করে হয়রানি শুরু করেছেন তিনি।
এহেন পরিস্থিতিতে গত ৩০ মার্চ সকালে প্রকাশ্য দিবালোকে সাইদুরের মশুর ডালের পালায় আগুন দেয় সন্ত্রাস আহাদ আলী। এ সময় খোঁদ তার স্ত্রী মানবিক কারণে বাধা দিলেও তাকেও মারপিট করেন তিনি। এমনটি দেখা যায় ভিডিও ফুটেজে। এতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধণ হয় বলে জানান সাইদুরের ছেলে ইসমাইল। ফলে ঘটনাটি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। ওই মামলার সূত্র ধরে আহাদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়।
এসম্পর্কে আহাদ আলী বলেন, দ্বন্দ্ব বাড়াতে মশুর ডালের পালাটি আমার জায়গার ওপর দেয় সাইদুর। আমি সরাতে বললেও পালাটি সরানো হয়নি। তাই আমি পুড়িয়ে দিয়েছি। তবে, সালিশের শর্ত পূরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এবিষয়ে তানোর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, আদালতের মামলার সূত্র ধরে আহাদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতেতাকে পাঠানো হয়েছে।