এফএনএস : রাজশাহীর বাঘায় ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক মা। মামলার পর ছেলে মানিক উদ্দিনকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগে জানা গেছে, মানিক তার মাকে ভরণ-পোষণ দেন না। এ ছাড়া জমি লিখে না দেওয়ায় মাকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করেছেন। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার ওই মা তার ছেলের বিরুদ্ধে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের চকবাউসা গ্রামে প্রয়াত মোমিন উদ্দিনের স্ত্রী হাওয়া বেগম (৬৫) তার স্বামীকে ১৫ বছর আগে হারিয়েছেন।
স্বামীর মৃত্যুর সময় দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ ২ একর ৭৩ শতাংশ জমি রেখে যান। পরে দুই মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে এই জমি জোরপূর্বক ভোগ দখল করছেন তার বড় ছেলে মানিক। অভিযোগ রয়েছে, মানিক ওই সম্পত্তি তার মায়ের কাছে থেকে লিখে নিতে চান। কিন্তু মা হাওয়া বেগম রাজি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে মারপিট করেন মানিক। তারপর তিনি মেয়ের জামাইকে সঙ্গে করে বাঘা থানায় ভরণ-পোষণ আইনে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, ভরণ-পোষণ আইনে হাওয়া বেগম নামের এক নারী নিজে বাদি হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা আসামি মানিক উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছি। শুক্রবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ধরনের মামলা এই থানায় প্রথম লিপিবদ্ধ করা হলো। এ বিষয়ে রাজশাহী বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু জানান, মা-বাবার ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করা এবং তাদের সঙ্গে সন্তানের বসবাস বাধ্যতামূলক করার বিধান করে সরকার ২০১৩ সালে আইন পাস করে।
তবে আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক সন্তানকে তার মা-বাবার ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো মা-বাবার একাধিক সন্তান থাকলে সে ক্ষেত্রে সন্তানরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করবে। যদি কোনো প্রবীণ তার সন্তানদের বিরুদ্ধে এই ধরনের কোনো অভিযোগ আনেন এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে।